মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫,
২৯ আশ্বিন ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম: ভারতীয় ৩ কফ সিরাপে বিষাক্ত উপাদান, এক মাসে ১৭ শিশুর মৃত্যু      অনলাইন জামিননামা চালু কাল, এক ক্লিকে কারাগারে যাবে আদেশ      মিশরে হামাস-ইসরায়েল শান্তি চুক্তিতে ট্রাম্পের স্বাক্ষর      এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি আজ      রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারল বাংলাদেশ      এনসিপি শাপলা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবে : সারজিস      সোমবারের উল্লেখযোগ্য সংবাদ      
বেগম রোকেয়া
গৃহিণী থেকে সফল উদ্যোক্তা রোজী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:১১ এএম
ছবি : প্রতিবেদক

ছবি : প্রতিবেদক

রোজী আহমেদ। তিনি একজন সফল নারী উদ্যোক্তা। তিনি ‘অর্গানিক প্রোডাক্টস বাই রোজী’র কর্ণধার। গত বছর এসএমই নারী উদ্যোক্তা মেলায় পেয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংক নারী উদ্যোক্তা সম্মাননা। ২০২২ সাল থেকে তিনি বিদেশে পণ্য রপ্তানি করছেন। তার কারখানায় তৈরি পণ্য যাচ্ছে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। অনেক নারীকে কাজের সুযোগ করে দিয়েছেন রোজী আহমেদ। 

বাগেরহাট শহরের কাছেই কোনডোলা গ্রামের মেয়ে রোজী। এইচএসসি পর্যন্ত পড়ার পর পারিবারিকভাবেই মোজাহিদ আহমেদের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। এরপর সন্তানের জন্ম, সংসার সামলে আর পড়াশোনা হয়নি। কোনো চাকরি করাও হয়নি।

জানা যায়, রোজী আহমেদের সাদা রঙের মূল বাড়িটিই কারখানায় রূপ পেয়েছে। নিচতলায় অফিস এবং নারীরা কাজ করছেন, দোতলার তার ড্রয়িংরুমেও শিশুদের কাঠের টুলে রং করাসহ চলছে নানান কাজ। এই ভবনের পাশেই পুরোনো একতলা ভবনে মূল কারখানা। এই ভবনের পাশে কাজের প্রয়োজনেই নতুন লম্বাটে ঘরও তুলতে হয়েছে। বাড়ি ঘুরে দেখা গেল, তিনটি শাখায় নারীরা যে যার মতো কাজে ব্যস্ত। 

জানা যায়, কোভিড মহামারির সময় ২০২০ সালে পুরোদমে কাজ শুরু করেছিলেন রোজী আহমেদ। ব্যবসা এখন বেড়েছে। সব খরচ বাদ দিয়ে মাসে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা লাভ থাকে বলে জানালেন রোজী আহমেদ। কারখানা ঘুরে দেখার সময় ‘রুবিনা’ ও ‘এলিনি’র গল্প বললেন তিনি। ৭০ হাজার জোড়া ‘রুবিনা’ আর ‘এলিনি’ গ্রিসে যাচ্ছে। এগুলো স্লিপারের নাম। হোটেল, রেস্টুরেন্টে এগুলো ব্যবহার করা হয়। ১১ হাজার জোড়া এলিনি আর রুবিনা গ্রিসে পৌঁছে গেছে। বাকিগুলো তৈরির কাজ চলছে। তাই এই শাখায় নারীদের ব্যস্ততা একটু বেশি।

ব্যবসায় রোজীর আসাটা ছিল শখের বসে, অনলাইনে একটি পেজ খুলেছিলেন, নাম দিয়েছিলেন ‘অর্গানিক প্রোডাক্টস’। বাড়ির ছাদে বসে নিজের হাতেই নারকেলের মালা দিয়ে ফুলের টব বানিয়ে অনলাইনে বিক্রি করতেন। তবে তাতে তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি।

উদ্যোক্তা হিসেবে কাজের শুরু প্রসঙ্গে রোজী আহমেদ বলেন, করোনার সময় মিল কল-কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। তার বাসায় কাজের সাহায্যকারী যিনি ছিলেন, তাকেও এ সময়ে কাজে আসতে না করতে হয়েছিল। বেকার হয়ে যাওয়া এই নারীদের জন্য কিছু করা যায় কি না, সে চিন্তা থেকেই মূলত উদ্যোগের শুরু।

রোজীর ভাশুর মোস্তাফিজ আহমেদ ও স্বামীর আগে থেকেই পারিবারিক ব্যবসা ছিল। সেখানে তারা নারকেলের ছোবড়া বা আঁশ এবং কাঠ দিয়ে কাজ করেন। তাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নাম ন্যাচারাল ফাইবারস। রোজী বলেন, তার ভাশুর ও স্বামী ২০০২ সাল থেকে নারকেলের আঁশের পণ্য ও কাঠ দিয়ে বাড়ি বানাচ্ছেন। এগুলো দেশের বাইরে রফতানি করছেন। কাঠের বাড়ি বানানোর সময় টুকরা বা ছোট ছোট কাঠ বেঁচে যায়। এই কাঁচামাল দিয়েই নতুন বা অন্য রকম কিছু বানানো যায় কি না, তার জন্য গুগল, ইউটিউবের সাহায্য নেন তিনি।

প্রথমে নারকেলের ছোবড়া দিয়ে থালাবাসন পরিষ্কারের মাজুনি বানানোর মধ্য দিয়েই কাজ শুরু হয়। বেঁচে যাওয়া কাট দিয়ে পরে বিড়ালের খাট, দোলনা, শিশুদের টুলসহ বিভিন্ন পণ্যের কাঠামোগুলো কর্মীদের দিয়ে বানিয়ে দেন ভাশুর ও স্বামী। তারপর সেই কাঠামো ধরে পণ্য ডেলিভারি পর্যন্ত অন্যান্য সব কাজ করেন নারীরা।

রোজী জানান, শুরুতে দেশের বাজারে মাজুনির মোটামুটি ভালোই সাড়া পাওয়া যায়। ১৫-১৬ জন নারীকে নিয়ে বাড়ির নিচতলায় কাজ শুরু হয়। কাজ শুরুর পর একটি এনজিও পাখির বাসা বানিয়ে দেওয়ার অর্ডার দেয়। রোজী একটি নমুনা বানিয়ে দেখালে ওই এনজিও তা খুব পছন্দ করে। তারপর এক হাজার পাখির বাসার একটি অর্ডার দেয়। তারপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি রোজীকে। বর্তমানে ১২ থেকে ১৩টি মডেলের বাবুই পাখির বাসা বানাচ্ছেন রোজীর প্রতিষ্ঠানের নারী কর্মীরা।

উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা পেলেন কোথা থেকে-এ প্রশ্নের উত্তরে রোজী আহমেদ বলেন, কাজের অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন স্বামীর কাছ থেকে। অনলাইনে পেজ খুলে ব্যবসা শুরুর পর স্বামী তাতে আগ্রহ দেখান। পাখির বাসা বানানোর অর্ডার দেওয়া ওই এনজিও থেকে অগ্রিম ৩০ হাজার টাকা পাওয়া গিয়েছিল, তা দিয়েই মূলত কাজটি শুরু করেন রোজী। পারিবারিক ব্যবসা থাকায় রোজীকে বলতে গেলে তেমন কোনো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়নি, যা অন্য নারী উদ্যোক্তাদের পোহাতে হয়। 

পণ্য বানানোর নানান উপকরণ পান পারিবারিক ব্যবসা থেকে। তবে তা দাম দিয়েই কিনে নিচ্ছেন রোজী তার নিজের প্রতিষ্ঠানের জন্য। বিড়ালের কাঠের ঘর, বিছানা, দোলনা, বিড়াল বহনের জন্য ব্যাগ, খামচানোর জন্য স্ট্রেচিং বোর্ড, পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের কদর বাড়ছে বলে জানালেন রোজী। পুরুষ ও নারী বিড়ালের জন্য কাপল বা যুগল পোশাক তৈরি, ডাইনিং টেবিল, ক্যাট ট্রি বা বিড়ালের গাছসহ নানান পণ্য তৈরির পরিকল্পনার কথাও তিনি জানান।

কেকে/ এমএস
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে ঘিরে সমালোচনার ঝড়
ট্রাক চাপায় নিহত শিবচরের ২ ছাত্রদল নেতার বাড়িতে শোকের মাতম
দীর্ঘ বিরতির পর ফের ধারাবাহিকে স্বস্তিকা
ভারতীয় ৩ কফ সিরাপে বিষাক্ত উপাদান, এক মাসে ১৭ শিশুর মৃত্যু
রাজনীতিবিদ তরুণ সমাজের ঐক্য, মানবিক সোনারগাঁ গঠনে নতুন দিগন্ত

সর্বাধিক পঠিত

মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রৌমারী মহিলা কলেজে নিয়োগ কার্যক্রম
সোনারগাঁয়ে রেস্টুরেন্টে ভোক্তা অধিকারে জরিমানা
ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম
গাজীপুরে বন্ধ করার পরও আবার শুরু লটারির মেলা
জমি দখলকে কেন্দ্র করে হামলা, শ্লীলতাহানির অভিযোগ

বেগম রোকেয়া- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close