উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের কৃষক শাহ আলম জানান, আগে লবণাক্ততার কারণে ধান চাষ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। কিন্তু কৃষি বিভাগের উদ্যোগে লবণ সহনশীল জাত বিনা ধান-৭ বিনা ধান-১৭, ও ব্রিধান-৭৫, ব্রি ধান-৮৭ চাষ করে এবার ভালো ফলন পেয়েছেন তারা। আগের বছরের চেয়ে এই বছর আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। এতে আমরা অনেক খুশি।
উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের স্থানীয় কৃষক মো. সেলিম বলেন, ‘আগে জমিতে ধান তেমন হতো না, লবণের কারণে সব মরে যেত। এবার কৃষি অফিসের পরামর্শে নতুন জাতের ধান রোপণ করি, আগাছা ও পোকামাকড় দমনের জন্য নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার ও কীটনাশক ব্যবহার করা হয় যেমন- বিটাফেন, কার্বোফুরান অথবা কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী নিরাপদ বালাইনাশক ব্যবহার করে থাকি।’
এতে ধানের কোন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আমাদের কৃষি কাজে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সহযোগিতা করে আমরা লবণাক্ত জমিতে আরো ভালো ফলনের আশা করছি।’
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. হুমায়ুন কবির দৈনিক খোলা কাগজকে বলেন, ‘লবণাক্ত জমিতে ফলন বাড়াতে আমরা নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও মাঠ পর্যায়ে সহায়তা দিচ্ছি। টেকনাফ উপজেলায় মোট আবাদী জমি ১১ হাজার ৩৬ হেক্টর, তার মধ্যে ১০ হাজার ৯৬০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হয়েছে। প্রায় ৩০০ হেক্টর লবণ চাষের জমির স্বল্পকালীন রোপা আমন জাত যেমন- বিনা ধান ৭, বিনা ধান ১৭,ব্রি ধান ৭৫, ব্রি ধান ৮৭ ও স্থানীয় লবণ সহিষ্ণু কিছু ধানের চাষ করা হয়েছে।
‘কৃষি বিভাগ উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে কৃষকদেরকে লবণ মাঠে ধান করতে আগ্রহী করে তুলছে। কৃষি প্রণোদনার মাধ্যমে কৃষকদের সহযোগিতা করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ সফলতা কৃষকদের আগ্রহ বাড়াবে এবং ভবিষ্যতে লবণ সহনশীল জাতের চাষ আরও সম্প্রসারিত হবে।’
সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে নাফ নদীর পাড়জুড়ে এখন বাতাসে ভাসছে সোনালি সম্ভাবনার সুবাস। লবণের মাঠে ধানের হাসি—এ যেন টেকনাফের কৃষকের পরিশ্রম ও সফলতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
কৃষি অফিসের সহযোগিতা পেলে আগামীতে কৃষকেরা আরও সফল হবে বলে আশা করছেন। এতে স্থানীয় কৃষকরা নিজেদের অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণ করতে পারবেন এবং গ্রামীণ অর্থনীতিতে নতুন গতি সঞ্চার হবে।