যুবসমাজকে মাদকমুক্ত রাখতে খেলার কোনো বিকল্প নেই। খেলার মাঠ কেবল ক্রীড়া ও বিনোদনের স্থান; এটি শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখা, সামাজিক সম্পর্ক গড়ে তোলার এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের গুরুত্বপূর্ণ স্থান। কিন্তু সেই খেলার মাঠটি যদি হয় ব্যবসা করার স্থান তাহলে খেলোয়াড় ও শিক্ষার্থীদেরকে পড়তে হয় বিপাকে। এমনি এক অভিযোগ উঠেছে নীলফামারী কিশোরগঞ্জের মুশরুত বেলতলী খেলার মাঠকে ঘিরে। কোনো ধরনের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই অনুমতি ছাড়া খেলার মাঠে শুকাচ্ছেন ভুট্টা।
ভৌগোলিক দিক থেকে এ মাঠটি নিতাই ইউনিয়নের মানুষের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ছোট থেকে বড় প্রায় সব ধরনের টুর্নামেন্ট এ মাঠে প্রতিবছর আয়োজন করা হয়। এ মাঠের সুনাম যেন ছড়িয়ে আছে নীলফামারীর প্রতিটি স্থানে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি এ মাঠটি বর্তমানে ব্যবসায়ীদের কবলে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অনুমতি ছাড়াই শুকাচ্ছেন ভুট্টা। এতে করে একদিকে যেমন মুশরুত পানিয়াল পুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যাহত হচ্ছে পাঠ্য কার্যক্রম অপরদিকে নিয়মিত খেলোয়াড়দের অনুশীলনে বিঘ্ন ঘটছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয় সংলগ্ন এই মাঠটি দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষার্থীদের ক্রীড়াচর্চা ও এলাকার শিশু-কিশোরদের বিনোদনের স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে সম্প্রতি কিছু ব্যবসায়ী কোনো অনুমতি না নিয়েই সেখানে ভুট্টা শুকানো শুরু করেন। দিনের পর দিন মাঠটি দখল করে রাখায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় এক খেলোয়াড়ের সাথে কথা হলে তিনি জানান, খেলার মাঠে কোন কমিটি না থাকার কারণে ভুট্টা ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। তাদেরকে বারবার নিষেধ করার পরও তারা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। তাদেরকে প্রতিহত করার যেন কেউ নেই। কমিটির বিষয়ে তার কাছে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, মাঠের বর্তমান সভাপতি হচ্ছেন আমাদের উপজেলা নির্বাহী অফিসার। তিনি অসুস্থ থাকায় এ বিষয়ে এখনও জানানো হয় নি।
মুশরুত পানিয়াল পুকুর উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, বিষয়টি নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। এ বিষয়ে খুব শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করি।
এ বিষয়ে কথা হলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খোলা কাগজকে বলেন, ‘আমি তাদের বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও আমার কথার কোন ভ্রূক্ষেপ করে নাই। আমি তাদেরকে খেলার মাঠের বাইরে ভুট্টা শুকাতে বলেছি যাতে শিক্ষার্থী ও খেলোয়াড়দের কোন ব্যাঘাত না ঘটে। আমরা চাই দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হোক।’
এদিকে সচেতন মহল ও স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তাদের দাবি, মাঠটি যেন তার পূর্বের অবস্থা ফিরে পায় এবং ভবিষ্যতে এমন অননুমোদিত দখল ঠেকাতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মৌসুমি হকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।
কেকে/ এমএস