নিয়োগ বাণিজ্য, উন্নয়নের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে শিক্ষকদের ওপর দমন-পীড়নের অভিযোগ তুলে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দক্ষিণ জাওরানি আব্দুল লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিনের চূড়ান্ত বরখাস্ত কার্যকর করার দাবিতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অভিভাবকরা একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন।
সোমবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে তারা ক্লাস বর্জন করে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ব্যানার ও হাতে লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। সেখানে হাতে লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, জসিম স্যারের জায়গা এই বিদ্যালয়ে হবে না। তিনি নিয়োগ বাণিজ্য, উন্নয়নের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়েছেন। ৫টার জন্য আমাদের স্কুল থেকে বের করে দিয়েছেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থী ছাড়াও এলাকাবাসী, অভিভাবক এবং ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও অংশগ্রহণ করেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের একমাত্র দাবি হিসেবে প্রধান শিক্ষকের চূড়ান্ত বরখাস্ত কার্যকর করার বিষয়টি তুলে ধরেছেন। তারা দুর্নীতির অভিযোগ এনে তার বরখাস্তের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভকারীরা ব্যানারে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে বিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্য, উন্নয়নের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে শিক্ষকদের ওপর দমন-পীড়ন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মতে, প্রধান শিক্ষক একজন দুর্নীতিবাজ এবং তাকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত না করা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।
আন্দোলনকারীরা জানান, জসিম উদ্দিন ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং সরকারের পতনের পর থেকে তিনি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে উপজেলা প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপিও প্রদান করা হয়েছে। এই মানববন্ধনে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র মনিরুজ্জামান, শাহ আলম, রবিউল ইসলাম, আল আমিন, জোবায়ের আহমেদ সবুজ এবং হাবিবুর রহমান হাবিব অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জসিম উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করেন এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমারকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন। এর কিছুদিন পর, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে। বর্তমানে সহকারী প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার অবসরে গেছেন।
কেকে/এআর