প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে টেকসই ও পরিবেশবান্ধব কৃষি প্রশিক্ষণ দিয়েছে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) কৃষিভিত্তিক সংগঠন ‘শস্যবৃত্ত’।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কর্ণাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি ছিলেন হাবিপ্রবির উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. এনামউল্ল্যা এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শফিকুল ইসলাম সিকদার।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ড. এস এম এমদাদুল হাসান, প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. শামছুজ্জোহা, রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. আবু হাসান এবং শস্যবৃত্তের উপদেষ্টামণ্ডলী ও সদস্যরা।
শস্যবৃত্তের সভাপতি আখিরুজ্জামান সৌরভ এর সভাপতিত্বে আয়োজিত কর্মসূচিতে কৃষকদের কৃষি সংক্রান্ত নানা সমস্যার উত্তর দেন সংগঠনের সদস্যরা। এছাড়াও অনুষ্ঠিত হয় কৃষিভিত্তিক ভিডিও প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মো. মহিদুল হাসান উদ্ভাবিত ‘ট্রাইকোডার্মা’ ৫০ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। এর সঙ্গে বিতরণ করা হয় ট্রাইকো কম্পোস্ট ও পোকামাকড় নিধনের ফাঁদ। প্রফেসর মহিদুলের পিএইচডি শিক্ষার্থী কৃষিবিদ মো. শরিফুল ইসলাম-কে এ সময় ধন্যবাদ জানান তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, “নিঃসন্দেহে শস্যবৃত্ত ভালো কাজ করছে। আজকে তারা কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে ট্রাইকোডার্মা, ট্রাইকো কম্পোস্ট সহ বিভিন্ন কৃষি উপকরণ বিনামূল্যে বিতরণ করেছে। এতে করে কৃষকেরা উপকৃত হবে। আপনারা প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষক আপনাদের সেভাবে আধুনিক কৃষি সম্পর্কিত জ্ঞান নেই। আপনারা যদি বৈজ্ঞানিকভাবে কৃষিকাজ করেন তাহলে আপনারা উৎপাদনশীল ফসল ফলাতে সক্ষম হবেন। আমাদের কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থীরা আপনাদের কল্যাণের কথা ভেবে শস্যবৃত্ত গড়ে তুলেছে এবং আপনাদের মাঝে কৃষি সেবা নিয়ে এসেছে।”
তিনি আরও বলেন, “শস্যবৃত্ত হয়তো সবসময় আপনাদের পাশে থাকতে পারবে না। তবে তারা তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে। তাই আপনাদের উচিত হবে আপনাদের সন্তানদের শিক্ষিত করা। আপনাদের সন্তানেরা শিক্ষিত হলে তারাই বৈজ্ঞানিকভাবে চাষাবাদের ক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগিতা করতে পারবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি আপনাদের অঞ্চলে অবস্থিত। এলাকাবাসী হিসেবে আপনাদের কিছু হক আছে। তাই আমরা চাই এলাকাবাসী হিসেবে আপনারা কিছু সুযোগ সুবিধা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রহণ করুন। আমাদের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি স্কুল আছে। সেখানে আপনাদের সন্তানদের পাঠান। আমরা তাদের গুনগত মানের পড়াশোনার বিষয়ে সহযোগিতা করবো। আমরা প্রয়োজনে সেখানে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করবো, শিক্ষক সংখ্যা বৃদ্ধি করবো। আমাদের শিক্ষার্থীরা আপনাদের সবসময় সহযোগিতা করার চেষ্টা করবে। সেইসাথে প্রত্যাশা থাকবে আপনারাও আমাদের শিক্ষার্থীদের সাথে ভালো আচরণ করবেন।তাদেরকে নিজ সন্তানের মতো মনে করবেন।”
উপাচার্য আরও বলেন, “শস্যবৃত্তের ইতিবাচক কাজকে ত্বরান্বিত করার জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো। যেন তাদের ভালো কাজের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকেরা উপকৃত হতে পারেন।”
উল্লেখ্য, “নতুন চিন্তা, নতুন দৃষ্টি—কৃষির স্বপ্নে শস্যবৃত্তের সৃষ্টি” এই স্লোগানকে ধারণ করে গড়ে ওঠা সংগঠনটি বিগত বন্যায় লক্ষাধিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণসহ আর্থিক সহায়তা করেছে।
কেকে/ আরআই