অ্যান্টল্যান্ড এটি পিঁপড়েদের রাজ্য। পিঁপড়ে রানি মোনালিসার নেতৃত্বে রাজ্যটি চলে। মোনালিসা অত্যন্ত উদার মনের পিঁপড়ে। সে নিজের রাজ্যেপর সব প্রজাদের অত্যন্ত ভালোবাসে। রাজকীয় কাজে সে অনেক পারদর্শী। তার মেধা ও বুদ্ধির সুনাম বিশ্বব্যাপী। মোনালিসা ন্যায়পরায়ণতার জন্য নোবেল পুরস্কারও পেয়েছে। মিস্টার বিস্ট, যে অ্যান্টল্যান্ডের নবনির্বাচিত পিঁপড়ে অর্থমন্ত্রী। মিস্টার হেনরি সাধারণ পিঁপড়ে। সে মিষ্টান্ন বিক্রি করে।
মিস্টার বিস্ট প্রমোশন হওয়ায় মিষ্টির খোঁজে বাজারে এলো। বাজারে ঢুকতেই পিঁপড়ে হেনরির দোকান। হেনরি এইমাত্র টাটকা রসগোল্লা, লাড্ডু আর ছানার মিষ্টি বানিয়ে এনেছে। যার মিষ্টি ঘ্রাণ বাজারজুড়ে ম-ম করছে। ঘ্রাণ পেয়ে মিস্টার বিস্ট হেনরির দোকানে এসেছে। মিস্টার বিস্ট বলল, আরে বাহ! দারুন তো! কি সুস্বাদু ঘ্রাণ।
নিশ্চয়ই টাটকা তাই না? হেনরি বলল, এইমাত্র বানিয়ে আনলাম হুজুর। হেনরি একটি রসগোল্লা মিস্টার বিস্ট এর হাতে তুলে দিল। মিস্টার বিস্ট তা খেয়ে অনেক মজা পেল। হেনরিকে বাহ বাহ জানালো। সে তার দোকান থেকে তিন হাঁড়ি রসগোল্লা ক্রয় করল। মিস্টার বিস্ট তিন হাঁড়ি রসগোল্লা নিয়ে রাজ দরবারে হাজির হল। রানি মোনালিসা রাজসভায় উপস্থিত হলেন। ইতোমধ্যেই রাজ্যের মন্ত্রিপরিষদ নিজ নিজ আসন গ্রহণ করল।
বহির্বিশ্ব থেকে আসা অতিথিরাও রাজসভায় ঢুকলেন। রাজকীয় নিয়ম অনুসারে, আগে পিঁপড়ে রানি মোনালিসাকে রসগোল্লা দেওয়া হলো। পিঁপড়ে রানি মিষ্টান্ন দেখে কোনোকিছু না বলেই মুখে দিল একটি রসগোল্লা। দেওয়া মাত্রই ওয়াক থু থু করে মুখ থেকে ফেলে দিলেন। এ ভয়াবহ দৃশ্য দেখে মিস্টার বিস্ট অনেক ভয় পেল। পিঁপড়ে রানি তাকে ডাকল। বলল, এই পচা-বাসি রসগোল্লা আমাকে খাওয়ালে? তখন মিস্টার বিস্ট ভয়ে ভয়ে বলল, আমাকে ঠকানো হয়েছে। জ্বি! আমাকে ঠকানো হয়েছে। সে পিঁপড়ে রানির কাছে মিষ্টি বিক্রেতা হেনরির নামে নালিশ করলো। রাজ্যের সৈন্যরা গিয়ে হেনরিকে গ্রেফতার করে আনল।
হেনরিকে দেখা মাত্রই মিস্টার বিস্ট বলল, এই তো ঠকবাজ, যে আমাকে বাশি রসগোল্লা দিয়েছে। তখন পিঁপড়ে রানি মোনালিসা বলল, থামুন সবাই! প্রথমে মিস্টার বিস্টকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার অভিযোগ কি? তখন মিস্টার বিস্ট বলল, মহারানি! আমাকে এই ঠকবাজ বাশি রসগোল্লা দিয়ে ঠকিয়েছে। আমি আমার টাকা ফেরত চাই। অতঃপর হেনরিকে বলল, মিস্টার বিস্ট যা বলল তা কি সত্য? তখন হেনরি বলল, না। তিনি আমার নামে মিথ্যা নালিশ দিয়েছেন। আমি খুব যত্নের সহিত মিষ্টান্ন তৈরি করে থাকি। আমার মিষ্টান্নের সুনাম রাজ্যজুড়ে রয়েছে। মিস্টার বিস্ট হয়তো যথাযথভাবে সংরক্ষণ করেননি। তাই রসগোল্লা বাসি হয়ে গেছে।
বিক্রয়ের সময় আমি একটি রসগোল্লা মিস্টার বিস্টকে ফ্রিতে দিয়েছিলাম। তিনি ওটা খেয়ে আমাকে বাহ বাহ জানিয়েছিলেন। তার বক্তব্য শুনে পিঁপড়ে রান মিস্টার বিস্ট কে জিজ্ঞেস করলেন, এই রসগোল্লা কখন ক্রয় করেছ? তখন তিনি বললেন, গতকাল। তিনি আবার মিস্টার বিস্টকে বললেন, হেনরি যেগুলো বলল, তা কি সত্য? তখন মিস্টার বিস্ট নিচু হয়ে উত্তর দিলেন, জ্বি মহারানি। রানি মোনালিসা বুঝতে পারলেন, কে আসল অপরাধী।
মিস্টার বিস্টকে বললেন, তুমি সবার সামনে দোষ স্বীকার করেছ। হেনরিকে অযথা কষ্ট দেওয়ার অপরাধে তার কাছে ক্ষমা চাইবে। তখন মিস্টার বিস্ট হেনরির কাছে ক্ষমা চাইল। মিস্টার হেনরি মিস্টার বিস্টকে বুকে টেনে নিলো হুজুর বলে। মোনালিসার এমন বিচারকার্য দেখে সবাই মুগ্ধ হলো। বহির্বিশ্ব থেকে আসা অতিথিরা পিঁপড়ে রানি মোনালিসাকে অভিনন্দন জানাল।
কেকে/এমএ