ব্রিটিশ আমলের জোড়া-তালির লক্করঝক্কর ট্রেনে চলছে সিলেট বিভাগে রেলওয়ের কার্যক্রম। সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-কক্সবাজার রেলপথে দুটি বিশেষ ট্রেন চালু, আখাউড়া-সিলেট রেলপথ সংস্কার করে ডাবলগেজ লাইনে উন্নীতকরণসহ ৮ দাবিতে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন আন্দোলনকারীরা।
শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল ১০টায় এই কর্মসূচি শুরু হয় ও একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী আন্তঃনগর পারাবাত এক্সপ্রেস ট্রেনটি শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনে অবরোধ করে। ট্রেনটি প্রায় আধা ঘণ্টা আটকে ছিল।
ট্রেন অবরোধ কর্মসূচির আহ্বায়ক কাওসার ইকবালের সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য দেন ট্রেন অবরোধ কর্মসূচির সদস্য সচিব মো. সাইফুল ইসলাম, সাংবাদিক আনহার আহমেদ সমশাদ, আমজাদ হোসেন বাচ্চু, এহসান বিন মুজাহির, ব্যবসায়ী নেতা হাফিজ আহমেদ, মোহাম্মদ শাহীন আহমেদ, আকতার হোসেন, আক্তারুজ্জামান দিপু, হারুন-অর রশিদ, তারেক ইকবাল চৌধুরী, মোজাহিদুল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান নাঈম প্রমুখ।
বক্তারা অভিযোগ করেন, আড়াই মাস ধরে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করা হলেও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কোনো প্রতিকার করেনি। রেল যোগাযোগে সিলেট বিভাগ সবসময় বৈষম্যের শিকার হচ্ছে এবং এখানকার রেললাইন সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত সিলেটের প্রবাসীরা বিপুল পরিমাণে রেমিটেন্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও আখাউড়া-সিলেট রেলপথের কোন সংস্কার নেই, মান্ধাতা আমলের বগি ও ইঞ্জিন দিয়ে ট্রেন চলাচল এবং ঘন ঘন ট্রেন দুর্ঘটনা, রেলপথে ট্রেনের টিকিটের চরম সংকট, যাত্রীদের অবর্ণনীয় ভোগান্তি লেগেই আছে।’
অবরোধ চলাকালে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মো. সাখাওয়াত হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আন্দোলনকারীদের জানান, ৮ দাবি ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়েছে। দাবিগুলো বিবেচনা করছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। এ সময় তিনি জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে আন্দোলনকারীদেরকে ট্রেন ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন।
আন্দোলনকারীদের আট দাবি গুলো হচ্ছে- সিলেট-ঢাকা, সিলেট-কক্সবাজার রেলপথে দুটি স্পেশাল ট্রেন চালু, আখাউড়া-সিলেট রেলপথ সংস্কার ও ডাবল লাইনে উন্নীতকরণ, আখাউড়া-সিলেট সেকশনে একটি লোকাল ট্রেন চালু, আখাউড়া-সিলেট সেকশনে সব বন্ধ স্টেশন চালু, কুলাউড়া জংশন স্টেশনে বরাদ্দকৃত আসন সংখ্যা বৃদ্ধি, সিলেট-ঢাকাগামী আন্তঃনগর কালনী ও পারাবত ট্রেনের আজমপুরের পর ঢাকা অভিমুখী সব স্টেশনের যাত্রা বিরতি প্রত্যাহার, সিলেটের সঙ্গে চলাচলকারী ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় রোধে ত্রুটিমুক্ত ইঞ্জিন যুক্ত করা এবং যাত্রী অনুপাতে প্রতিটি ট্রেন অতিরিক্ত বগি সংযোজন করা।
আট দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে মৌলভীবাজার কুলাউড়া জংশন, শ্রীমঙ্গল, ভাটেরা, টিলাগাঁও, লংলা, রেলস্টেশন, কমলগঞ্জ রেলস্টেশনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছ। এছাড়া রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
কেকে/ এমএ