বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫,
২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫
শিরোনাম: আন্দোলনরত শিক্ষকরা কাজে না ফিরলে আইনি ব্যবস্থা      রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ইসিকে তফসিল দেওয়ার আহ্বান নাহিদের      খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে প্রধান উপদেষ্টা      অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার রোধে জিরো টলারেন্স নিশ্চিত করতে হবে : উপদেষ্টা ফরিদা      প্রবাসীরা ৬০ দিনের বেশি দেশে থাকলে ফোন রেজিস্ট্রেশন করতে হবে      এভারকেয়ারের পাশে সেনা-বিমান বাহিনীর মহড়ায় বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ      শীত নিয়ে দুঃসংবাদ দিলো আবহাওয়া অধিদপ্তর      
বেগম রোকেয়া
তরুণ উদ্যোক্তা রিতির সাফল্য
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১:২২ পিএম আপডেট: ০২.১২.২০২৫ ১:২৪ পিএম
হাবিবা আক্তার রিতি

হাবিবা আক্তার রিতি

হাবিবা আক্তার রিতি বয়সে একেবারে তরুণ। বিয়ের পরই পাস করেছেন এইচএসসি। বয়সে তরুণ একজন নারীর জন্য সংসার সামলানো যেখানে অনেক কঠিন। এমন পরিস্থিতির মধ্যে উদ্যোক্তা হওয়া রিতির জন্য ছিল আরো অনেক কঠিন এবং দুঃস্বপ্নের মতো। অদম্য ইচ্ছা শক্তি ও কঠোর পরিশ্রম মানুষের সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি। রিতি যার অন্যান্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন।

২০২২ সালে শখের বশে একটি অ্যাকুরিয়াম ও ৫টি রঙিন অ্যাকুরিয়াম ফিস কিনে বাসায় লালন-পালন শুরু করে। এরপর অ্যাকুরিয়ামের ওই মাছগুলো বাচ্চা দিলে বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন করার উদ্যোগ নেয় রিতি। মাত্র আড়াই বছরের ব্যবধানে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে আত্ম প্রকাশ করেন তিনি। রঙিন অ্যাকুরিয়াম ফিস ও কোয়েল পাখির বাচ্চা উৎপাদন করে রিতির মাসিক আয় এখন দেড় লাখ টাকা। 

হাবিবা আক্তার রিতি খুলনার পাইকগাছা উপজেলার গোপালপুর গ্রামের হাফিজুর রহমানের মেয়ে। স্বামী মেহেদী হাসান ঢাকার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। স্বামী মেহেদী রিতির সকল কাজে সহযোগিতা করেন। রিতি প্রথমেই তার বসতবাড়ির সঙ্গেই একটি প্রিন্সেস অ্যাকুরিয়াম নামে একটি অ্যাকুরিয়াম এর দোকান দেয়। এর সঙ্গে বসতবাড়ির পাশে প্রায় এক বিঘা জমির উপর রঙিন অ্যাকুরিয়াম ফিস উৎপাদন করার জন্য একটি উন্নত মানের হ্যাচারি তৈরি করেন।

হ্যাচারির মধ্যে বড় বড় সাইজের ১৩টি ট্যাংকি (হাউজ) রয়েছে। প্রতিটি ট্যাংকিতে আলাদা আলাদা মাছের ব্রিডিং করানো হয়। মা মাছ এবং বাচ্চা মাছগুলো যাতে সুস্থ সবল থাকে এজন্য হ্যাচারিতে পানি পরিবর্তন এবং অক্সিজেনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। রিতি নিজেই প্রতিদিন মাছের যত্ন নেয় এবং খাবার দেয়। বর্তমানে হ্যাচারিতে ফেন্সি, গাপ্পি, মলি জেব্রা, ফাইটার, এঞ্জেল, টেটরা, গোল্ড ফিস, শর্টটেল, শ্রীম্প ও লবেষ্টার সহ বিভিন্ন প্রজাতির রঙিন অ্যাকুরিয়াম ফিস উৎপাদন হচ্ছে। উৎপাদিত রঙিন ফিস খামারে নিতে আসা ক্রেতাদের কাছে যেমন বিক্রি করে, তেমনি অনলাইনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। 

অ্যাকুরিয়াম এবং রঙিন অ্যাকুরিয়াম ফিস বিক্রি থেকে মাসিক আয় করছে এক লাখ টাকা। এর পাশাপাশি উৎপাদন করছেন কোয়েল পাখির বাচ্চা। এলাকায় প্রচুর চাহিদা রয়েছে কোয়েল পাখির বাচ্চা। কিন্তু বাচ্চা উৎপাদনকারী তেমন কেউ না থাকায় রিতির খামারে উৎপাদিত বাচ্চা এলাকার চাহিদা পূরণে একমাত্র ভরসা। কোয়েল পাখির বাচ্চা উৎপাদন করে মাসিক আয় করছে ৫০ হাজার টাকা।

রিতির রঙিন অ্যাকুরিয়াম ফিস ও কোয়েল পাখির বাচ্চা উৎপাদন কার্যক্রম এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছে। প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ তার এ কার্যক্রম দেখতে আসে। এ কাজ দেখে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য শিক্ষিত বেকার তরুণদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। পরিদর্শনে আসা শিক্ষার্থী মারিয়া আক্তার তাজমিন তার আগ্রহের কথা জানান। 

লেখাপড়া শেষ করে চাকরির পিছনে না ছুটে এ ধরনের কাজ করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পরিকল্পনার কথা বলেন আরেক শিক্ষার্থী তাহমিনা আক্তার। রিতি এখন আর সাধারণ কোন নারী নয়, সে একজন সফল তরুণ উদ্দোক্তা। তরুণদের জন্য সে মডেল। 

আশা করি, তাকে অনুসরণ করে এলাকার তরুণরা এ ধরনের কাজে এগিয়ে আসবে বলে জানান উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রেশমা আক্তার। নতুন সংসার জীবনে রিতির জন্য এ কাজ খুব সহজ ছিল না। তবে অদম্য ইচ্ছা শক্তি এবং কঠোর পরিশ্রম রিতিকে তার সাফল্য এনে দিয়েছে। তার সাফল্যে স্বামী হিসেবে আমি আজ গর্বিত এমনটাই জানান রিতির স্বামী মেহেদী হাসান। 

হাবিবা আক্তার রিতি বলেন উদ্দোক্তা হওয়ার প্রবল ইচ্ছা ছিল। তবে শুরুটা হয়েছে শখ থেকেই। শখের বশে একটি অ্যাকুরিয়াম এবং ৫টি রঙিন ফিস দিয়ে শুরু করেছিলাম। মাছগুলো বাচ্চা দেওয়ার পর নিজের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়।

এরপর বাণিজ্যিকভাবে পরিকল্পনা নিয়ে বড় পরিসরে শুরু করি। এলাকায় প্রচুর চাহিদা থাকায় রঙিন ফিসের জন্য হ্যাচারি নির্মাণ করি এবং কোয়েল পাখির বাচ্চা উৎপাদনের জন্য একটি মেশিন ক্রয় করি। সরাসরি খামার এবং অনলাইনের মাধ্যমে উৎপাদিত রঙিন ফিস সারা দেশে সরবরাহ করা হয়। 

বর্তমানে রঙিন অ্যাকুরিয়াম ফিস ও কোয়েল পাখির বাচ্চা উৎপাদন করে প্রতিমাসে দেড় লাখ টাকা আয় হচ্ছে। এর মাধ্যমে পরিবার নিয়ে সুখেই আছেন এবং আগামীতে এ কাজের পরিধি বাড়ানোসহ নতুন নতুন উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তরুণ উদ্যোক্তা রিতি।

কেকে/এমএ

আরও সংবাদ   বিষয়:  তরুণ উদ্যোক্তা   হাবিবা আক্তার রিতি   সাফল্য  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

হামজা-শমিতদের ম্যাচ থেকে ৪ কোটির বেশি আয় বাফুফের
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশে যোগ দিলেন ভারতের বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার
চিরিরবন্দরে বাস–ভ্যান সংঘর্ষে নিহত ২
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ৩
দশমিনায় মৎস্য মেরিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

সর্বাধিক পঠিত

বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় বান্দরবানে প্রার্থনা সভা
সাভারে টিভি সাংবাদিকদের সংগঠন টিআরসি'র আত্মপ্রকাশ
ফটিকছড়িতে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান
চিরিরবন্দরে বাস–ভ্যান সংঘর্ষে নিহত ২
বিএনপি নেতার পুকুরে বিষপ্রয়োগ
সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close