কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নতুন করে টান তীর ও বাম তীরের জেলা লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চলে বন্যার শ্বঙ্কা দেখা দিয়েছে। বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দাবি, রাতে তিস্তার পানি রাতে আরও বাড়তে পারে।
রোববার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ২৫ মিটার। যা বিপৎসীমার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ মিটার) ১০ সেন্টিমিটার ওপরে।
স্থানীয়রা জানান, গত ২ দিনের ভারি বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বাড়ছে। রোববার সকাল থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৯ ঘন্টার ব্যাবধানে ৮০ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। বিকাল ৩ টায় ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা ক্রমেই বেড়ে ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পায়। ফলে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বেশ বিছু পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তবে পানিবন্দিদের তালিকা এখনও পাওয়া যায়নি। পানি বাড়ার কারণে ডুবে গেছে মৎস খামার ও আমন ধানসহ নানা জাতের সবজির খেত। ডুবে গেছে চরাঞ্চলের রাস্তা ঘাট। তীরবর্তী বহু মানুষ নৌকায় যাতায়াত করছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ভারি বৃষ্টি ও উজানের ঢলে বাড়ছে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ। রোববার বিকাল ৩টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচে রেকর্ড করা হয়েছে। ফলে নদী তীরবর্তি নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। তবে আগামী ১২ ঘণ্টায় তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমারসহ উত্তরের বেশ কয়েকটি নদ-নদীর পানি আরও বাড়তে পারে। এতে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
গোবর্দ্ধন গ্রামের আব্দুর রশিদ বলেন, ‘নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। চরাঞ্চলের রাস্তা ঘাট ডুবে গেছে। অনেকের পুকুরের মাছ ভেসে গেছে, ডুবে গেছে আমন ধানের খেত। সময় যত যাচ্ছে ততই বাড়ছে পানি। বন্যার আতংকে রয়েছি।’
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনিল কুমার বলেন, ‘ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তার পানি বাড়ছে। সন্ধ্যায় বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রাবাহিত হচ্ছে। আগামী ১২ ঘন্টা তিস্তার পানি আরও বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। এতে নদীপাড়ের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। পরিস্থিতি আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’
নদীপাড়ের বাসিন্দাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে আহ্বান জানান তিনি।
কেকে/ এমএ