বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট ২০২৫,
৬ ভাদ্র ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট ২০২৫
শিরোনাম: গ্যাস সংকটে ঝুঁকিতে বিনিয়োগ-রফতানি      মনোনয়নপত্র জমাদানে উৎসবমুখর পরিবেশ      ভারতে আ.লীগের কার্যক্রম বন্ধের আহ্বান, অভিযোগ অস্বীকার নয়াদিল্লির      দেশি মাছের প্রজাতি রক্ষা করতে হবে: মৎস্য উপদেষ্টা      জুলাইয়ে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৫ শতাংশ       গতি বাড়াতে সমন্বয় টিমের মাধ্যমে কাজ করতে চাই: সমাজকল্যাণ সচিব      হাতি সংরক্ষণে প্রাকৃতিক আবাসস্থল রক্ষা করতে হবে: উপদেষ্টা রিজওয়ানা      
খোলাকাগজ স্পেশাল
জাপায় ভর আওয়ামী লীগের
রোকন উদ্দিন
প্রকাশ: সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫, ১১:৩৯ পিএম আপডেট: ১৯.০৮.২০২৫ ১:০৮ পিএম
ছবি : খোলা কাগজ

ছবি : খোলা কাগজ

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতা হারানোর পর দেশের রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে আছে আওয়ামী লীগ। দলটির সভাপতি ভারতে পলাতক।  অনেক শীর্ষনেতা ভারতসহ বিভিন্ন দেশে পালিয়ে গেছেন। জনদাবির মুখে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। নির্বাচন কমিশনও দলটির নিবন্ধন স্থগিত করেছে। এ অবস্থায় ফেরার নানা পাঁয়তারা করছে পতিত শক্তিটি। দেশের নানা ইস্যুকে ব্যবহার করে ফেরার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। 

এবার দলটি ভর করেছে পুরোনো মিত্র জাতীয় পার্টির (জাপা) ওপর। এ ছাড়া আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না বলে সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। তার এ ধরনের বক্তব্যকে আ.লীগ পুনর্বাসনের নীল নকশা হিসেবেই দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, হাসিনার অপশাসনের অন্যতম রাজনৈতিক সঙ্গী ছিল জাপা। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অনুষ্ঠিত ৩টি জাতীয় নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়া পেছনে জাপার একক ভূমিকা ছিল। যার প্রধান ভূমিকা রেখেছে দলটির একাংশ ‘রওশনপন্থিরা’।  

জি এম কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখন জামায়াতে ইসলামীকে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, আমি তার প্রতিবাদ করেছি। একইভাবে এখন বলছি, আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।’ তিনি বলেন, জিএম কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার আইনের মারপ্যাঁচে আমার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। এখন এই সরকারও আইনের মারপ্যাঁচে আমাকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। দেশীয় রাজনীতিবিদ ও বিদেশি কূটনীতিকদের উপস্থিতিতে একটি সফল সম্মেলনে আমাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়েছে। চেয়ারম্যান হিসেবে আমি যাকে নিয়োগ দিয়েছি, তাকে বাদ দেওয়ার গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ক্ষমতাও আছে। আওয়ামী লীগ সরকার যা করেছে, বর্তমান সরকারও তা-ই করছে, পরিবর্তন কী হলো?’ 

জিএম কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিবাদ বা স্বৈরাচার বলা হয়, একই কাজ যদি বর্তমান সরকারও করে, তাকে কী বলবেন? আমাদের দলীয় প্রতীক অন্যদের দেওয়া হবে, এমন ভয় দেখিয়ে আমাদের ব্ল্যাকমেইল করেছিল আওয়ামী লীগ, এখন আবার সেই খেলা শুরু হয়েছে। সরকার আমাদের পিছে লেগে রয়েছে। সুবিধা তো দূরের কথা, আমরা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার ভোগ করতে পারি না। জনগণের চোখে এখন আমরাই মজলুম।’

এদিকে নির্বাচনের আগে দল গোছাতে তৎপর রয়েছে রওশনপন্থিরাও। সম্প্রতি জাতীয় পার্টির নতুন কমিটি করা হয়েছে। এতে জিএম কাদের ও তার অনুসারীদের বাইরে রেখে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে চেয়ারম্যান এবং এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ঘোষণা করা হয়। এছাড়া কাজী ফিরোজ রশিদকে সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও মুজিবুল হক চুন্নু নির্বাহী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। মূলত দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরোধীরা জাপার নামে এ কাউন্সিল করেছে। 

তথ্য বলছে, হাসিনার ঘনিষ্ঠ সঙ্গী রওশনপন্থিদের নেতৃত্বেই এই কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর এর নেতৃত্বে রয়েছে হাসিনার শাসনামলের দোসর হিসেবে চিহ্নিতরা। যাদের হাত ধরেই আওয়ামী লীগ ফের সক্রিয় হওয়ার শঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, হাসিনা সরকারের সময়ে যত অপকর্ম ও অবৈধ নির্বাচন ছিল; তার সবকিছুর বৈধতা দিয়েছে জাপা। আওয়ামী লীগ মূলত এ দলটির ওপর ভর করেই ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত করেছিল। আর এসবের মূলে ছিল রওশনন্থিরা। 

এছাড়া দলটির অনেক নেতার অভিযোগ- আওয়ামী লীগ যখনই কোনো অবৈধ কাজকে বৈধতা দিতে জাপাকে ব্যবহার করতে চেয়েছে, তখন দলটির একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতা হাসিনার চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। কিন্তু রওশনপন্থিদের চাপে তাদের সেই দ্বিমত ধোপে টেকেনি। রওশন ও তার সঙ্গীরা দল ভাঙনসহ নানা নাজুক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে হাসিনাকে বৈধতা দিতে মরিয়া ছিল। এমনকি জাপার প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও এদের সঙ্গে পেরে উঠতে পারেননি। তাকেও নানাভাবে জিম্মি করে আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। 

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান (কাদেরপন্থি) মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা খোলা কাগজকে বলেন, ‘জাতীয় পার্টির নামে যারা নতুন কমিটি করেছে, তারা মূল স্রোত থেকে বেরিয়ে গেছে। এখন যারা নতুন কমিটি করছে; তারাই এক সময় শেখ হাসিনার ছবি দিয়ে নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছিল। তারা পরীক্ষিত দালাল।’

দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আল আমিন সরকার খোলা কাগজকে বলেন, ‘জাতীয় পার্টির নামে যারা নতুন কাউন্সিল করে নেতা হয়েছে, এরা সবাই শেখ হাসিনার আমলের ২০১৪ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের কুশীলব ছিল। ফলে এখনো তারা দলকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নতুন ফন্দি আঁটছে। 

দলটির আরেক প্রবীণ নেতা অভিযোগ করে বলেন, হাসিনা সরকারের নীতিমালা ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রওশন ও তার ঘনিষ্ঠরা অন্ধ সমর্থন দিয়েছে। এর ফলে জাপা নিজস্ব রাজনৈতিক অবস্থান হারিয়েছে, পরিণত হয়েছে কেবল ‘দোসর’ হিসেবে। এখন তারা নতুন নেতৃত্ব তৈরি করে আবারো সেই ভূমিকা নিতে চাইছে।

কেকে/ এমএস
আরও সংবাদ   বিষয়:  জাপা   ভর   আওয়ামী লীগ   নির্বাচন  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

গ্যাস সংকটে ঝুঁকিতে বিনিয়োগ-রফতানি
মনোনয়নপত্র জমাদানে উৎসবমুখর পরিবেশ
ভারতে আ.লীগের কার্যক্রম বন্ধের আহ্বান, অভিযোগ অস্বীকার নয়াদিল্লির
১০ হাজার ইয়াবাসহ পুলিশ সদস্য আটক
‘ডোর টু ডোর’ প্রকল্পের সেরা পারফর্মারদের পুরস্কার বিতরণ

সর্বাধিক পঠিত

স্যুটার মান্নান হত্যা মামলার আসামি জুয়েল আটক
গতি বাড়াতে সমন্বয় টিমের মাধ্যমে কাজ করতে চাই: সমাজকল্যাণ সচিব
নীলসাগর গ্রুপের ‘ডোর টু ডোর’ প্রকল্পের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত
১০ হাজার ইয়াবাসহ পুলিশ সদস্য আটক
লাকসামে অপপ্রচারের প্রতিবাদে বিএনপি নেতার সংবাদ সম্মেলন
সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close