ডার্ড গ্রুপের শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা আত্মসাৎ ও আন্দোলন দমন করার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে গাজীপুর সিটিতে শ্রমিক সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিকালে সিটির চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় আয়োজিত এ কর্মসূচিতে ডার্ড গ্রুপের অধিকার বঞ্চিত ও নির্যাতিত শ্রমিকরা অংশ নেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সাধারণ সম্পাদক ও গাজীপুর মহানগর কমিটির সভাপতি শফিউল আলম। বক্তব্য দেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন, বাংলাদেশ পোশাক শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. তরিকুল ইসলাম, গাজীপুর মহানগর গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, শ্রমিক নেতা হারুন সরকার, মিজানুর রহমান সিকদার, দেলোয়ার হোসেন সরকার, মোস্তফা, আনোয়ার হোসেন, আবুল হোসেন জুয়েল, মোশাররফ হোসেন, আহমেদ শরীফ, আব্দুল মান্নান, লিটন সরকার, রুবিনা আক্তার, জাহাঙ্গীর আলম, মিলন।
সমাবেশে শফিউল আলম বলেন, ‘২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর তৎকালীন শ্রম প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে সময় ও সুবিধা নির্ধারণ করে চুক্তি সম্পাদিত হয়। কিন্তু দুঃখজনকভাবে প্রায় দুই বছর অতিক্রান্ত হলেও এখনও শ্রমিকদের কাঙ্ক্ষিত পাওনা সম্পূর্ণ পরিশোধ করা হয়নি। আন্দোলনের চাপে সরকার সুদমুক্ত ১৩ কোটি টাকার লোন দেয়, যার মধ্যে মালিকপক্ষ কয়েক দফায় ১১ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। এখনো প্রায় ২ কোটি টাকা বাকি রয়েছে, এছাড়াও প্রায় ৩২ কোটি টাকা এখনো শ্রমিকদের প্রাপ্য।”
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার ইতোমধ্যেই পালিয়ে থাকা ডার্ড গ্রুপের মালিকদের বিরুদ্ধে রেড এলার্ট জারি করেছে এবং দুইটি শ্রম আদালতে রাষ্ট্রবাদী মামলা দায়ের করেছে। সরকারের এই ইতিবাচক পদক্ষেপকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে পাওনা আদায়ের প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল করে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটা বিশেষ কমিটি গঠন করে পালিয়ে থাকা মালিকদের সম্পত্তি বিক্রি করে দ্রুত বাকি পাওনা পরিশোধের আহ্বান জানাই।”
“মামলা ও হামলার ভয় দেখিয়ে শ্রমিক আন্দোলনকে দমন করা যাবে না। আমি বাংলাদেশের শ্রমিক সমাজের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি এবং বিজিএমইএ ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করে জড়িত হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
সমাবেশে অন্য বক্তারা বলেন, ‘ডার্ড গ্রুপের পাওনা আদায়ের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে একটি সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে, যারা অতীতে রোর ফ্যাশনের শ্রমিকদের পাওনাও আত্মসাৎ করেছে।’
নেতারা দ্রুত ডার্ড গ্রুপের চুক্তি অনুযায়ী অবশিষ্ট সব পাওনা পরিশোধ ও প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা ফয়েজ আহমেদকে গ্রেফতারের দাবি জানান।
বক্তারা অভিযোগ করেন, ফয়েজ আহমেদের নেতৃত্বে বিভিন্ন ইউনিটের যন্ত্রপাতি ও মালামাল গোপনে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে ১০০’-এরও বেশি গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না, যা বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে এবং শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে।
কেকে/এমএ