কালাই উপজেলায় ধানের মাজরা পোকার ব্যাপক আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা। কীটনাশক ছিটিয়েও পোকার আক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না, যার ফলে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
স্থানীয় কয়েকজন কৃষকরা বলেন, প্রায় দেড় থেকে দুই মাস বয়সী ধানগাছের মধ্যে ব্যাপক হারে আক্রান্ত হয়েছে। পোকার আক্রমণে ধানগাছ প্রথমে হলুদ ও পরে শুকিয়ে বাদামী রং ধারণ করছে। কীটনাশক দিয়েও কোনো ফল পাচ্ছেন না কৃষকরা। তাদের আশঙ্কা, সময়মতো পোকা দমন করতে না পারলে এবার রোপা আমন উৎপাদন ব্যাহত হবে।
উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, চলতি রোপা আমন মৌসুমে পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার এলাকাসহ এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১১হাজার ৯শত ৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং প্রণোদনা হিসেবে ২হাজার ১৫০ জন কৃষককে রাসায়নিক সার ও বীজ দেওয়া হয়েছে। জনপ্রতি কৃষককে ৫ কেজি করে আমন ধানের উফশী বীজ ও ২০ কেজি করে সার দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়ন জমিনপুর গ্রামের কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন, ধানের শীষ বের হওয়ার আগেই মাজরা পোকার আক্রমণে অনেক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। অনেক নামিদামি কোম্পানির কীটনাশক ব্যবহার করছি তাতেও কোন কাজ হচ্ছে না। এখনই যদি প্রতিকার করা না হয় তাহলে ফলন অনেক কমে যাবে।
উপজেলার লুৎফর রহমান পুনট ইউনিয়নের কৃষক। তিনি বলেন, ধান চাষ করে পরিবারের খরচ চালাই। কিন্তু মাজরা পোকার আক্রমণে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। কীভাবে প্রতিকার করব, বুঝতে পারছি না।
এদিকে, উপজেলার আরেক কৃষক আলাউদ্দীন বলেন, প্রায় তিন বিঘা জমিতে পোকা আক্রমণ করেছে। কীটনাশক স্প্রে করেও এই পোকা দমন করা যাচ্ছে না। এ যাবত তিনবার কীটনাশক স্প্রে করা হয়েছে। প্রতিবার স্প্রে করতে বিঘা প্রতি প্রায় সাত-আটশ টাকা করে খরচ হচ্ছে।
কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুন রশীদ দৈনিক খোলা কাগজকে বলেন, সম্প্রতি ধান ক্ষেতে মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এছাড়া কৃষকরা ধান ক্ষেতে কীটনাশকের সঠিক ব্যবহার সময় মতো না করার কারণে পোকার আক্রমণ হচ্ছে। পোকা দমনে কৃষকদের অনুমোদিত কীটনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এ ছাড়া পোকা দমনে ধান ক্ষেতে পার্চিং পদ্ধতির ব্যবহার নিশ্চিত করনে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।
কেকে/ আরআই