জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ইসলামী ছাত্র শিবিরের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী ‘মনো-সামাজিক স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প’-এর সমাপনী দিনের কার্যক্রম শেষ হয়েছে।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের নিচে এ কাউন্সেলিং ক্যাম্প শুরু হয়। ক্যাম্পটি চলে বিকেল ৩টা পর্যন্ত।
জানা যায়, দ্বিতীয় ও সমাপনী দিনে ৬টি বুথে ব্যক্তিগত সেবা নিয়েছেন ৭২জন শিক্ষার্থী। এছাড়া ২টি বুথে গ্রুপে কাউন্সিলিং সেবা নিয়েছেন মোট ১৯২জন। এতে নারী এক্সপার্ট ৯জন, পুরুষ এক্সপার্ট ৬জন সহ মোট ১৫ জন সেবা দিয়েছেন। এদিকে, দুই দিনের ক্যাম্পে মোট সেবা নিয়েছেন ১৬০জন। মোট গ্রুপে সেবা নিয়েছেন ১৬২জন এবং সেমিনারের মাধ্যমে সেবা নিয়েছেন ৯৫জন। দুই দিনে সর্বমোট সেবা নিয়েছেন প্রায় ৪১৭জন শিক্ষার্থী এবং ৩২জন এক্সপার্ট সেবা প্রদান করেছেন।
কাউন্সিলিং সেবা নেওয়া জাহির নামে এক শিক্ষার্থী জানান, শিবিরের এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজন। কেননা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ ছাত্র-ছাত্রী ভবিষ্যত ক্যারিয়ার, সম্পর্ক ও পারিবারিক জটিলতা নিয়ে হতাশ থাকে। তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নের জন্য এ ধরনের সেশন গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে শিবিরের এ উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার।
শাখা ছাত্র শিবিরের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম আরিফ বলেন, শিবির সবসময় ভিন্নধর্মী আয়োজন করে থাকে। দ্বিতীয় দিনের মতো সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত আজকের সমাপনী দিনের কার্যক্রম চলে। আমরা অত্যন্ত সফলভাবে এই ক্যাম্পের কার্যক্রম শেষ করতে পেরেছি।
শাখা শিবির সভাপতি মো. রিয়াজুল ইসলাম জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে গত বছরে ১০-১২জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। মানসিক স্বাস্থ্যসেবার ঘাটতির কারণে তারা হয়তো প্রয়োজনীয় সহায়তা পায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি কাউন্সেলিং সেন্টার থাকলেও সেখানে বিশেষজ্ঞের অভাব রয়েছে। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন করেও কোনো সুফল পায়নি। এজন্যই আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, দুই দিনে আমরা প্রায় ৪১৭জন শিক্ষার্থীকে সেবা প্রদান করেছি। তাদের মধ্য থেকে আমরা ১৩৫জনকে হেলথ কার্ড দিয়েছি, যারা এক মাসে ৪টি ফ্রি সেবা নিতে পারবেন। এই সেবাগুলো তারা আমাদের সাথে যোগাযোগকৃত হাসপাতাল থেকে নিতে পারবেন। এতে তাদের কোনো টাকা প্রদান করতে হবে না।
এর আগে, মঙ্গলবার ইসলামী ছাত্র শিবির জবি শাখার আয়োজনে দুইদিনব্যাপী মনো-সামাজিক স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্পের প্রথম দিন অনুষ্ঠিত হয়। এ ক্যাম্পে ৪৯৪জন শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করে। এতে পরীক্ষার দুশ্চিন্তা, সম্পর্কের সংকট, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ, চাপের কারণে ভুলে যাওয়া, ডিভাইস আসক্তি এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তন-এই ছয়টি বিষয়ে সেবা দেওয়া হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ইনসাইট মেন্টাল হাসপাতাল, অলোরা হাসপাতাল এবং আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজের অভিজ্ঞ মনোবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞরা কাউন্সেলিং সেবা প্রদান করেন।
কেকে/ আরআই