নওগাঁর ধামইরহাট থানায় রক্ষিত একটি ট্রাঙ্কের তালা খুলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ইতিহাস দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নপত্র বের করে নেওয়ার ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ঘটনার তদন্তে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ আলাদাভাবে দুটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে কমিটিগুলোকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
উপজেলা পরীক্ষা কমিটির সদস্য ও ধামইরহাট সরকারি এমএম ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকালে ট্রাঙ্ক পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় এর তালা খোলা। ট্রাঙ্কের ভেতরে রাখা ইতিহাস দ্বিতীয় পত্রের ৭০ নম্বরের লিখিত অংশের ৫০ সেট প্রশ্নপত্রের কয়েকটি বের করা হয়েছে। বাইরে দুটি ছেঁড়া অবস্থায় পাওয়া যায়।
ট্রাঙ্কটি মঙ্গলবার পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে থানায় রাখা হয়। সেদিন রাতে ধামইরহাট থানার হাজতখানায় সেটি রাখা হয় বলে জানা গেছে।
নওগাঁর পুলিশ সুপার সাফিউল সারোয়ার বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হওয়া গেছে, ট্রাঙ্ক ভেঙে প্রশ্নপত্র বের করা হলেও তা বাইরে ছড়ায়নি। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, দায়িত্বে অবহেলার কারণে ধামইরহাট থানার একজন সাব-ইন্সপেক্টর ও একজন কনস্টেবলকে ইতোমধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেননি।
ঘটনার তদন্তে পত্নীতলা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলামকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, যিনি প্রশ্নপত্র বের করেছেন, তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছিল। তদন্তের স্বার্থে এখনই পরিচয় প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
তবে একটি সূত্র জানিয়েছে, ২৪ এপ্রিল উপজেলার বড়থা বাজারে ছাগল ব্যবসায়ী উজ্জ্বল হোসেন হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার সাগর হোসেনকে থানা হাজতে রাখা হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, তাকেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছিল।
অন্যদিকে, জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সাদিয়া আফরিন। তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে প্রশ্নপত্র সংরক্ষণে গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে প্রশ্নপত্র বাইরে ছড়িয়েছে কি না, তা নিশ্চিতভাবে বলা যায়নি। তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
শুক্রবার (২০ জুন) ধামইরহাট থানায় রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাবে বলে জানা গেছে।
কেকে/এএম