শুক্রবার, ২২ আগস্ট ২০২৫,
৭ ভাদ্র ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

শুক্রবার, ২২ আগস্ট ২০২৫
শিরোনাম: ফের পিএস বিতর্কে আসিফ      ভাগ পেতেন ডিসি-এসপিরাও      রাজস্ব খাতের নেতৃত্ব দেবেন অভিজ্ঞরাই      ইতা‌লির প্রধানমন্ত্রী মেলোনির ঢাকা সফর বাতিল      সাগর-রুনির পরিবারকে বুঝিয়ে দেয়া হলো রাজউকের প্লট      মহানবী (সা.) এর সিরাতই তরুণদের চরিত্র গঠনের রোল মডেল: ধর্ম উপদেষ্টা       নারীর জন্য নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি টেকসই উন্নয়ন অর্জনের জন্য জরুরি      
প্রিয় ক্যাম্পাস
বেরোবিতে শহিদ আবু সাঈদ বইমেলার দায়িত্বে আওয়ামীপন্থী শিক্ষক
বেরোবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৮:১৬ পিএম
ড. আপেল মাহমুদ

ড. আপেল মাহমুদ

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) প্রথমবাবের মতো প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া শহিদ আবু সাঈদ বইমেলা উদযাপনের জন্য গঠিত কমিটি নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীলদলের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের অধ্যাপক ড. আপেল মাহমুদকে কমিটিতে রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১০তম সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রতি বছর শহিদ আবু সাঈদ বইমেলার আয়োজন করবে। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৭ দিনব্যাপী বইমেলা হওয়ার কথা রয়েছে। বইমেলার আয়োজনের জন্য গত ৯ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে ছাত্রকল্যাণ ও পরামর্শের উপদেষ্টা ড. ইলিয়াস প্রামাণিককে আহ্বায়ক করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে কট্টোর আওয়ামীপন্থী শিক্ষক হিসেবে পরিচিত ড. আপেল মাহমুদ ছাত্র জীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ক্যাম্পাসে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েই ২০১৪ সালে নীলদল প্রতিষ্ঠা করে নিজেই সভাপতি হন। এরপর হয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক, বর্তমানে রয়েছেন কার্যকরী সদস্য পদে। এ ছাড়াও নীল দলের প্যানলে থেকে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে ২০২৩ সালে জয়লাভও করেন তিনি।

আবু সাইদ হত্যা মামলার অন্যতম আসামী গনিত বিভাগের শিক্ষক মশিউর রহমানের নিয়ন্ত্রিত বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি ছিলেন এই শিক্ষক।

আবু সাঈদ বইমেলার কমিটিতে সদস্য হিসেবে কট্টোর এই আওয়ামীপন্থী শিক্ষক পরিচিত ড. আপেল মাহমুদকে রাখায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে সমালোচনার ঝড়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত তিন মাসেই এই শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয়ের যানবাহন ক্রয় কমিটি, ডরমেটরি বরাদ্দ কমিটি,  বাসা বরাদ্দ নীতমিালা রিভিউ কমটি, ভর্তি পরিচালনা কমিটির, ক্যালেন্ডর মুদ্রণ কমিটি, বিশ্ববিদ্যালয়রে বাৎসরকি ছুটি নির্ধারণ কমিটিসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে রাখা হয়েছে।

একাধিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা জানান, উপাচার্যের দফতরে কোনো জরুরি প্রয়োজনে যখনই গিয়েছেন তখনই ড. আপেল মাহমুদকে উপাচার্যের দফতরে বসে থাকতে দেখেছেন।

একধিক বিএনপিপন্থী শিক্ষক ও কর্মকর্তা জানান, এ ধরনের উগ্র আওয়ামীপন্থী ফ্যাসিস্ট শিক্ষকদের ভিসির দপ্তরে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকায় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন তারা।

ছাত্রদলের বেরোবি শাখার আহ্বায়ক আল আমিন বলেন, আমরা জেনেছি বইমেলা প্রশাসন থেকে হচ্ছে এবং সেটির নেতৃত্ব দিচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। আমরা হতাশ হই, তারা সেখানের নেতৃত্বে থাকা স্বত্বেও কীভাবে একজন আওয়ামীপন্থী শিক্ষক সেই কমিটিতে থাকে। এটা আবু সাঈদের রক্তের সাথে বেইমানি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এভাবে আওয়ামী পন্থী শিক্ষকদের পূর্ণবাসন দেওয়া শুরু করলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আস্থা হারাবে। প্রশাসনের এমন কাজ দেখে আমরা খুবই হতাশ।

জুলাই আন্দোলনে সামনের সারিতে নেতৃত্ব দেওয়া গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী  শাহরিয়ার সোহাগ বলেন, ক্যাম্পাসে বইমেলার ব্যাপারে আমি জানতাম না। পরে শুনেছি বইমেলা হবে। কিন্তু বইমেলার কমিটিতে একজন আওয়ামীপন্থী শিক্ষককে রাখায়। তীব্র নিন্দা জানাই। অবিলম্বে তাকে প্রত্যাহার করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সবার মতামতের ভিত্তিতে নতুন করে কমিটি দিতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেরোবি প্রতিনিধি আরমান বলেন, আমরা একটা খসড়া করে শুরুর দিকে একটা লিস্ট দিয়েছিলাম। সেখানে আমরা কোনো ক্রস চেক করিনি। এখন যদি উনি আগে দল করে থাকে তাহলে আমরা তাকে বাদ দেওয়ার জন্য প্রশাসনে বলব।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনপিপন্থি শিক্ষক ও প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান বলেন, নতুন উপাচার্য যোগদানের পূর্বে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতি বিভাগের তাদের পছন্দের তিনজন করে শিক্ষকের নামের তালিকা নেওয়া হয়ে ছিল। কাদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চালানো যায় সে উদ্দেশ্য নেওয়া এ নামগুলো নেওয়া হয়। যেহেতু তার নাম শিক্ষার্থীরা দিয়েছে তাই এখানে আর আমাদের কিছু বলার নেই।

নীল দলে এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদে থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমাকে তো দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আমি তো চেয়ে নিইনি। বিগত প্রশাসনে আমার পদোন্নতি আটকে রাখা হয়েছিল। আমার পদোন্নতি হওয়াতে তারা আবার আমার পেছনে লেগেছে। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সময়ে। তাই দুই-তিনজন ব্যতীত বাকি সব শিক্ষকই আওয়ামীপন্থী।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড.মো. শওকাত আলী গণ মাধ্যমকে জানান, তার নাম (আপেল মাহমুদ) তার বিভাগের শিক্ষার্থীরাই দিয়েছে। এখন তো আওয়ামী লীগ, বিএনপি-জামায়াত কোনো দলই নাই। ক্যাম্পাসে তো রাজনীতি নিষিদ্ধ।  আর আওয়ামীপন্থী ছাড়া ক্যাম্পাসে কতজন মানুষ পাবেন! বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার পর থেকে ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ সরকার ছিল। এখন আমাকে তো সবাইকে নিয়েই কাজ করতে হবে।

পদধারী এমন বিতর্কিত শিক্ষককেই কেন বারবার কমিটিতে রাখা হয় জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, আপেল মাহমুদ কর্মঠ, কাজের মানুষ। কাজের মানুষ ১০ না ২০ টা কমিটিতেও রাখা যায়। যারা কাজ পায় না, সুবিধা পায় না। তারা এখন এগুলো নিয়ে কথা বলছে।

কেকে/এএম

মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

ফের পিএস বিতর্কে আসিফ
ভাগ পেতেন ডিসি-এসপিরাও
রাজস্ব খাতের নেতৃত্ব দেবেন অভিজ্ঞরাই
কুমিল্লায় চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গণপিটুনিতে যুবক নিহত
খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে শ্বশুরের বিরুদ্ধে পুত্রবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ

সর্বাধিক পঠিত

মদনে স্ত্রীর নির্যাতন মামলায় সাবেক কমিশনার গ্রেফতার
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কৃষি সংস্কার ও খাদ্য নিরাপত্তার অভিযাত্রা
জয়পুরহাটে বজ্রপাতে আলু ব্যবসায়ীর মৃত্যু
‘আমি সিক্স পার্সেন্টে কাজ করেছি’, উপদেষ্টা আসিফের প্রেস সেক্রেটারির অডিও ফাঁস
জামালপুরে পূবালী ব্যাংকের সহযোগিতায় আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন

প্রিয় ক্যাম্পাস- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close