ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বেঁচে থাকার অধিকার

শেখ আনোয়ার
🕐 ১১:৪১ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২০

‘সব অধিকারের চেয়ে বড় হলো জীবনের অধিকার। বেঁচে থাকার অধিকার। আইনের চোখে প্রাণীদের জীবনের অধিকার স্বীকৃতি পাবে, তেমন কোনো সম্ভাবনা আমি দেখতে পাই না।’ কথাটা বলেছেন ২০০৩ সালে নোবেলজয়ী জে এম কোয়েটজি (দ্য লাইভস অব অ্যানিম্যালস)। মাথা কেটে নেওয়ার পর আরশোলা কতক্ষণ বাঁচে? উত্তর : ‘নয় দিন। কথাটা এখানেই বিশ্বাস করে নিন। যাচাই করতে যাবেন না।’ এই প্রশ্নোত্তর হুবহু এভাবেই প্রকাশিত হয়েছিল একটা বিজ্ঞান পত্রিকার পাতায়। এ তথ্য পেয়ে পাছে অনেকেই আরশোলার মতো কুৎসিত প্রাণীর মু-চ্ছেদের পরীক্ষা করে দেখতে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন, তাই ওই নিষেধাজ্ঞা। এতে প্রমাণিত হয়, আমরা মজ্জাগত নিষ্ঠুরতাকে সত্তার অঙ্গ হিসেবে বহন করি এবং সে কথা আমরাই সবচেয়ে ভালো করে জানি।

প্রত্যেকটা বিচ্ছিন্ন ঘটনাতেই আমরা কষ্ট পাই। দোষীর শাস্তি চাই। কিন্তু পশুপাখিদের প্রতি রোজকার ধারাবাহিক নিষ্ঠুরতায় চোখ বুজে থাকি। এখানেই আমাদের দ্বিচারিতা। মোটরসাইকেলের হ্যান্ডেলে রোজ হেঁটমুণ্ডু হয়ে ঝুলে থাকে হাঁস, মুরগি, কবুতর, পাখি। চোখের সামনেই উদাসীনভাবে তাদের ডানা ছেঁড়া, গলা কাটা, পা ভাঙা চেয়ে চেয়ে দেখি। জীবজন্তুর প্রতি নিষ্ঠুরতা নিয়ে কথা বলতে গেলেই শুনতে হয় নানান তত্ত্বকথা। গাছপালারও তো প্রাণ রয়েছে, তাহলে তো সবজি- শিম, লাউ, তরকারিও কেটে খাওয়া চলে না। কিন্তু উদ্ভিদের চেয়ে প্রাণিদেহের অঙ্গ-তন্ত্র-কোষ-কলার গঠন, জন্ম-মৃত্যু, বেড়ে ওঠা, সাড়া দেওয়া সবই যে অনেকটা আলাদা। সে কথা স্কুলের বিজ্ঞান ক্লাসে সবাই জেনেছেন। চোখেও দেখেছেন, গাছের ডাল কেটে নেওয়া আর ছাগলের পা কেটে নেওয়া একই রকম ঘটনা নয়। নিষ্ঠুরতার অজুহাত খাড়া করতেই এসব অবান্তর কথার অবতারণা।

প্রসঙ্গটা কুকুর নিয়ে। করোনার কারণে দীর্ঘ প্রায় অর্ধবছর হোটেল রেস্তোরাঁ বন্ধ। এখনো ঠিকঠাকমতো হোটেল রেস্তোরাঁ খোলেনি বলে ঝুটা খেয়ে বেঁচে থাকা কুকুরদের চরম খাদ্য সংকট চলছে। কুকুরগুলো রাস্তাঘাটে, লোকালয়ে খাবারের জন্য আসছে। আবার ক’দিন পরে হোটেল রেস্তোরাঁ যখন পুরোদমে খুলবে, তখন এই কুকুর আর এভাবে দেখা মিলবে না। এখন ঢাকা শহরে চলছে কুকুর নিধন। অথচ কে না জানে, কুকুর মানুষের পরম বন্ধু। আবর্জনা পরিষ্কার তো রয়েছেই।

ম্যানহোলে লুকিয়ে থাকা ইঁদুর-ছুঁচোরা প্রকাশ্যে আসতে পারে না এ কুকুরের ভয়েই। আমাদের ঢাকা শহরেও ড্রেন ও ম্যানহোলে লাখ লাখ ইঁদুর রয়েছে। তাদের বংশ বিস্তার কুকুরের চাইতেও অনেক দ্রুত হয়। কুকুরগুলো যখন রাতের বেলায় রাস্তা-ঘাটে ঘুরে বেড়ায়, তখন ইঁদুরগুলো কিন্তু বাইরে বেরুতে পারে না। অথচ ইঁদুর প্রায় ১৪ থেকে ১৫টা প্লেগের মতো ভয়ানক রোগের বাহক। কুকুর থাকলে ভয়ে থাকে নগরীর রাতের চোর-ডাকাতরাও। এভাবে পরিচ্ছন্নতা, নিরাপত্তাসহ প্রতিবেশ ব্যবস্থা ঠিক রেখে নগরবাসীর জন্য বড় অবদান রেখে যাচ্ছে কুকুর।

শুধু কুকুর কেন? আশপাশে যত প্রাণী রয়েছে তারা যে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবার একটু দেখা যাক। ব্যাঙ না থাকার কারণে, ফড়িং না থাকার কারণে, গাপ্পি মাছ না থাকার কারণে মশা নিয়ে আমাদের উৎপাত শুরু হয়েছে। এ কারণে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়ায় গত বছর অনেক মানুষ হারিয়েছি। ব্যাঙ যদি মশা খেয়ে কমিয়ে দিতে পারত তাহলে পরিস্থিতি অতটা খারাপ নাও হতে পারত। আমাদের আসলে প্রকৃতিগতভাবেই একটা প্রাণের বেঁচে থাকার জন্য আরেকটা প্রাণের ওপর নির্ভর থাকতে হয়। বাস্তুসংস্থানের এ নির্ভরতা থাকবেই। আশপাশের প্রত্যেকটা প্রাণী যেমন, সাপ, ব্যাঙ সবকিছুরই আমাদের জীবনে গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু উপকারের বিপরীতে বরাবরই কুকুর, বিড়াল ও কাকের মতো প্রাণীদের সহ্য করতে হয় নানান নিপীড়ন। তবে, এটা বোঝা যায় এক শ্রেণির মানুষ অপরাধ, অসততা ও পাশবিকতাকে যতটা না ঘৃণা করে, এর চেয়ে অনেক বেশি ঘৃণা করে প্রভুভক্ত, সাহসী, বুদ্ধিমান ও সাহায্যকারী প্রাণী কুকুরকে।

সম্প্রতি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, নগর থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হবে ৩০ হাজার কুকুর। কারণ হিসেবে বলা হয়, কুকুরের কারণে বিঘিœত হচ্ছে জনগণের চলাচল। কুকুর বিতর্কে অনেকে বলছেন, কুকুর প্রচুর আওয়াজ করে। রাতে ঘুমাতে দেয় না। কথাটা খুব সত্যি হয়তো! পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি শব্দদূষণের শহরগুলোর মধ্যে একটা ঢাকা। এই ঢাকায় আপনি সবচেয়ে নীরব এলাকাটাতেও গড়ে ৭০ থেকে ১০০ ডেসিবল শব্দের মধ্যে থাকেন। আবাসিক এলাকায় সহনীয় শব্দদূষণের মাত্রা হওয়ার কথা আইন অনুযায়ী এর অর্ধেক। একপাল কুকুর একসঙ্গে আধঘণ্টা চিৎকার করলে ১০০ ডেসিবল শব্দ হয়। এবার বুঝুন কুকুর কত শব্দ দূষণ করে! মোটরবাইক চালকরা নাকি কুকুরের কারণে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন! ঢাকার রাস্তায় কতজন মোটরবাইক চালক কুকুর বাঁচাতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন? প্রাণ হারিয়েছেন ক’জন তা পরিসংখ্যান ঘেঁটে বের করা দরকার।

এদিকে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘কুকুর সরিয়ে নিলে রাজধানীর পরিবেশে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটবে, বাড়বে স্বাস্থ্যঝুঁকিও। একই সঙ্গে বড় ঝুঁকিতে পড়বে পুনর্বাসিত এলাকার মানুষও’। কুকুরগুলো যে এলাকাগুলোতে থাকে, সেসব এলাকার মানুষগুলোর সঙ্গে একটা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বিরাজ করে। কুকুর কমিউনিটি বেসড হয়। কুকুর সাধারণত স্থানীয় কাউকে কামড় দেয় না। এদের অন্য কমিউনিটিতে নিয়ে গেলে সেখানকার কুকুরগুলো এদের গ্রহণ করবে না। যখন এই কুকুরগুলোকে ঢাকার বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে তখন তারা সেখানকার কুকুরদের মানবে না এবং স্থানীয়দের মানবে না। ফলে কুকুরে কুকুরে মারামারি হবে এবং কুকুর মানুষদেরও মারতে যাবে। এতে সেখানকার মানুষও বিরক্ত হবে। ওরাও না খেয়ে মারা যাবে। ফলে এদের সরিয়ে নেওয়া বা মেরে ফেলা একই কথা। তেমনি কুকুর না থাকলে আমরা ঠিকই বুঝতে পারব কী কী রোগ আমাদের পোহাতে হয়? ইতিহাসে দেখা যায়, একবার নিউইয়র্কে যখন কুকুরদের ধরে শেল্টার হোমে পাঠানো হলো তখন সেখানে ইঁদুরের উৎপাত বেড়ে গেল।

খাবারের জন্য পশু সংহার করতেই হয়। হরিণ মেরে খাওয়ার জন্য বাঘকে যেমন নিষ্ঠুর বলা যায় না, তেমনই খাদ্য, আত্মরক্ষা বা সম্পদ রক্ষার প্রয়োজনে বাঘ-হাতি-শুয়োরদের মারলে মানুষকেও নিষ্ঠুর বলা যায় না। স্বীকার করতেই হবে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বেওয়ারিশ কুকুর নিধন কর্মসূচি রয়েছে। যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশেও কুকুর নিধন হয়েছে। পাকিস্তান আমল থেকে শুরু করে ২০১০ সাল পর্যন্ত দেশে কুকুর নিধন হয়েছে। কিন্তু কুকুর কখনো বিলুপ্ত হয়নি কেন? এর বড় কারণ হচ্ছে অপসারণের জন্য কুকুরগুলো নিয়ে যাওয়ার সময় কিছু কুকুর পালিয়ে যায়। ওই কুকুরগুলো যদি পরের মৌসুমে বাচ্চা দেয়, তখন কুকুরের শূন্যস্থান পূরণ হয়ে যায়। ফলাফল যেই সেই। ঢাকা শহরে কুকুরের উৎপাত তথৈবচ বা আগের মতোই রয়ে যায়।

উন্নত দেশগুলোতে জঙ্গল থেকে একটা, বাঘ, মোরগ, শিয়াল বা বন মোরগ বেরুলেও নির্ভয়ে পথ পাড়ি দেওয়ার সুবিধা দিতে চলন্ত গাড়ির সারি পর্যন্ত থেমে যায়। বেওয়ারিশ কুকুর নেই বলে ওসব দেশে জলাতঙ্কের সমস্যাও নেই। বাংলাদেশে বাড়ছে জলাতঙ্কের ঝুঁকি। পরিসংখ্যান মতে, বাংলাদেশে প্রতিবছর দু’হাজারের বেশি মানুষ জলাতঙ্ক রোগে মারা যায়। চাট্টিখানি কথা? অন্য অনেক রোগের সঙ্গে তুলনা করলে বাংলাদেশে জলাতঙ্ক রোগে মারা যাওয়ার হার নিয়ে অবশ্যই উদ্বেগের কারণ রয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারতের পরে বাংলাদেশেই জলাতঙ্ক রোগে মৃত্যুর হার বেশি। তাই ২০২২ সালের মধ্যে কুকুরের জলাতঙ্ক নির্মূল করতে সরকার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

জানা যায়, জলাতঙ্ক রোগ মোকাবিলার জন্য সারা দেশের ৭০ ভাগের ওপরে কুকুরকে এক রাউন্ড জলাতঙ্ক নির্মূল টিকা দেওয়া হয়েছে। খুব ভালো কথা। দরকারে আরও দেওয়া যেতে পারে। তবুও কুকুর মেরে অপসারণ কোনো সমাধান নয়। এজন্য দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কুকুর বন্ধ্যাত্বকরণ প্রকল্প কার্যকর করতে পারে। নগর প্রতিবেশ ব্যবস্থার স্বার্থে সব সিটিতে কুকুরের বন্ধ্যাত্বকরণ ও জলাতঙ্কের টিকাদান কর্মসূচিতেই জোর দিতে হবে। নিষ্ঠুরভাবে কুকুর মেরে ফেলা আর নয়।

প্রযুক্তিকে আয়ত্তে আনার পর মানুষের হাতে তো যন্ত্রণাবিহীন পদ্ধতিতে হত্যা করার উপায়ও রয়েছে। তাহলে সেটা কাজে না লাগিয়ে এখনো আমরা কেন আদিম ও বর্বর পদ্ধতিতেই কুকুর মারি? উত্তর একটাই। নিষ্ঠুরতাকে আমরা স্বাভাবিক মনে করি। এক্ষেত্রে শিক্ষিত-অশিক্ষিত, ধনী-দরিদ্র কোনো তফাত নেই। প্রতিদিনের এই নিরবচ্ছিন্ন নিষ্ঠুরতায় চুপ করে থেকে একটা ঘটনায় হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে তাই আসলে কোনো লাভ নেই।

কারণ প্রশ্নটা এখানে নিপীড়ন নিয়ে। মানে, প্রাণীকে কষ্ট দেওয়া নিয়ে। কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রবিশিষ্ট সমস্ত প্রাণীরই কম-বেশি যন্ত্রণার অনুভূতি রয়েছে। উন্নততর প্রাণী হিসেবে একমাত্র মানুষের অন্যান্য প্রাণীর যন্ত্রণাকে অনুভব করার ক্ষমতা ও দায়িত্ব রয়েছে। যাকে সহমর্মিতা বলে। এভাবে ভাবলে, নিষ্ঠুরতাও একটা বৈশিষ্ট্য। যা মানুষকে পশুর থেকে আলাদা করে। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ‘যেকোনো প্রাণীকে আঘাত বা হত্যা করলে মানুষের অবচেতনে বিভিন্ন মাত্রার অপরাধবোধ জন্ম নেয়। মশা-মাছির মতো ছোট্ট প্রাণীকে মারলে এই অনুভূতি সবচেয়ে কম, মানুষের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি।’

কিন্তু আশপাশে সারাক্ষণই দেখা যায়, কারণে-অকারণে মানুষ মানুষকে যন্ত্রণা দিচ্ছে, মেরে ফেলছে। তাই মনে হয় ওটুকু অপরাধবোধ বুঝি জয় করা হয়ে গিয়েছে। বেঁচে থাকার অঙ্গ হিসেবে রোজ আমরা নৃশংসতার পাঠ নিচ্ছি। চলচ্চিত্রের নায়করা পুলিশ সেজে হেফাজতে থাকা সন্দেহভাজনকে নির্মম প্রহার করে। প্রতিশোধ নিতে নায়ক একের পর এক খুন করে। আমরা উপভোগ করি। বাস্তবেও সারা দেশে এমন ঘটনা ঘটেই চলেছে। আমরাও চুপচাপ দেখেই চলেছি। কিন্তু অনেকেই জানি না, জিজ্ঞাসাবাদের সময় অভিযুক্তের গায়ে হাত তোলার অধিকার পুলিশের নেই। অথচ দিব্যি মেজর সিনহাকে পুলিশের গুলিতে নিহত হতে হলো। আবার সেই অপরাধ ঢাকতে চেষ্টাও করে যান এসপি মাসুদ। তাই বলা যায়, নিষ্ঠুরতা দিনে দিনে আমাদের কাছে যেন এক রকম স্বাভাবিক, অপরিহার্য, বৈধ, বীরত্বসূচক এমনকি উপভোগ্যও হয়ে উঠেছে। তারপরে বোধহয় এ নিয়ে আর কথা চলে না।

জি না। তবুও কথা চলবে। কথা চালিয়ে যাওয়া কর্তব্য। যাবতীয় নিষ্ঠুরতাকে পাশবালিশ বানিয়ে ফেলেছি বলেই তাই নিয়ে কথা বলাও যাবে না? এ হতে পারে না। জলাতঙ্ক রোধে শহর থেকে কুকুরগুলো না হয় তাড়ানো গেল। কিন্তু মানুষরূপী কুকুরের কামড় জলাতঙ্কের চেয়েও ভয়াবহ। দুর্নীতি করে সরকারের সকল সফলতা, অর্জনকে ¤্রয়িমাণ করে দিচ্ছে মানুষরূপী সেই কুকুরগুলো? সেই দুর্বৃত্তরা, যারা ঘোড়াঘাটের ইউএনও ওয়াহিদা খানমের মাথার খুলি ভেঙে ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়? তারপর সহজ করে চুরির মামলা করে।

হবিগঞ্জে থানায় আটকে রেখে টাকা আদায় করে ওসি। টাঙ্গাইলের মধুপুরের আদিবাসী বাসন্তী রেমার পুরো কলাবাগান নিমেষে কুচলে দেয় তথাকথিত দুর্নীতিবাজ রাষ্ট্রসেবক। নানান নামে বিভিন্ন সেক্টরে এমন অহরহ মানুষরূপী কুকুর বিরাজমান। এদের তাড়াবেন কবে? কুকুর যদি শহরে ঘুরে বেড়িয়ে, আর প্রস্রাব করে শহর নোংরা করে। যারা একের পর এক এমন পৈশাচিকতা চালিয়ে দেশকে নোংরা করে দিচ্ছে তার বেলা? দুর্নীতিপরায়ণ, অসৎ ও ধর্ষক লোকগুলো কুকুরের চেয়েও যে দেশের বেশি ক্ষতি করছে তা সহজেই অনুমেয়। এই মানুষরূপী কুকুরগুলোর কী হবে? কুকুর সরানোর আগে তাই দেশ থেকে, শহর থেকে মানুষরূপী যন্ত্রণাদায়ক নোংরা-অসৎ কুকুরগুলো এখনই সরান।

নীতি-নৈতিকতা আমাদের শেখায় অসৎ, ঘুষখোর, চরিত্রহীন, অত্যাচারী মানুষের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা উচিত। রবীন্দ্রনাথ ন্যায়দ- কবিতায় আমাদের শিখিয়েছেন, ‘অন্যায় যে করে, আর অন্যায় যে সহে, তব ঘৃণা তারে যেন তৃণসম দহে।’ এই হিতোপদেশ মেনে, আমাদের উচিত বিভিন্ন সেক্টরের দুর্নীতিবাজ মানুষদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করা। নতুন করে সৎ যোগ্য তরুণদের নিয়োগ করা। তাতে মানুষ বাঁচবে, প্রতিষ্ঠান বাঁচবে, দেশ বাঁচবে। যার সোনালি সুফল পাবে আগামী প্রজন্ম।

শেখ আনোয়ার : বিজ্ঞান লেখক ও গবেষক
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
www.facebook.com/xposu

 
Electronic Paper