বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫,
১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
শিরোনাম: প্লট দুর্নীতি : জয়-পুতুলের পাঁচ বছর কারাদণ্ড      শেখ হাসিনার ২১ বছরের কারাদণ্ড      শেখ হাসিনা-জয়-পুতুলের মামলার রায় আজ, আদালতে বিজিবি মোতায়েন      এবার একযোগে ১৫৮ ইউএনওকে বদলি      হংকংয়ে আবাসিক ভবনে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৪৪, নিখোঁজ ২৭৯      শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ পর্যালোচনা করা হচ্ছে      ৫০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ      
ইচ্ছেডানা
ধানের ক্ষেতে কাকতাড়ুয়া
আব্দুস সাত্তার সুমন
প্রকাশ: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ১২:৪৫ পিএম
ছবি : খোলা কাগজ

ছবি : খোলা কাগজ

এক ছোট্ট খুকু, নাম তার আরিশা। ঢাকায় বড় হয়েছে, ইটের ঘরবাড়ি, কংক্রিটের ভেতরেই তার বেড়ে ওঠা। হেমন্তের একদিন হঠাৎ স্কুলে ছুটি পড়তেই সে দৌড়ে এসে মাকে বলল, মা! আমি গ্রামে যাব দাদুর বাড়ি!

অনেক দিন পর সে গ্রামে গেল। বিকালের হালকা হাওয়ায় যখন লঞ্চ থামল ছোট্ট নদীর ঘাটে, তখন মনে হলো পৃথিবীর সব রং যেন এখানে এসে লুকিয়ে আছে। দূরে সোনালি রঙের ঢেউ দিচ্ছে ধানের ক্ষেত, আকাশের নিচে যেন সোনার সমুদ্র!

আরিশা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল।
মা! এগুলো কি সোনা?
মা হেসে বললেন, না রে মা, ওগুলো ধান। পাকলে সোনালি হয়ে যায়।
আরিশা ভাবল, তাহলে সবুজ ধানও বড় হলে সোনালি হয়ে যায়!
তার ছোট্ট মনে যেন নতুন একটা জানালা খুলে গেল। প্রকৃতি কী সুন্দরভাবে বদলে যায়!
সন্ধ্যায় যখন দাদুর সঙ্গে হাঁটতে বেরোল, তখন খেয়াল করল মাঠের মাঝখানে একটা অদ্ভুত জিনিস দাঁড়িয়ে আছে, পুরোনো কাপড়ে জড়ানো বাঁশের কাঠামো, মাথায় টিনের টুকরো, হাতে পুরোনো গামছা।
দাদু, ওটা কে?

দাদু হেসে বললেন, ওটা কাকতাড়ুয়া।
আরিশা বিস্মিত- মানুষ নয়, অথচ দাঁড়িয়ে আছে একা মাঠে!

পরদিন সকালে সে দৌড়ে গেল কাকতাড়ুয়ার কাছে। চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইল কিছুক্ষণ। মনে হলো কাকতাড়ুয়া যেন তাকিয়েই আছে তার দিকে। হালকা বাতাসে তার গামছা দুলছে, যেন তাকে ইশারা করছে।
আরিশা বলল, তুমি কি ভয় দেখাও কাকদের?
হঠাৎ একটা কাক উপরে উড়ে গিয়ে ‘কা-কা’ করে ডাকতে লাগল, যেন বলছে, আমরা বুঝে গেছি, তুমি আসল মানুষ নও!

আরিশা মুগ্ধ হয়ে ভাবল এই কাকতাড়ুয়া আসলে কত পরিশ্রম করে! সারাদিন রোদে-বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে থাকে, যাতে ধানগুলো নষ্ট না হয়। তার ছোট্ট হৃদয়ে কেমন যেন শ্রদ্ধা জন্ম নিল এই নিঃশব্দ প্রহরীর প্রতি।

বিকালে সে ঘরে ফিরে নিজের আঁকার খাতায় কাকতাড়ুয়াটির ছবি আঁকল, নিচে লিখল, যে নিজে ফল খায় না, সে রক্ষা করে অন্যের ফসল।

দাদু যখন সেই লেখাটা পড়লেন, চোখে জল এসে গেল। বললেন, এই কথাটাই মনে রাখিস রে দাদুমনি। জীবনে যারা নিঃস্বার্থভাবে অন্যের ভালো চায়, তারাই আসল মানুষ।

সেদিন রাতে হেমন্তের বাতাসে ধানগাছের দোলার সঙ্গে দুলতে লাগল কাকতাড়ুয়ার গামছা, মনে হলো সে যেন হাসছে, হাসছে এক ছোট্ট শহুরে খুকুর শেখা ভালোবাসার পাঠে।

কেকে/এমএ
আরও সংবাদ   বিষয়:  ধানের ক্ষেত   কাকতাড়ুয়া   আব্দুস সাত্তার সুমন   
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

দ্বিতীয় বারের মতো ভূমিকম্পে কাঁপল ইন্দোনেশিয়া
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চীন-মার্কিন দ্বৈরথ
বয়ান শিল্পাঙ্গনের তৃতীয় নাট্য কর্মশালা ৩০ নভেম্বর থেকে
অস্থিতিশীল বিদ্যুৎ খাত : উত্তরণের উপায়
প্লট দুর্নীতি : জয়-পুতুলের পাঁচ বছর কারাদণ্ড

সর্বাধিক পঠিত

চট্টগ্রামে কবির হোসেন সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে ১৮ কোটি টাকার ঋণখেলাপির মামলা
বেনাপোলে বিএনপির উঠান বৈঠক, উন্নয়ন ভাবনা তুলে ধরলেন তৃপ্তি
ধামরাইয়ে সাত অবৈধ ইটভাটায় অভিযান, ১৫ লাখ জরিমানা
বিএনপি যে কথা দেয় সে কথা রাখে : নাসিরুল ইসলাম
বুধবারের আলোচিত ছয় সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close