নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার জামপুর হাতুড়াপাড়া এলাকায় অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে পালাক্রমে ধর্ষণের পর মীমাংসা করে ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতা আক্কাস আলী ও সাত্তার আলীর বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় গত সোমবার (৭ জুলাই) ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযুক্তরা হলো জামপুর ইউনিয়নের হাতুরাপাড়া এলাকার আব্দুল্লাহ, লাল চান মিয়া এবং ফয়েজ ভূঁইয়া।
জানা যায়, উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের হাতুরাপারা এলাকার অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফিরছিল। পথে অভিযুক্ত আব্দুলাহ কাঁঠাল খাওয়ানোর কথা বলে তার বাসায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আব্দুল্লাহ ওই শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক তার ঘরে নিয়ে আটকে ফেলে। এক পর্যায়ে অন্য আরো দুই সহযোগী ফয়েজ ও লালচানকে ফোনে ডেকে নিয়ে তিনজন মিলে ভুক্তভোগীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর ভুক্তভোগীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আইনের আশ্রয় নিলে তার পরিবারের সকল সদস্যকে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। ভুক্তভোগীর মা স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় রান্নার কাজ করেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ধর্ষণের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ভুক্তভোগীর মাকে (বাদী) ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে স্থানীয় প্রভাবশালী বিএনপি নেতা সাত্তার ও আক্কাস আলীর নেতৃত্বে একটি দল। ভুক্তভোগী পরিবারকে এক লাখ বিশ হাজার টাকা দিয়ে ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর বোন জামাই মো.আমিনুল ইসলাম বলেন, তার স্ত্রীর ছোট বোনকে তিনদিন আগে স্কুল থেকে ফেরার পথে অভিযুক্ত আব্দুল্লাহ তার পথ আটকে নিজের বাসায় নিয়ে যায়। ওইসময় আব্দুল্লাহ বলেছিল যে আব্দুল্লাহর স্ত্রী তার জন্য কাঁঠাল রেখেছে। এ কথা মতো ওই ছাত্রী আব্দুল্লাহর সঙ্গে তার বাসায় যান। সেসময় তার স্ত্রী বাসায় ছিল না। আব্দুল্লাহর স্ত্রীর কথা জানতে চাইলে আব্দুল্লাহ কোনো উত্তর না দিয়ে মুখ ও হাত পা বেধে তার দুই সহযোগীকে ফোন দিয়ে বাসায় নিয়ে যায়। পরে তারা তিনজন মিলে জোরপূর্বক পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে তার শাশুড়ি এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের তিন দিন হলেও তারা কোনো সমাধান পাননি বলে অভিযোগ করেন। ঘটনাটিকে টাকার বিনিময়ে মীমাংসার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন মীমাংসা সময় ছিলেন না।
তালতলা তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, এ ঘটনায় বাদী অভিযোগ করলেও মামলা দায়েরের বিষয়ে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। তিনি বুধবার বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বাদি ও তার পরিবারের কাউকে তিনি পাননি।
ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার বিষয়ে অভিযুক্ত সাত্তার আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অস্বীকার করে বলেন দুপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে তাই মীমাংসা করা হয়।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ধর্ষণের আসামিদের ধরতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ধর্ষণের ঘটনা মীমাংসা করার সুযোগ নাই।
কেকে/ এমএস