সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫,
৪ কার্তিক ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম: নির্বাচনে এআই অপপ্রচার ও ড্রোনের ব্যবহার নিষিদ্ধ      ভোটের মাঠে দায়ীত্ব পালন করবে প্রায় এক লাখ সেনা: ইসি সচিব      সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য মাউশির জরুরি সতর্কতা      আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে ইসি      আজ থেকে আমরণ অনশনে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা      ৪৫ ফিলিস্তিনিকে হত্যার পর যুদ্ধবিরতি পুনঃকার্যকরের ঘোষণা ইসরায়েলের      বকুলে জিম্মি ছাত্রদল      
বেগম রোকেয়া
কেক বিক্রির আয়ে চলে জেসমিনের সংসার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: সোমবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:৫৭ এএম

তিন বছর বয়সি ছোট্ট ছেলে কেক খাওয়ার বায়না ধরত। বাজার থেকে এনেও দিতেন মা। তবে এক দিন মায়ের কৌতূহল হয়। বাজারে না গিয়ে ইউটিউব দেখে নিজেই বানানো শুরু করেন কেক। এখন কেক বিক্রির আয়ের টাকাই তার সংসারের খরচ চালানোর মূল উৎস। গল্পটি জেসমিন ত্রিপুরার। খাগড়াছড়ি জেলা শহরের স্লুইসগেট এলাকায় এখন তিনি উদ্যোক্তা হিসেবে খুবই পরিচিত মুখ। কেকের পাশাপাশি নানা রকম নাশতাও বানিয়ে বিক্রি করেন তিনি।

জানা যায়, ২০১৭ সালে কেক বানানো শুরু করেন জেসমিন। ছেলের জন্য কিনতে গিয়েই কেক বানানো শেখার ইচ্ছা হয়েছিল তার। শুরুতে ইউটিউবে ভিডিও দেখে কেক বানানো শুরু করেন। এরপর ওই বছর খাগড়াপুর মহিলা কল্যাণ সমিতিতে ১০ দিনের প্রশিক্ষণ নেন। সেখানে তিনি কেকসহ নানা ধরনের নাশতা তৈরির কৌশল শেখেন। শুরুতে আত্মীয়স্বজন ও পরিচিত মানুষের জন্য কেক বানাতেন তিনি। সবাই খেয়ে প্রশংসা করতেন, ব্যবসা শুরু করারও উৎসাহ দিতেন তাকে। তবে তখন ব্যবসা শুরুর জন্য আত্মীয়স্বজনের উৎসাহকে তেমন গুরুত্ব দিতেন না তিনি।

জেসমিন বলেন, সবাই প্রশংসা করলেও তিনি প্রথম সাড়া দেননি। তবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পরে এ সিদ্ধান্ত পাল্টান। ঘরে সময় না কাটায় অনলাইনে কেক বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এক দিন ফেসবুকে ‘কেক নক’ (বাংলায় ‘নক’ মানে দোকান) নামে একটি পেজ খোলেন। এরপর সেখানে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি শুরু করেন। 

শুরুর দিকে সাড়া কম পেলেও ২০২০ সালের শেষের দিকে ব্যাপক পরিচিতি পান। অনলাইনে বিক্রি বাড়ায় একপর্যায়ে দোকান খোলার সিদ্ধান্ত নেন জেসমিন। চলতি বছর জুনে জেলার স্লুইসগেট এলাকায় দোকান খুলেছেন তিনি। চকলেট, ভ্যানিলা, রেড ভেলভেট, ব্ল্যাক ফরেস্ট, মাখন কেক, ফ্রুট কেকসহ হরেক নামের কেক তার দোকানে বিক্রি হয়। এসবের বাইরে চিকেন ফ্রাই, পিৎজা, চিকেন স্যান্ডউইচ, দই, আইসক্রিম, ডাবের পুডিং, মোমোসহ বিভিন্ন মুখরোচক খাবারও বানিয়ে বিক্রি করছেন তিনি।

গত শনিবার সন্ধ্যায় দোকানে গিয়ে জেসমিনের সঙ্গে কথা হয়। তখন তার দোকানে নাশতা ও কেকের জন্য মানুষের ভিড়। দোকানের কাজ করার ফাঁকে জেসমিন ত্রিপুরা বলেন, সবকিছু সামলে বিকেল ৪টা থেকে রাত ১০টা অবধি তিনি দোকান খোলা রাখেন। দোকানের সব খাবার নিজেই বানান। স্বামী তাপস ত্রিপুরাও এতে সাহায্য করেন। তার এক ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণি, আরেক ছেলে প্রাক্-প্রাথমিকে পড়ে।

জেসমিনের কেক ও মিষ্টির কদর শহরজুড়েই রয়েছে। বিভিন্ন পারিবারিক ও দাপ্তরিক অনুষ্ঠান কিংবা উৎসবেও অনেকে তার কেক চান। এ জন্য আগে থেকে অনেকেই বুকিং দিয়ে রাখেন। জেসমিনের দোকানে কথা হয় খাগড়াছড়ির মধুপুর এলাকার বাসিন্দা সৌরভ ত্রিপুরার সঙ্গে। তিনি বলেন, জেসমিন ত্রিপুরার কেক ও নাশতার দাম বাজারের অন্য দোকানের তুলনায় কম। এ ছাড়া স্বাদও ভালো। এ কারণে যেকোনো অনুষ্ঠানে তিনি জেসমিনের দোকান থেকেই কেক ও নাশতা নেন।

গ্রাহকদের এই সাড়া দেখে উচ্ছ্বসিত জেসমিনও। তিনি বলেন, একসময় বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতাম। কোনো দিন ভাবিনি এমন উদ্যোক্তা হব। এখন উদ্যোক্তা হয়ে ভালো লাগেছে, পরিবারেরও সচ্ছলতা এসেছে। আমার ব্যবসা আরো বড় হোক, লোকজনের কর্মসংস্থান হোক-এটিই এখন চাওয়া। পাহাড়ের প্রান্তিক নারীদেরও আমি কেক তৈরির প্রশিক্ষণ দেব, যাতে কোনো নারীকেই বেকার হয়ে ঘরে থাকতে না হয়।’ জেসমিনের বড় ছেলে পাইংমুং ত্রিপুরা জানায়, তার সহপাঠীরা মায়ের কেক ও নাশতার প্রশংসা করে। এটি তার খুব ভালো লাগে। পড়ালেখার পর যে সময়টুকু পায়, সে সময় সেও মাকে সহযোগিতার চেষ্টা করে।

জেসমিনের এ সাফল্যে খুশি স্বামী তাপস ত্রিপুরা। তিনি বলেন, ঘরসংসার সামলে তার স্ত্রী এভাবে এগিয়ে যাবেন, এটা তিনি ভাবতেও পারেননি। তবে তার স্ত্রীর পরিশ্রম আর জেদ দেখে তিনি খুশি হয়েছেন। শুরু থেকেই তিনি উৎসাহ দিয়েছেন এবং সহযোগিতার চেষ্টা করেছেন।

কেকে/ এমএস
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

আশুলিয়ায চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলার আসামি আইয়ুব গ্রেফতার
বকশীগঞ্জে নিখোঁজের পর শিশুর মরদেহ উদ্ধার
নির্বাচনে এআই অপপ্রচার ও ড্রোনের ব্যবহার নিষিদ্ধ
ভোটের মাঠে দায়ীত্ব পালন করবে প্রায় এক লাখ সেনা: ইসি সচিব
টঙ্গীতে নির্বাহী পরিচালকের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন

সর্বাধিক পঠিত

পুত্রবধূর হাতে শাশুড়ির মর্মান্তিক মৃত্যু
জবি ছাত্রদল নেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, দুইজন শনাক্ত
চট্টগ্রামে ডিবি পরিচয় তুলে নেওয়া সেই জুয়েলকে গ্রেফতার দেখাল পুলিশ
সীমান্তে একাকার দুই বাংলা, ব্যতিক্রমী ‘সীমান্ত মিলন মেলা’
বকুলে জিম্মি ছাত্রদল

বেগম রোকেয়া- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close