কুয়াকাটার চরগঙ্গামতি এলাকার সংরক্ষিত বনে দিন-রাতে নির্বিচারে গাছ কেটে নিচ্ছে সংঘবদ্ধ একটি চক্র।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে এসব তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, চরগঙ্গামতি সংরক্ষিত বনে আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে বনখেকোরা। সংঘবদ্ধ একটি চক্র নিয়মিত বনাঞ্চলের বড় বড় গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এতে বনভূমি উজাড় হয়ে পরিবেশের ভারসাম্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে। বনাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গা থেকে কেটে ফেলা গাছের অংশ, গুঁড়ি ও ডালপালা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ এই কাজের সঙ্গে সংঘবদ্ধ একটি চক্র জড়িত, যারা কখনো দিনের আলোয়, আবার কখনো রাতের অন্ধকারে নির্বিচারে গাছ কেটে পাচার করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সবুর মিয়া বলেন, যখন যার প্রয়োজন হয় তখনই গাছ কেটে নেয়। কেউ সমুদ্রের স্রোতে উপড়ে পড়া গাছ কেটে বিক্রি করে, আবার কেউ সরাসরি বনের ভেতরে ঢুকে বড় বড় গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এতে আমরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
উপকূল পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের (উপরা) যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল হোসেন রাজু বলেন, গঙ্গামতির সংরক্ষিত বন ধ্বংস হলে শুধু গাছই নয়, উপকূলের প্রাকৃতিও ধ্বংস হবে। ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের সময় এ বন উপকূলের রক্ষা কবজ হিসেবে কাজ করে। তাই বন রক্ষায় প্রশাসনের দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করা জরুরি। তিনি আরও বলেন, বনদস্যুরা প্রশাসনের দুর্বলতাকে সুযোগ হিসেবে নিচ্ছে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে উপকূল ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, চরগঙ্গামতির বন উজাড় হলে উপকূল আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে। গাছের শেকড় শুধু ভূমি ধ্বস থেকেই রক্ষা করেনা, বরং জলোচ্ছ্বাসের সময় উপকূল রক্ষায় ঢাল হিসেবে কাজ করে। এভাবে নির্বিচারে গাছ কাটার ফলে উপকূলীয় ভাঙন, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি বহুগুণে বাড়বে।
গঙ্গামতি বিট কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ঝড়ে ভেঙে পড়া বা মরে যাওয়া গাছ স্থানীয়রা অনেক সময় কেটে নেয়। তবে অবৈধভাবে গাছ কাটার বিষয়েও আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। খবর পেয়ে কিছু কাঠ জব্দ করা হয়েছে।
মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা কে এম মনিরুজ্জামান বলেন, কিছু বনদস্যুরা রাতের আধারে বনের গাছ কেটে নিয়েছে। গাছ পাচারকারীদের একটি তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। বেশ কিছু কাঠ জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
কেকে/ এমএস