আছরের নামাজ শেষে মসজিদে বক্তৃতার সময় ইসলামী বক্তা মুফতি আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় শাজাহান আলী হান্নান নামে স্থানীয় এক বিএনপি নেতাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকালে সদর উপজেলার বটতৈল ইউনিয়নের বরিয়া জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
শাজাহান আলী হান্নান বটতৈল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি। এছাড়া বরিয়া জামে মসজিদের সভাপতিও তিনি।
৩ মিনিট ২৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, তখন বিকেল সাড়ে ৪টা। ইসলামী বক্তা মুফতি আমির হামজা বক্তৃতা দিচ্ছেলেন। হঠাৎ শাজাহান আলী হান্নান দাঁড়িয়ে আমির হামজাকে কিছু বলার অনুমতি চান।
এ সময় হান্নানকে বলতে শোনা যায়, “হুজুর ধার্মিক আলোচনা যত পারেন করেন—কিন্তু রাজনৈতিক কোন আলোচনা করবেন না।” এরপরই মসজিদে থাকা মুসল্লিরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তারা হান্নানের দিকে তেড়ে যান এবং তাকে ধাক্কা দিয়ে মসজিদ থেকে বাইরে বের করে দেন। এ সময় কয়েকজনকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতে দেখা যায়। এই ঘটনা নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
বরিয়া জামে মসজিদের সভাপতি বিএনপি নেতা শাজাহান আলী হান্নান বলেন, “আমি মসজিদের সভাপতি। মুফতি আমির হামজা মসজিদে আসবেন সেটাও আমাকে কেউ জানায়নি। আসরের নামাজ শেষে আমির হামজা বক্তৃতা দিতে শুরু করেন। সভাপতি হিসেবে আমি শুধু রাজনৈতিক আলোচনা বাদ দিয়ে ইসলামিক আলোচনা করতে বলেছিলাম। এতেই মসজিদের ভেতরে থাকা লোকজন আমার দিকে তেড়ে আসেন। ধাক্কা দেন।”
হান্নানের দাবি, “স্থানীয় কয়েকজন বাদে মসজিদের ভেতর যারা ছিলেন তারা সবাই অপরিচিত। জামায়াত ইসলামের লোকজন। যদিও এই ঘটনার পর আমির হামজা দুঃখ প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি আমি জেলা বিএনপির সদস্য সচিবকে জানিয়েছি।”
ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. আনিসুর রহমান বলেন, “হান্নান ভাই নিজেই ওই মসজিদের সভাপতি। তার সঙ্গে এমন আচরণ প্রতিহিংসামূলক। আর মসজিদে হবে ইসলামিক আলোচনা। সেখানে কোনো রাজনৈতিক আলোচনা হতে পারে না।”
এ বিষয়ে জানতে মুফতি আমির হামজার ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সুজা উদ্দীন জোয়ার্দ্দরের কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানেন না বলে জানান।
কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, “ঘটনাটি জেনেছি। মসজিদে রাজনৈতিক আলোচনা নিষেধ করতে বলাটা দোষের কিছু নয়। দুই একটা মসজিদের ঘটনা নিয়ে এখনি দল থেকে কোন বিবৃতি নিয়ে ভাবছি না। তবে অবজারভেশন করছি।”
প্রসঙ্গত, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে ইসলামি বক্তা মুফতি আমির হামজাকে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
কেকে/এজে