কুমিল্লার প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড়ের নামে নামকরণ করা হয় কান্দিখাল। খালটি কুমিল্লা নগরীর পানি নিষ্কাশনের অন্যতম একটি প্রণালী। কিন্তু বর্তমানে দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে এ খাল। এক সময় যে খালের প্রস্থ ছিলো ৭৯ থেকে ৯৫ ফুট, এখন সে খালের প্রস্থ নেমে এসেছে ১৫ থেকে ২০ ফুটে।
কান্দিখাল নগরীর উত্তর চর্থার নওয়াববাড়ি চৌমুহনী থেকে নোয়াগাঁও চৌমুহনী হয়ে জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার পুরাতন ডাকাতিয়া নদীতে মিশেছে। খালটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৫ কিলোমিটার। এ খালের সিএস নকশা অনুযায়ী কোনো কোনো স্থানের প্রস্থ ৪৫ ফুট থেকে ৯৫ ফুট পর্যন্ত। কিন্তু টমছমব্রিজ থেকে জাঙ্গালিয়া পর্যন্ত চারটি সরকারি প্রতিষ্ঠানসহ মোট ৪০টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির দখলে আছে খালটি। যে কারণে কান্দিখালটি দিনে দিনে অনেকটা বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
নগর ভবনের তথ্যমতে, ২০২২ সালে দখলদারদের একটি তালিকা করে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন। সেই তালিকা থেকে জানা যায়, সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের পাকা বাউন্ডারি ওয়াল ও মূল ফটকসহ রয়েছে ১০.৫৬ শতাংশ, সামাজিক বন বিভাগের বাউন্ডারি ওয়াল রয়েছে ৩.৫৬ শতাংশ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়ালসহ রয়েছে প্রায় দুই শতাংশ এবং শাকতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একতলা পাকা ভবনসহ শতাংশ ভূমি অবৈধ দখলে রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও ৩৬ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান অবৈধ দখলের তালিকায় রয়েছে। এদিকে সালাহ উদ্দিন মোড় থেকে টমছমব্রিজ পর্যন্ত দখলের হিসাব এখনো হয়নি।
কুমিল্লা কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবীর মাসউদ বলেন, কান্দিখালে সরকারি, বেসরকারি, অবৈধ ও ব্যক্তি মালিকানায় দখল হয়ে আছে। কর্তৃপক্ষ যথাযথভাবে যদি উদ্ধার করতে পারে আশা করা যায় একটা সুফল পাওয়া যাবে।
‘আমরা কুমিল্লা সন্তান’ সংগঠনের সভাপতি আব্দুল হান্নান বলেন, কুমিল্লা শহর ও আশেপাশে যে খালগুলো আছে অধিকাংশ খাল দখল হয়ে আছে। যা শহরের জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ। শুকনো মৌসুমী খালগুলো উদ্ধার করে সংস্কার করা জরুরী।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহ আলম খোলা কাগজকে বলেন, টমসম ব্রিজ থেকে জাঙ্গালিয়া পর্যন্ত বেশ কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান খাল দখল করে রেখেছে। আমরা যতটুকু জেনেছি বিভিন্ন উৎসাহ থেকে উচ্ছেদ যোগ্য যেই ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান রয়েছে আমরা সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করব। তারপর আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
কেকে/ আরআই