সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫,
২৮ আশ্বিন ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম: ১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় এক বিলিয়ন ডলার      জিয়া পরিবার জনগণের পরিবার : আমান উল্লাহ      রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা      ২০০ তালেবান সৈন্যকে হত্যার দাবি পাকিস্তানের      বাতিল হওয়ার শঙ্কায় বিশ্বজয়ী আর্জেন্টিনার ভারত সফর      বিচারব্যবস্থাকে ব্যবহার করে দেশে স্বৈরশাসন পাকাপোক্ত হয়েছিল      প্রেসক্লাবে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গে সাউন্ড গ্রেনেড-লাঠিচার্জ      
দেশজুড়ে
প্রকল্পের কাজ না করেই সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করলেন ইউপি চেয়ারম্যান
হাসান আল সাকিব
প্রকাশ: বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২:৫১ পিএম আপডেট: ০৪.১২.২০২৪ ৩:০৭ পিএম
ছবি: প্রতিনিধি

ছবি: প্রতিনিধি

রংপুরের পীরগঞ্জে কাজ না করেই অস্তিত্বহীন প্রকল্প দেখিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উপজেলার ৭নং বড় আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান সেলিমের বিরুদ্ধে। 

গত ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে এলজিএসপি-৩ বরাদ্দকৃত ৪টি প্রকল্প  কাগজে-কলমে প্রকল্পটি শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে মর্মে সবকটি প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম মিয়া । শুধু তাই নয়, প্রকল্পে আপন ছোট ভাই হাফিজ আব্দুন নুর সোহেলকে ঠিকাদার সাজিয়ে ভুয়া মাস্টার রোলের মাধ্যমে বরাদ্দের অর্থও পরিশোধ করা হয়েছে। 

কিন্তু সরেজমিনে এ প্রকল্পের কোনোই অস্তিত্ব মেলেনি। ৪টি প্রকল্পে মোট ৪ লাখ ১৮ হাজার ১৫২ টাকা । ইউনিয়নের বেকার যুবক ও যুবতীদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে আয় বর্ধক ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের নামে বরাদ্দ ছিলো ৭৫ হাজার টাকা। তবে এমন প্রশিক্ষণ হয়নি ইউনিয়ন পরিষদে এবং তা না করেই প্রশিক্ষণের নামের বরাদ্দকৃত অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের পুকুর পাড়ে বিনোদন পার্ক স্থাপনের নামে বরাদ্দ ছিলো ২ লাখ টাকা। সেটিরও কোনো কাজ না করেই বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদসহ পত্নীচড়া বাজার ও আশপাশে সিসি ক্যামেরা স্থাপনে বরাদ্দ ছিলো ১ লাখ ৪৩ হাজার ১৫২ টাকা। সেটিও কোনো কাজ না করেই বরাদ্দের পুরো টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এছাড়াও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে অবস্থিত ডেলিভারি ধাত্রীদের সন্মানী ভাতা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে। 


স্থানীয়দের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের দলীয় প্রভাবসহ জাতীয় সংসদ এর সাবেক স্পীকারের প্রভাব দেখিয়ে এসব অনিয়ম দূর্নীতি করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম মিয়া। আবার অনেকেই বলছেন, কাজির গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই। এটিকে সরকারি অর্থ অপচয় ও অনিয়ম-দুর্নীতির বহুল প্রচলিত কৌশল হিসেবেই দেখছেন স্থানীয় সচেতন মহল। তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তাদের। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করেছেন ইউনিয়নের নানা শ্রেণী পেশার মানুষ। 


এ ছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদ চত্তরে শহীদ মিনারের নামে বরাদ্দ ছিলো ৩ লাখ টাকা সেখানেও অভিযোগ রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ সংস্কারের নিয়োজিত ঠিকাদারের কাছ থেকে জোরপূর্বক  ইট, সিমেন্ট, বালি ও ইট ভাটা থেকে ভাটা মালিকদের বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে ইট সংগ্রহ করে শহীদ মিনারটি নির্মাণাধীন রয়েছে। অথচ কাগজে কলমে প্রকল্প শেষ হয়েছে মর্মে বরাদ্দকৃ ৩ লাখ টাকা  উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম মিয়া ।


বড় আলমপুর ইউনিয়নের নাম অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বর্তমান চেয়ারম্যানের আমলে নাকি কোনো বরাদ্দই নাই। এখন শোনোছি অনেক টাকা বরাদ্দ আইছিলো ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নাকি কাজ না করি সব খাইছে । ইউনিয়ন পরিষদে এমন দূর্নীতিবাজ চেয়ারম্যানের দরকার নাই, তার শাস্তি এবং অপসারণ চাই । 

বড় আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আশরাফুল আলমের কাছে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,  তার কাছ থেকে বেশকিছু কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছে চেয়ারম্যান। তবে বরাদ্দ হয়েছিলো বরাদ্দের সব টাকা চেয়ারম্যান এর কাছে আছে । আমিও অনেকদিন চেয়ারম্যানকে কাজের জন্য বলে আসতেছি, সে করবো করবো বলে সময় নিচ্ছে। এতে আমিও মহাবিপদে আছি ।

 
এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য শিমুল মিয়া জানান, আমি নিজেও তিনটা প্রকল্পের সভাপতি ছিলাম। আমাকে কোনো কিছু না বলেই প্রকল্পের টাকা নিজেই উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান । 

ইউনিয়নের ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য সুরুজতারার বেশ কয়েকটি প্রকল্পের সভাপতি ছিলেন। কেনো কাজ করা হয়নি এ বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন টাকা তুলেছি তবে কাজ করা হবে আর সব বিষয় চেয়ারম্যান জানে আমি বেশি কিছু জানি না । 

৯নং ও ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আশরাফুল আলম ও আবু তাহেরের কাছে প্রকল্পের কাজের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব প্রকল্পের কোনো কাজই হয়নি এটা সত্য।

তবে প্রকল্পের টাকা চেয়ারম্যান উত্তোলন করে কি করেছেন আমরা জানি না । অন্যান্য ইউপি সদস্যরাও জানান এসব প্রকল্পের টাকা চেয়ারম্যান উত্তোলন করেছে তবে কোনো কাজ করা হয়নি । তবে জেনেছি সে প্রকল্পের সব টাকা উত্তোলন করে চেয়ারম্যান কি করেছে আমরা তা জানি না।  


এ ব্যাপারে বড় আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান সেলিম মিয়ার সাথে মুঠোফোনে বলেন, এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। 

পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ খাদিজা বেগম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি এবং তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে দোষী প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
 
রংপুরের স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক (উপসচিব) রায়হান কবির জানান, ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি  তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কেকে/এইচএস
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

গাজায় যুদ্ধ শেষ, মধ্যপ্রাচ্য এখন স্বাভাবিক : ট্রাম্প
ধর্মের অপব্যবহার বাড়ছে
পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে বিএনপির কর্মী সভা
বাড়ছে লাশের মিছিল
চুয়াডাঙ্গায় বিষাক্ত চোলাই মদ খেয়ে ৬ জনের মৃত্য

সর্বাধিক পঠিত

আসছে নাটক ‘অপ্রকাশিত ভালোবাসা’
রাজশাহীতে বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস পালিত
নির্বাচন নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে : তানভীর হুদা
পাল্লা বাজারে রক্তলাল শাপলার মনভোলানো সমাহার
মৌলভীবাজারে জামায়াত ও খেলাফত মজলিসের স্মারকলিপি

দেশজুড়ে- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close