ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

কেমন ছিলেন মুঘল হারেমের ভগ্নিরা?

রেজাউল করিম
🕐 ২:০২ অপরাহ্ণ, মে ০৯, ২০১৮

হারেম একটি আরবি শব্দ যার অর্থ অন্তঃপুর, অন্দরমহল, জেনানামহল, নিষিদ্ধ বা পবিত্র স্থান। হারেম হচ্ছে মহিলাদের জন্য নির্ধারিত পবিত্র স্থান যেখানে রাজা বা রাজপুত্র ছাড়া অন্য কোনো পুরুষের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ। হারেমে অবস্থান করতেন রাজা, সুলতান বা সম্রাটের স্ত্রীরা, উপপত্নীরা, অপ্রাপ্ত বয়স্ক পুত্র, অবিবাহিত কন্যা, মহিলা আত্মীয় এবং দাসীরা। এছাড়া হারেমে রাজা বা রাজপুত্রদের বিনোদনের জন্য থাকত শত শত, হাজার হাজার যুবতী মেয়ে এবং যুবতী নারী।

যে রাজা যত বেশি অভিজাত, ক্ষমতাশালী ও অর্থবিত্তের অধিকারী তার হারেমে নারীর সংখ্যাও তত বেশি থাকত। তখনকার রাজা বাদশাহদের আমলে যুদ্ধবিগ্রহ কম-বেশি লেগেই থাকত। আর যুদ্ধে পরাজিতদের স্ত্রী কন্যাকে গনিমতের মাল, দাস-দাসী হিসেবে হারেমে নিয়ে আসা হতো। কখনো বিয়ে কিংবা উপঢৌকন হিসেবে কাউকে আনা হতো। কাউকে দাসীরূপে ক্রয় করে আনা হতো।
এছাড়া রাজার কোনো অনুচর রাজাকে জানাল যে, অমুক জায়গায় অমুকের একটা সুন্দর মেয়ে আছে। রাজা বলে দিতেন ঠিক আছে তাকে হারেমে নিয়ে আস। অনুচরেরা তাকে হারেমে নিয়ে আসত। সাধারণ মানুষ কিছুই বলতে পারত না। তাদের কোনো অধিকার ছিল না। তারা ছিল রাজার সম্পদ। রাজ্যের সম্পত্তির মালিক ছিলেন রাজা, ভূমির মালিক ছিলেন রাজা, জনগণ নয়। জনগণ ছিল ভূমিদাস, রায়ত, প্রজা। রাজাকে জনগণ অতিশয় ভয় ও ভক্তি করত। তারা তাঁকে খোদাই বেটা মনে করত।
রাজারা নিজেদের স্রষ্টার প্রতিনিধি হিসেবে ঘোষণা করতেন। রাজা ছিলেন একাধারে আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের প্রধান। তাঁর মুখের কথাই আইন, তাঁর মুখের কথায়ই বিচার এবং তাঁর নির্দেশেই তা কার্যকরী হতো। রাজা জমির মালিক হিসেবে উৎপন্ন ফসলের অর্ধাংশ এবং কোনো কোনো রাজা দুই-তৃতীয়াংশ খাজনা হিসেবে আদায় করতেন। বন্যা খরা লেগেই থাকত। ফলে সাধারণ মানুষ ছিল চরম অভাবী।
কিন্তু রাজা ছিলেন বিত্তশালী। কোনো কৃষক খাজনা দিতে ব্যর্থ হলে খাজনাস্বরূপ তার পুত্র-কন্যাকে তুলে নেওয়া হতো। পুত্রকে দাস হিসেবে রাজার কাজে লাগানো হতো এবং কন্যাকে দাসী হিসেবে হারেমে প্রেরণ করা হতো। এভাবে নানা উপায়ে হারেমে নারী সংগ্রহ করা হতো।
বিশাল এলাকা নিয়ে হারেম গঠিত হতো। হারেমের মধ্যে বিভিন্ন মহল বা প্রাসাদ থাকত। মহলগুলোর বিভিন্ন নাম ছিল। যেমন- জেনিসার (শনিবার) মহল, লেথেবার (রবিবার) মহল, মঙ্গল (মঙ্গলবার) মহল, বাঙালি মহল ইত্যাদি। বাঙালি মহলে থাকত বিদেশি নারী ও বিদেশি উপপত্নী। রাজা বা সুলতান বা সম্রাট একেক দিন একেক মহলে যেতেন। রাজা বা সুলতান বা সম্রাট কোনদিন কোন মহলে যাবেন তা নির্ধারিত থাকত। রাজা অবশ্য ইচ্ছা করলে যেকোনো দিন যেকোনো মহলে যেতে পারতেন। সম্রাট হারেমের অভ্যন্তরে ঘুরে বেড়ানোর সময় কানিজ (নারী কর্মচারী)-দের দল তাঁকে অনুসরণ করত। হারেমে রাজা নর্তকীদের নাচ, গায়িকাদের গান উপভোগ করতেন, যাকে ভালো লাগত তাকে নিয়ে ইন্দ্রিয়সুখে মত্ত হতেন।
হারেমের নারীদের কাজই ছিল রাজা বা রাজপুত্রদের মনোরঞ্জন করা। এ জন্য তারা নিজেরা রূপচর্চা করতেন, হারেমের অভ্যন্তরে ফুলের বাগান করতেন, নাচ-গান করতেন। নৃত্যে, সঙ্গীতে ও কাব্যচর্চায় হারেমের নারীদের জুরি মেলা ভার। কেউ রাজার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারলে রাজপত্নী বা উপপত্নী হওয়ার সম্ভাবনা থাকত। রাজা বা রাজপুত্র হারেমের কোনো সুন্দর কুমারীকে উপভোগ করলে রাজমাতা, ভগ্নি, স্ত্রীরা বিছানায় রক্তপাত হয়েছে কি না তা নিরীক্ষা করতেন। অবশ্য এটা সে যুগের রেওয়াজ ছিল। কোনো মেয়ের বিয়ে হলে প্রথম সহবাসে তার রক্তপাত হয়েছে কি না তা তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন নিরীক্ষা করতেন। উদ্দেশ্য সে সতী কুমারী কি না।
হারেম প্রথা সব আমলেই ছিল এমনকি প্রাচীন আমলেও। মুঘল আমলে ও অটোমান আমলে তা বিকশিত হয়। যেমন হিন্দু সমাজে বর্ণ প্রথা প্রাচীনকাল থেকেই ছিল। সেন আমলে বল্লাল সেনের আমলে তা পুরোমাত্রায় বিকশিত হয়। মুঘল হারেমে ৫০০০-৭০০০ নারীর অবস্থান ছিল। সুলতানি আমলেও কম ছিল না। কথিত আছে, বাংলার সুলতান সিকান্দার শাহের হারেমে ১০০০০ নারী ছিল। রাজা বা সুলতানের মা ছিলেন হারেমের প্রধান। তাকে বলা হতো ভালিদা সুলতান (সুলতানের মা)। তারপরে ছিল বা-খাদিম এফেন্দি। তিনি হলেন সুলতান বা রাজার প্রথম সন্তানের জননী। প্রথম সন্তানের সুযোগ ছিল পরবর্তী রাজা হওয়ার।
এরপরে ছিলেন ইকবালার। তারা ছিলেন রাজার প্রথম সন্তানের পর অন্যান্য সন্তানের জননী। তারা রাজার পত্নী হিসেবে বিবেচিত হতেন। এরপরে ছিল গেদিকলি কাদমলার। এরা ছিল অভিজ্ঞ দাস-দাসী এবং তারা রাজাকে গোসল করিয়ে দিত। এরপরে ছিল অদাখলার। এরা ছিল কিশোরী দাসী যাদের সঙ্গে রাজা বা সুলতান রাত কাটাতেন এবং ভবিষ্যতে সন্তানের জননী হতেন। এরপরে ছিল গোজদে শ্রেণি। এরা ছিল সুন্দর যুবতী দাসী। এদের মধ্যে যে সুলতানের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হতো, সে সুলতানের বিছানায় উঠে আসতে পারত। এরপরে সর্বশেষ শ্রেণি ছিল কারিয়ালার। এরা সাধারণ কাজকর্ম করত। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে এবং বিভিন্ন যোগ্যতায় উত্তীর্ণ হতে পারলে এরা গোজদে হওয়ার সুযোগ পেত।
হারেমের পাহারায় যারা নিযুক্ত থাকত তারা ছিল খোজা। তাদের খোজা করে দেওয়া হতো যাতে তারা যৌন ক্রিয়ায় অংশ নিতে না পারে। রণাঙ্গনে পরাজিত সৈনিকদের খোজা করা হতো। দাস বা ক্রীতদাসদের পুত্রসন্তানদের শৈশবে খোজা বানানোর লক্ষ্যে তাদের অণ্ডকোষসহ শুক্রথলি কেটে ফেলে দেওয়া হতো। ষাঁড়ের ক্ষেত্রে যেমন করা হয়।
ষাঁড়ের যৌনশক্তি নষ্ট করার জন্য তার অণ্ডকোষ কেটে ফেলে দেওয়া হয়। তখন ষাঁড় হয়ে যায় আবাল। আবাল গরুর জৈবিক চাহিদা নেই। মানুষের ক্ষেত্রেও এরূপ করা হতো শুধু খোজা বানাতে। খোজারা ছিল হারেমের প্রহরী ও কর্মচারী। তারা ছিল কামশূন্য। তাদের কোনো  জৈবিক চাহিদা ছিল না, সংসার ছিল না। তাই তারা রাজার খুব বিশ^স্ত ছিল। তারা প্রভুর বিছানা তৈরি, বস্ত্রাদি ধৌত করা, চুল কাটা, পালকি টানা, মলমূত্র পরিষ্কার ইত্যাদি কাজকর্ম করত। তখন দেশে-বিদেশে খোজাদের বেশ চাহিদা ছিল।
চীনের মিং আমলে এক লাখ খোজা ছিল। মিং চীনের একটি রাজবংশ যারা (১৩৬৮-১৬৪৪) = ২৭৬ বছর রাজত্ব করেছিল। অটোমান সুলতানদেরও ৬০০০-৮০০০ খোজা ছিল। খোজারা রাজা বা রানীর ব্যক্তিগত কর্মচারী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করত। খোজাদের চাহিদা থাকায় দাস ব্যবসায়ীরা দাসদের, বিশেষ করে শিশু দাসদের খোজা করে বেশি দামে বিক্রি করত।
রাজা, নবাব, সামন্ত প্রভু, অভিজাত সবারই মর্যাদা ও সামর্থ্য অনুযায়ী হারেম ছিল। আর হারেমের পাহারা দেওয়ার জন্য খোজার দরকার ছিল। খোজারা হারেমের প্রহরী থাকায় রাজা নিশ্চিত হতে পারতেন যে, হারেমে জন্ম নেওয়া শিশুর পিতা তিনিই। হারেমের নারীদের কিন্তু খোজা করা হতো না। তাদের জৈবিক জ্বালা ঠিকই ছিল। রাজা বা রাজপুত্র কয়জনের কাছে যাবে? ফলে বহু নারী যৌনক্ষুধায় অভুক্ত থাকত। তাই তারা পরপুরুষের সঙ্গে কামলীলায় লিপ্ত হতে পারে এ আশঙ্কায় খোজাদের হারেমের পাহারাদার নিযুক্ত করা হতো।
খোজারা নাজির নামেও অভিহিত ছিল। হারেমের অভ্যন্তরে প্রাসাদ বা মহলপ্রতি মহিলা রক্ষীও থাকত। তারা নাজিরের কাছে তাদের রিপোর্ট পেশ করত। হারেমের নারীদের ভাত কাপড়ের অভাব ছিল না। কিন্তু তাদের ব্যক্তিজীবন বলে কিছু ছিল না। যৌনজীবনের কষ্টের সীমা ছিল না। এমনকি রাজার পত্নীরা জীবনে রাজাকে কয়দিন কাছে পেয়েছে?  নারীরা যে মানুষ, তাদের যে ক্ষুধা, তৃপ্তি, আনন্দ, ভালোবাসা আছে তা বিবেচনা করা হতো না। নারীদের দাসী হিসেবে হাটে-বাজারে বিক্রি করা হতো।
ব্যবসায়ীরা সুন্দর যৌন আবেদনময়ী নারীদের দাসী হিসেবে বেছে নিতেন এবং বিক্রি করতেন। তারপরেও যৌনজীবন যুৎসই না হলে তাকে ফেরত দেওয়া হত। তখন পণ্যের মতো নারী উপহার দেওয়া হতো। মুহম্মদ বিন তুঘলক যখন ইবনে বতুতাকে চীনের রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করেন তখন সুলতান তাকে ১০ জন এবং চীনের সম্রাটের জন্য ১০০ জন দাসী উপহার হিসেবে প্রেরণ করেন। পথিমধ্যে ডাকাতি ও নৌকাডুবির ফলে ইবনে বতুতার সে যাত্রায় চীনে যাওয়া হয়নি। তিনি মালদ্বীপ, জাভা, শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলায় আসেন (১৩৪৬ খ্রি.)।
বাংলায় এক বাজারে তিনি তার সামনে উপপত্নী হিসেবে ব্যবহারের উপযোগী এক সুন্দর তরুণীকে এক স্বর্ণ মুদ্রায় বিক্রি হতে দেখেন। তিনি নিজেও প্রায় অনুরূপ দামে একজন যুবতী দাসী ক্রয় করে নিয়ে যান। দাসীটির নাম ছিল আশুরা। সে ছিল পরমা সুন্দরী। সন্ধি, চুক্তি বা অন্য যেকোনো সময়ে এক রাজা আরেক রাজাকে নারী উপহার দিতেন।
মিসরে ফাতেমীয় বংশের এক খেয়ালি বাদশাহ ছিলেন। নাম তার আবু আলী আল মনসুর (৯৯৬-১০২১)। তিনি তার হারেমের গেট বন্ধ করে ২৮০০ বালিকাকে না খাইয়ে মেরে ফেলেন। খলিফা হারুনুর রশিদের ১২ সন্তানের ১১ জনই ছিল উপপত্নীদের ঘরের। বহুবিবাহ করা, উপপত্নী ও দাসী রাখা ছিল যেন ঐতিহ্যের ব্যাপার। মধ্যযুগ এমনকি ব্রিটিশ আমলেও অভিজাতরা কন্যা বিয়ে দিলে কন্যার সঙ্গে এক বা একাধিক বাঁদি (কাজের মেয়ে) দিতেন।
অভিজাত কন্যা বা অভিজাত বউ সাংসারিক কোনো কাজ করত না। কাজ করাত বাঁদি দিয়ে। এ জন্য অভিজাত পিতা-মাতা বিয়ের সময় কন্যার সঙ্গে বাঁদিও দিতেন। বাদির ঘরেও সন্তান হতো। তবে সে সন্তানের কোনো অধিকার ছিল না। বাঁদির সন্তানেরা কাজের লোক হিসেবে অভিহিত হতো। ব্রিটিশ আমলে নবাব ও জমিদারদের পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠে বাঈজি সংস্কৃতি। বাঈজি অর্থ পেশাদার নর্তকী ও গায়িকা। বাঈজিরা উন্নত সংস্কৃতির অধিকারী ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম ভিসি অধ্যাপক ড. মাহমুদ হাসান (১৯৪২-১৯৪৮) ছিলেন বাঈজির সন্তান।
সম্রাট হারেমে প্রবেশ করলে তাঁর মনোরঞ্জনের জন্য সঙ্গীত ও নাচের জলসা বসত। এরূপ জলসায় নারীরা তাঁকে উত্তেজক পানীয় গ্রহণে উৎসাহিত করত। হারেমের নারীদের মধ্যে একটা অঘোষিত প্রতিযোগিতা ছিল সম্রাট বা সুলতানের সঙ্গী হওয়ার। তবে বাইরে যাওয়ার সময় শুধু সম্রাটের প্রিয়তমা প্রত্নী সঙ্গী হতে পারতেন। সব পত্নীর ভাগ্যে সে সুযোগ হতো না। কারণ সম্রাটদের স্ত্রীও ছিল অনেক।
সম্রাট বা রাজপুত্রদের অগণিত পত্নী, উপপত্নী ও দাসী থাকা সত্ত্বেও হারেমের কোনো একজনকে হয়তো পিতা-পুত্র উভয়েরই ভালো লেগে যেত এবং তা নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বও দেখা দিত। যেমন আনারকলি নামে আকবরের এক দাসী ছিল। আনারকলির নাম ছিল কারও মতে শরফুন্নেসা, কারও মতে নাদিরা বেগম। আকবর তার নাম দিলেন আনারকলি। আনারকলি অর্থ ডালিম ফুল। তিনি ছিলেন নর্তকী, অপরূপা সুন্দরী। এ কারণে তার প্রতি আকবরের দৃষ্টি আকর্ষিত হয় এবং তিনি হয়ে যান আকবরের উপপত্নী।
এক পর্যায়ে যুবরাজ সেলিম (জাহাঙ্গীর) ও আনারকলির মধ্যে অবৈধ প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আকবর এ সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি। তিনি সেলিমকে উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করারও হুমকি দেন। আর এদিকে তিনি চার দেয়ালের মাঝে আনারকলিকে বন্দির আদেশ দেন এবং সেখানেই করুণভাবে তার মৃত্যু হয়। কারও মতে, সম্রাটের নির্দেশে তাকে জীবন্ত কবর দেওয়া হয়। এ ঘটনা ঘটে ১৫৯৯ সালের দিকে। পরে শাহজাদা সেলিম আনারকলির স্মৃতির উদ্দেশে লাহোরে এক সমাধিসৌধ নির্মাণ করেন।
মুঘল সম্রাটদের বিবাহিত স্ত্রীও কম ছিল না। সম্রাট বাবরের স্ত্রী ছিলেন ১১ জন। তাদের নাম ছিল ১. আয়েশাহ সুলতান বেগম, ২. বিবি মুবারিকা ইউসুফজাই, ৩. দিলদার বেগম, ৪. গুলনার আগাচেহ, ৫. গুলরুখ বেগম, ৬. মাহাম বেগম (সম্রাট হুমায়ুনের মা), ৭, মাসুমাহ বেগম, ৮. নারগুল আগাচেহ , ৯. জয়নব সুলতানা বেগম, ১০. সালিহা সুলতান বেগম এবং ১১. সাদিয়া আফাক।
সম্রাট হুমায়ুনের স্ত্রীরা হচ্ছেন : ১. বেগা বেগম (হাজি বেগম), ২. শাহজাদী খানম,  ৩. মাহ চুচাক, ৪. মিবেহজান, ৫. হামিদা বানু (সম্রাট আকবরের জননী), ৬. খানেশ আগা, ৭. মেওয়াজান, ৮. শাহনাম আগা, ৯. গুলবার্গ বার্লাস, ১০. সাদ বিবি, ১১. চাঁদ বিবি এবং ১২. গানওয়ার বিবি।
সম্রাট আকবরের স্ত্রীরা হচ্ছেন : ১. রুকাইয়া সুলতানা বেগম সাহিবা (বিয়ের বছর ১৫৫২), ২. আবদুল্লাহ খানের কন্যা, নাম অজানা, (১৫৫৭), ৩. রাজকুমারী সালমা সুলতান ( বৈরাম খানের বিধবা স্ত্রী) ১৫৬১, ৪. মরিয়ম-উজ-জামানি (যোধবাঈ), সম্রাট জাহাঙ্গীরের মাতা, ৫. রাজকুমারী শ্রীনাথি বাঈ (১৫৬২), ৬. বিবি দৌলত শাদ বেগম (১৫৬৩), ৭. রাজকুমারী খন্দেশ (১৫৬৪), ৮. ফাদম খানের কন্যা (নাম জানা যায়নি), ৯. কাশ্মিরি রাজকন্যা, সুলতান মুহাম্মদ নাসিরউদ্দিন হোসেন শাহের কন্যা (নাম জানা যায়নি) (১৫৬৯), ১০. রাজকুমারী সিন্ধ বেগম সাহিবা (১৫৭০), ১১. রাজকুমারী বাঈজিলাল কানওয়ারী সাহিবা (১৫৭০), ১২. রাজকুমারী বাঈজিলাল ভুনামতি কানওয়ারী সাহিবা (১৫৭০), ১৩. নহর দাসের কন্যা (নাম জানা যায়নি) ১৫৭২, ১৪. নাগৌরের রাজকুমারী, রাজা শ্রী জয়চাঁদের কন্যা (১৫৭৩), ১৫. রাজকুমারী কারিশমা বানু বেগম সাহিবা (১৫৭৫), ১৬. ডুঙ্গাপুরের রাজকুমারী, শ্রী আসকারান সাহিব বাহাদুরের কন্যা (১৫৭৭), ১৭. রাজকুমারী রুকমাবতী বাঈজিলাল সাহিবা (১৫৮১), ১৮. মেরতার রাজকুমারী, রাজা শ্রী কেশো দাস রাথোরের কন্যা (১৫৮১), ১৯. কাজী ইসার কন্যা (১৫৯৪), ২০. নাসির খানের কন্যা (১৫৯৭), ২১. কোচ বিহারের রাজকন্যা, লক্ষ্মী নারায়ণ ভুপ বাহাদুরের কন্যা (১৫৯৭), ২২. রাজকুমারী গোহার খানম , ২৩. তারা বেগম সাহিবা ২৪. তৌতি বেগম সাহিবা, ২৫. মেরতার হাসান খানের কন্যা, ২৬. নয়ানগরের রাজকুমারী, ২৭. রাজকুমারী মানভাওতি সাহিবা, ২৮. আবদার বেগম সাহিবা, ২৯. আচানক বেগম, ৩০. বিবি পুনগ্রেই, ৩১. বিবি আরাম ককস, ৩২. সেলিনা সুলতান বেগম, ৩৩. বিবি খেরিয়া বেগম, ৩৪. রাজিয়া সুলতান বেগম, ৩৫. বিবি মরিয়ম শাহজাদা, ৩৬. বিবি নৌন, ৩৭ শামস চকের কন্যা (১৫৯২)।
সম্রাট জাহাঙ্গীরের স্ত্রীরা : ১. ভগবান দাসের কন্যা মামাতো বোন মনবাঈ (বিয়ের বছর ১৫৮৫), ২. রাজকুমারী রতন বাঈ (১৫৮৬), ৩. রাজকুমারী যোধবাঈ (১৫৮৬) (যোধবাঈয়ের ছেলে সম্রাট শাহজাহান), ৪. মালিকা শিকর বেগম (১৫৮৬), ৫. শাহেব জামিল (১৫৮৬), ৬. বিকানার রাজা রাজসিংহের কন্যা (১৫৮৬), ৭. মালিকা-ই-জাহান বেগম (১৫৮৭), ৮. রাজা মলভাসির কন্যা (নাম জানা যায়নি) (১৫৮৮), ৯. জোরা বেগম (১৫৯০), ১০. রাজকুমারী করমাসি (১৫৯১), ১১. দোস্ত মোহাম্মদ খাজার কন্যা (১৫৯১), ১২. রাজকুমারী কানওয়াল রানী (১৫৯২), ১৩. নূরুন্নিসা বেগম (১৫৯৩), ১৪. জয়সলমির রাজা রাওয়াল ভিমের কন্যা (১৫৯৩), ১৫. কাশ্মিরের সৈয়দ মোবারক খানের কন্যা (১৫৯৩), ১৬. হুসেন চাকের মেয়ে, ১৭. রাজা ফারুকীর মেয়ে (১৫৯৩), ১৮. বেলুচিস্তানের আলাউদ্দিন খানের কন্যা,  ১৯. বিবি খাস মহল (১৫৯৬), ২০, সাহিলা বানু (১৬০৮), ২১. কোকা কুমারী সাহিবা (১৬০৮), ২২. ঠাকুর মনচাঁদের কন্যা, ২৩. রামচন্দ্র বুন্দেলার কন্যা, ২৪. মধুকর দেও বুন্দেলার কন্যা, ২৫. মেহেরুন্নেসা (নূরজাহান) (১৬১১)।
শাহজাহানের স্ত্রীদের নাম- ১. আকবারাদি মহল, ২. কান্দাহারি মহল, ৩. মমতাজ মহল (সম্রাট আওরঙ্গজেবের মা), ৪. হাসিনা বেগম সাহেবা, ৫. মতি বেগম সাহেবা, ৬. ফতেপুরি মহল সাহেবা, ৭. সরহিন্দি বেগম সাহেবা, ৮. শ্রীমতি মানভবাতি বাঈজিলাল সাহেবা, ৯. লীলাবতী বাঈজিলাল সাহেবা। সম্রাট আওরঙ্গজেবের স্ত্রীদের নাম- ১. নবাব বাঈ বেগম (রাজপুরী জারাল রাজপুত কন্যা), ২. দিলরাস বানু বেগম (পারস্য), ৩. আওরঙ্গবাদী মহল, ৪. উদয়পুরি মহল, ৫. জৈনবাদী মহল, খ্রিস্টান দাসী এবং উপপত্নী। আওরঙ্গজেব সম্রাট হওয়ার পূর্বেই তার মৃত্যু হয়।

রেজাউল করিম : সহকারী অধ্যাপক, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ, ফরিদপুর।
[email protected]

 
Electronic Paper