জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ৪২তম সিনেট অধিবেশনে প্রবেশ আগত জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে অবস্থানকারী শিক্ষকদের গোলাপ ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানালো শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (২৮ জুন) দুপুর ৩টায় সিনেট ভবনে এভাবেই জুলাইয়ে সহযোগী শিক্ষকদের ফুল দিয়ে বরণ ও বিভিন্ন পোস্টার লিখে স্বাগত জানাতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।
এ সময় ‘জুলাই যোদ্ধার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’ এমন স্লোগান দিতে থাকে শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়াও সিনেট ভবনের দেয়ালে ও দরজায় ‘জুলাইয়ের সাহসী শিক্ষকদের জন্য লাল গোলাপ’, ‘আওয়ামী দোসরদের জন্য পচা ডিম’ এমন পোস্টার লাগিয়ে রাখতে দেখা যায়। জুলাই আন্দোলনে শিক্ষকদের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এমন অভিবাদনের ব্যবস্থা গ্রহণ বলে জানান তারা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন, জুলাই আন্দোলন সারা দেশের মানুষের এক কাঙ্ক্ষিত মুক্তির আন্দোলন, এই আন্দোলনে আমাদের ক্যাম্পাসের অনেক শিক্ষক যেমন আমাদের বিরোধিতা করেছে তেমনি কিছু শিক্ষক আমাদের জন্য মন উজাড় করে সাপোর্ট দিয়ে গেছেন। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪২তম সিন্ডিকেট মিটিংয়ে আমরা সে সকল মহান শিক্ষকদের সম্মাননা জানানোর জন্য এটা আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা আর যারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরোধিতা করে গণহত্যাকারীদের সহযোগিতা করেছিল সেসকল শিক্ষক নামের কুলাঙ্গারদের প্রতি তীব্র ঘৃণা। আমরা চাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় সকল আওয়ামী দোসর মুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষার্থে কাজ করে এই প্রত্যাশা কামনা করছি।
বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যে সকল শিক্ষকরা স্বার্থের বাইরে গিয়ে, জীবনের মায়া ত্যাগ করে আমাদের সঙ্গে রাজপথে অংশগ্রহণ করেছেন, গণঅভ্যুত্থানকে সফল করেছেন। তাদেরকে যখন সিনেটের মতো গুরুত্বপূর্ণ সভায় উপস্থিত হতে দেখি, তখন আমরা সাহস পাই। এই সভা থেকে যে নীতিনির্ধারণী হবে তার জন্য আমরা আশাবাদী হই যে, তা দেশের জন্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। তাই আমরা তাদেরকে লাল গোলাপ দিয়ে বরণ করে নিয়েছি। একইসাথে আমাদের ভয় হয় যখন দেখি আওয়ামী দোসরা এই মিটিং এ উপস্থিত হন। আমরা চাই এই মিটিংয়ের মাধ্যমে তাদেরকে বহিষ্কার করা হোক এবং যোগ্য সিনেটরদের নির্বাচন করা হোক।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও ইসলামী ছাত্রশিবির জাবি শাখার অফিস সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, অভ্যুত্থানে যে সকল শিক্ষকরা নৈতিক জায়গা থেকে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তারা শিক্ষকতার মর্যাদা রক্ষায় সচেষ্ট ছিলেন, তারা আমাদের অনুকরণের অনুপ্রেরণা। এবং যারা আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের সমর্থন, প্রশ্রয় ও সহযোগিতা করেছে তারা শিক্ষকতা পেশার কলঙ্ক, তাদের বিচারের আওতায় আনা আবশ্যক।
কেকে/এএম