থমাস আলভা এডিসনকে ছেলেবেলায় স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। শিক্ষক তার মাকে বলেছিলেন, “আপনার ছেলে তো বোকা!” কিন্তু তার মা তাকে বলেছিলেন, “তুমি বোকা নও, তুমি আলাদা।”
সেই “বোকা” ছেলেটিই পরবর্তীতে অসংখ্যবার ব্যর্থ হয়ে আবিষ্কার করলেন বৈদ্যুতিক বাল্ব। লোকেরা যখন বলত, “তুমি অসংখ্যবার ব্যর্থ হয়েছো।”
তখন থমাস আলভা এডিসন হাসিমুখে বলতেন, “আমি শুধু এতগুলো উপায় জেনেছি যেভাবে বাল্ব তৈরি করা যায় না।”
হলিউডে এক দরিদ্র অভিনেতা দরজায় দরজায় ঘুরে নিজের লেখা স্ক্রিপ্ট দেখাতেন। কেউ দেখত না, কেউ কিনত না। একসময় খাবার কেনার টাকাও ছিল না। প্রচলিত আছেÑতিনি নিজের প্রিয় কুকুরটিকে মাত্র ২৫ ডলারে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিলেন।
পরে তার নিজের লেখা স্ক্রিপ্ট “জড়পশু” প্রযোজকরা কিনতে চাইলেন। তবে শর্ত ছিল, “তুমি অভিনয় করতে পারবে না, শুধু স্ক্রিপ্ট বিক্রি করো।”
তিনি রাজি হননি।
শেষ পর্যন্ত স্ক্রিপ্ট বিক্রি হলো এবং তিনি নিজেই অভিনয় করলেন। আর সেই “জড়পশু” ইতিহাস গড়লো।
পরবর্তীতে তিনি সেই কুকুরটিকে আরও কয়েক গুণ বেশি দাম দিয়ে কিনে আনেন। তিনি হলেন সিলভেস্টার স্ট্যালোন।
১৯৪৭ সালে ভারতের এক ট্রেন স্টেশনে এক দরিদ্র বালক স্বপ্ন দেখছিলেন, আকাশ ছোঁয়ার। তিনি ছিলেন ড. এপিজে. আব্দুল কালাম- যিনি পরবর্তীতে সংগীতজ্ঞ, বিজ্ঞানী, দার্শনিক, সমাজসেবী ও ভারতের রাষ্ট্রপতি হন।
তার জীবনের বার্তা ছিল সহজ— “ছোট স্বপ্ন দেখো না, কারণ ছোট স্বপ্ন মানুষের হৃদয়কে জাগায় না।”
‘হ্যারি পটার’-এর লেখিকা জেকে রাউলিং- একসময় গৃহহীন, বিষণ্নতায় ভোগা এক একাকী নারী ছিলেন।
১২টি প্রকাশনী তার বই ফিরিয়ে দিয়েছিল এই বলে, “বাচ্চারা এটা পড়বে না।” কিন্তু তিনি থেমে থাকেননি। আজ তার লেখা সিরিজ বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রীত বইগুলোর একটি।
২৭ বছর কারাগারে ছিলেন নেলসন ম্যান্ডেলা। অনেকে বলেছিল, “ক্ষমা চাইলে মুক্তি পাবে।” তিনি বলেছিলেন, “যে অন্যায় করেনি, সে কিসের ক্ষমা চাইবে?” শেষ পর্যন্ত তিনি হলেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট।
আর তিনি শত্রুকেও ক্ষমা করে দিলেন। কারণ তার মতে, “ঘৃণা মনকে জ্বালিয়ে দেয়, কিন্তু ক্ষমা মুক্তি দেয়।”
স্টিভ জবস- যিনি নিজেই তৈরি করেছিলেন অঢ়ঢ়ষব, সেই তিনিই এক সময় নিজের কোম্পানি অঢ়ঢ়ষব থেকে বরখাস্ত হন। নিজেই নিজের প্রতিষ্ঠানে চাকরি হারান। অনেকে ভেবেছিলেন, তার অধ্যায় শেষ। কিন্তু ফিরে এসে তিনি আবার নতুন করে অঢ়ঢ়ষব গড়লেন- আর সেটি হয়ে উঠল বিশ্বের অন্যতম দামি ব্র্যান্ড।
সাফল্য মানে কখনো হার না মানা। কারণ পৃথিবীতে এমন কোনো বিখ্যাত মানুষ নেই- যিনি বাধাহীনভাবে ওপরে উঠেছেন।
তাদের সবাইকেই শুনতে হয়েছে—
“তুমি পারবে না।”
“তোমার মাথায় কিছু নেই।”
“তুমি যোগ্য নও।”
কিন্তু তারা প্রমাণ করেছেন-
স্বপ্ন দেখার জন্য টাকা লাগে না, লাগে সাহস।
সফল হবার জন্য গডফাদার লাগে না, লাগে জেদ।
তোমার গায়ে ব্র্যান্ডের জামা নেই?
-স্টিভ জবস সবসময় সাধারণ কালো টি-শার্টেই ছিলেন সফল।
তুমি সুন্দর না?
-শেখ সাদী, আইনস্টাইন, লতা মঙ্গেশকর কেউই রূপে পরিচিত ছিলেন না।
তুমি গরিব?
-আব্রাহাম লিঙ্কন, বিআর অ্যাম্বেডকর, আতিউর রহমান সবাই এসেছেন ধুলোমাটির ঘর থেকে।
তুমি ব্যর্থ?
-থমাস আলভা এডিসন, জেকে রাউলিং, কর্নেল স্যান্ডার্স সবাই বারবার ব্যর্থ হয়েও হাল ছাড়েননি।
তুমি একা?
-সবচেয়ে বড় বিজয়ীরা একাই শুরু করেছিলেন।
তুমি পারবে।
কিন্তু আগে বিশ্বাস করতে হবেÑতুমি পারবে।
ভয় না পেলে মানুষ উড়তে শেখে।
হার না মানলে ভবিষ্যৎ বদলায়।
আর তুমি যদি থেমে না গিয়ে এগোতে পারো, তবে হয়তো একদিন তোমার জীবন নিয়েও কেউ পিএইচডি করবে।