বান্দরবানের লামায় আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানির টাকা লুটের ঘটনার প্রধান মাস্টারমাইন্ড ডাকাত মো. করিমকে (৩৫) আটক করেছে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্যমতে পুলিশের অভিযানে ৩টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, তাজা গুলি ৪ রাউন্ড, ধারালো ছুরি, কাটার, ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি ও নগদ ৭০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকালে লামা পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড সিলেটি পাড়া এলাকার পাহাড়ে মাটি খুড়ে ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি ও নগদ ৭০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন বান্দরবান জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন শাখা) আব্দুল করিম। গোয়েন্দা পুলিশের ইনচার্জ কামরুজ্জামান, মামলার আইও-ওসি তদন্ত লামা ইন্সপেক্টর এনামুল হক, এসআই নরুজ্জামাসহ পুলিশ টিম অভিযান পরিচালনা করেন।
এর আগে শনিবার(১৭ মে) রাতে ডাকাত রুবেলের বাড়ি তল্লাশি করে আরো ৩০ লাখ ৭০ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে লামা থানা পুলিশ। এখন পর্যন্ত মোট ৫২ লাখ ৫৭ হাজার ২০০ টাকা উদ্ধার হয়েছে। বান্দরবানের লামার আলোচিত আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানির লাইনঝিরি অফিস থেকে ১ কোটি ৭২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ডাকাতির ঘটনায় এপর্যন্ত ৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ। অভিযানে লামা ও পার্শ্ববর্তী কক্সবাজারের চকরিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটকৃতরা হলেন চকরিয়া উপজেলার পূর্ব ভেউলা ইউনিয়নের পদ্মাছড়া এলাকার মারুফুল ওরফে আরিফ, একই উপজেলার লক্ষ্যাচর ইউনিয়নের নাঈমুল ইসলাম ওরফে সাগর, লামা পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুর রহিম, একই এলাকার মো. সুজন, সাবেক বিলছড়ি সিলেটিপাড়ার আনোয়ারা বেগম, শাকিলা জান্নাত (করিমের স্ত্রী), ওয়াসির আলী (করিমের পিতা) ও প্রধান মাস্টারমাইন্ড ডাকাত মো.করিম।
গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার (১৬ মে) আটককৃতদের দেয়া তথ্যমতে পৃথক তিনটি অভিযানে মাটি খুঁড়ে ২১ লাখ ১৭ হাজার ২০০ টাকা উদ্ধার করেছে লামা থানা পুলিশ।
লামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তোফাজ্জল হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার এক অভিযানে লামা পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের আব্দুর রহিমের কাছ থেকে ৫০ হাজার ২০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। তার দেয়া তথ্যমতে শুক্রবার (১৬ মে) সন্ধ্যা ৭টায় লামা পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড (সাবেক বিলছড়ি সিলেটি পাড়ার ওয়াসির আলীর পাহাড়) এলাকায় মাটি খুঁড়ে ২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা, ১৭ মে করিমের বাড়ি থেকে মাটি খুঁড়ে ১৮ লাখ টাকা, রাতে ডাকাত রুবেলের বাড়ি তল্লাশি করে আরো ৩০ লাখ ৭০ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে লামা থানা পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) মো. এনামুল হক জানান ওয়াসির আলীর ছেলে মো. করিম দক্ষিণ চট্টগ্রামের আন্তঃজেলা ডাকার দলের অন্যতম সদস্য। এই ডাকাতির ঘটনা ও টাকা লুটের প্রধান মাস্টারমাইন্ড মো.করিমকে আটক করা হয়েছে। অন্য ডাকাতদের গ্রেফতারে চেষ্টা ও টাকা উদ্ধারে মাঠে কাজ করছে লামা থানা পুলিশের চৌকশ টিম।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (৯ মে) ভোরে ১৫/১৬ জনের সশস্ত্র ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানির হিসাব রক্ষকসহ অন্যদের জিম্মি করে ১ কোটি ৭২ লাখ ৭৫ হাজার ৬৩৮ টাকা টাকা লুট করে নিয়ে যায়। জানা যায়, ঘটনার সময় ডাকাত দল লোহার সিন্ধুক ভাঙার ব্যর্থ চেষ্টা করে। সেসময় লোহার সিন্ধুকে রক্ষিত ছিল আরও সাড়ে তিন কোটি টাকা। ডাকাতির ঘটনায় ১০ মে লামা থানায় অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনকে আসামি করে মামলা হয়।
কেকে/এজে