মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে কটূক্তি করায় দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে।
রোববার (১৭ আগস্ট) দুপুর ১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তারা এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন।
জানা যায়, অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের (১৮ ব্যাচের) শিক্ষার্থী দিপু রায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মেসেঞ্জারে এক মেয়ের সাথে কথোপকথনের সময় মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে কটূক্তি করেছে। আরো জানা যায়, যে মেয়েটির সাথে দিপু রায়ের কথা হয়েছে সেই মেয়েটির সাথে তার প্রেম রয়েছে। মেয়েটি তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের এবং প্রতারণার অভিযোগ এনে থানায় অভিযোগ এবং কোর্টে মামলা করায় ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ দিপু রায়কে গত শুক্রবার (১৫ আগস্ট) আনুমানিক সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতারকৃত দিপু রায় ধর্ম পরিবর্তন করে মেয়েটিকে বিয়ের আশ্বাস দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে মর্মে অভিযোগ রয়েছে। মেয়েটির সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে দিপু রায় মুহাম্মদ (সা.) কটূক্তি করেছে। যার প্রতিবাদে হাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা আজ এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি করেছেন।
কর্মসূচিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মহাসড়ক, টিএসসি প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবন সম্মুখে বক্তব্য প্রদান এবং স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে শেষ হয়। ‘বিশ্ব নবীর অপমান সইবে না রে মুসলমান ’, ‘তোমার নেতা আমার নেতা, বিশ্বনবী মোস্তফা’ , ‘বিচার বিচার বিচার চাই, দিপু রায়ের বিচার চাই’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, দিপু রায়ের ফাঁসি চাই’, ‘দিপু রায়ের চামড়া, কুত্তা দিয়ে কামড়া’ এমন স্লোগানে স্লোগানে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে বলেন, ‘দিপু রায় আমাদের মুসলিম উম্মাহর প্রাণের স্পন্দন হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে কটূক্তি করে যে জঘন্যতম অপরাধ করেছে তার বিচার আমরা চাই। বিগত সময়েও বিভিন্নজন মহানবী (সা.) কে নিয়ে কটূক্তি করেছে, কটূক্তি করার চেষ্টা করেছে। খতিয়ে দেখতে হবে তারা এ সাহস কোথায় পাচ্ছে। এ দিপু রায় একজন মুসলিম মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে তাকে ধর্ষণ করেছে এবং আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) কটূক্তি করেছে। আমরা এ কুলাঙ্গারের ফাঁসি চাই।
দেশে বিদ্যমান আইন নিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘বিদ্যমান আইনে কোনো কটূক্তিকারীর দুই বছরের জেল রয়েছে। আমরা অন্তবর্তীতালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই অনেক কিছুরই সংস্কার হচ্ছে। যারা আমাদের মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) কটূক্তি করবে তাদের ফাঁসির রায়ের শাস্তির আইন করতে হবে। তারা বলেন, দিপু রায়ের যদি ফাঁসি না হয় তাহলে এ প্রতিবাদ কর্মসূচি শুধু হাবিপ্রবিতে সীমাবদ্ধ থাকবে না। এই আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে। আমরা কিন্তু তখন আইন হাতে তুলে নিতে কুণ্ঠাবোধ করবো না।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘এই দিপু রায়ের সনদ বাতিল করতে হবে, তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিস্কার করতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা নাস্তিকতার, সমকামিতার মতো জঘন্য অপরাধ করছে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’
পরবর্তীতে তারা প্রক্টরের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
হাবিপ্রবি প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. শামছুজ্জোহা বলেন, যতটুকু জেনেছি দিপু রায় ধর্ষণ মামলায় পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার আছে। আমাদের শিক্ষার্ধীরা যে আন্দোলন করছে সে সম্পর্কে অবগত হয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে পদক্ষেপ নিতে হবে আমরা তা নিবো। সেইসাথে দেশের সরকার এবং পুলিশ প্রশাসন যদি কোনো সহযোগিতা চায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সহযোগিতা করবো। তিনি একে অপরের ধর্মের প্রতি সকলকে শ্রদ্ধাশীল থাকার বিষয়ে আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা চাই না কেউ কোনো ধর্মকে অসম্মান করুক হোক সেটি মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান বা অন্য ধর্ম। আমাদের একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে থাকতে হবে।
কেকে/ এমএস