হংকংয়ে উত্তরাঞ্চলীয় তাই পোর একটি আবাসিক কমপ্লেক্সের বহুতল কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে বড় ধরনের আগুন লেগে অন্তত ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় আরো ৪৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এছাড়াও ২৭৯ জনের নিখোঁজ রয়েছেন এবং হাসপাতালে ৪৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৫১ মিনিটে নগরীর উত্তরাংশের তা পো এলাকার ওয়াং ফুক কোর্ট নামের ওই আবাসিক কমপ্লেক্সে আগুন লাগে।
ভবনগুলোর ভেতরে এখনো অনেকে আটকে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে দমকল কর্তৃপক্ষ।
তবে অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আসছে বলে জানিয়েছেন নির্বাহী প্রধান জন লি। তিনটি ভবনে আগুনের শিখা দেখা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।
যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে একজন দমকল কর্মীও আছেন বলে নগরীটির দমকল বিভাগ বিবিসিকে জানিয়েছে, আগুন নেভাতে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৮ শতাধিক কর্মী। ৩১ তলা ভবনগুলোতে ছড়িয়ে পড়া আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে বেশ কয়েকজন দমকল কর্মী আহতও হয়েছেন।
কীভাবে আগুন লাগল তা এখনো জানা যায়নি। ওয়াং ফুক কোর্ট আট ব্লকের ২০০০ আবাসিক ইউনিটের একটি আবাসিক কমপ্লেক্স। ১৯৮৩ সালে নির্মিত এই টাওয়ার ব্লক নতুন করে নির্মাণের কাজ চলছিল।
দেশটির উত্তরাঞ্চলের তাই-পো ডিস্ট্রিকের ওয়াং ফুক কোর্টটিতে ৮টি ব্লকে রয়েছে প্রায় ২ হাজার ফ্ল্যাট।
ভবনগুলোর বাইরের দিকে বাঁশ এবং নেট দিয়ে ঘেরা ছিল। বাঁশ থাকার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায় ভিডিও ফুটেজে। হংকংয়ের দমকল বিভাগের কথায়, এটি সবচেয়ে মারাত্মক (পাঁচ মাত্রা) ধরনের অগ্নিকাণ্ড।
আগুন লাগার খবর আসার পর ৪০ মিনিটের মধ্যে এ অগ্নিকাণ্ডকে চার মাত্রার বলা হয়েছিল। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরই অগ্নিকাণ্ডের মাত্রা আরো বাড়িয়ে বলা হয় পাঁচ। হংকং ১৭ বছর পর এবারই পাঁচ মাত্রার অগ্নিকাণ্ড দেখা গেল।
অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে মৃতের সংখ্যা ১৩ থেকে কয়েকঘণ্টার মধ্যেই তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ জনে। নিখোঁজের সংখ্যাও আড়াইশ’ পেরিয়ে গেছে। আহতের সংখ্যা বলা হচ্ছে ৪৫ জন।
দুর্ঘটনার পর বেশ কিছু ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ভবনে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। বহুতলগুলোর নীচ থেকে ওপরের প্রায় সবকটি তলাই আগুনের গ্রাসে চলে গেছে।
অ্যাপার্টমেন্টগুলোর জানালা দিয়ে আগুনের শিখা বেরোতে দেখা গেছে। গোটা এলাকা ঢেকে গেছে ঘন কালো ধোঁয়ায়। দমকলকর্মীরা উঁচু মই ব্যবহার করে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। দমকল বাহিনীর চেষ্টায় আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হলেও এখনও পুরোপুরি নেভানো যায়নি।
কেকে/এআর