বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, বিভিন্নভাবে ইনিয়ে-বিনিয়ে বর্তমানে যারা রাষ্ট্রক্ষমতা উপভোগ করছে, শিগগির নির্বাচন হোক তারা তা চায় না। আরো দুই-একটি রাজনৈতিক শক্তি আছে যারা বিভিন্নভাবে বর্তমান সরকারের উপকারভোগী। সেজন্য তারাও চায় না বিএনপি যেন তাড়াতাড়ি ক্ষমতায় না আসে।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) আইবি মিলনায়তনে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ এ্যাব’র উদ্যাগে ‘গণতান্ত্রিক উন্নত বাংলাদেশ বির্নিমাণে প্রকৌশলীদের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, আমরা জনগণের ভোটের ওপর বিশ্বাস রাখি। আমরা গণতান্ত্রিক চর্চাকে যেন অব্যাহত রাখি। বাংলাদেশে এ মুহূর্তে দরকার ধৈর্য, সহনশীলতা এবং গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি অব্যাহত রাখা। তার মধ্য দিয়ে আমরা আগামী দিনের শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, সমাজ স্থাপন করতে পারব। ভালো গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি প্রচলনের মধ্য দিয়ে আগের দিনের ফ্যাসিস্ট ও ফ্যাসিবাদী অপসংস্কৃতি বিলুপ্ত করতে পারব।
তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্ম কী চায়? তরুণ প্রজন্মের রাজনৈতিক ভাবনাকে আমাদের ধারণ করতে হবে। এই সমাজকে এগিয়ে নিতে গেলে, বাংলাদেশের তরুণ সমাজের চিন্তাকে আমাদের এগিয়ে নিতে হবে। আগামীর বাংলাদেশ তারা কীরকম দেখতে চায় আমরা সেই ভাবনাকে ধারণ করব। আগামীতে প্রযুক্তি ও মেধানির্ভর রাজনীতি এবং সরকারের সমস্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা এখানে যারা এসেছেন এ সব বিষয় বাস্তবায়নের জন্য অত্যন্ত সততার সঙ্গে আমাদের পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। আপনারাই পারবেন জাতির অবকাঠামো আবার সোজা করতে। জাতির উন্নয়নের মেরুদণ্ডকে আবার সোজা করবেন—এ বিশ্বাস আমার আছে। আপনারা একত্রিত হয়েছেন নিজেদের মধ্যে যেন কোনো দলাদলি না থাকে। যে কোনো জাতীয় উন্নয়নের ক্ষেত্রে আপনারা অবদান রাখবেন।
তিনি বলেন, আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ, সুশাসন দেওয়ার চ্যালেঞ্জ, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার চ্যালেঞ্জ এবং গণতান্ত্রিক সংস্কারের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠা বিনির্মাণের চ্যালেঞ্জ। এবং আগামী দিনের সংসদকে যাতে জনগণের প্রকৃত গণতান্ত্রিক সংসদ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা যায় তার চ্যালেঞ্জ। এগুলোর সবই আমাদের একই সময়ে মোকাবিলা করতে হবে।
তিনি বলেন, যারা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করতে পারেননি। সরকার ঘোষণা করে যে কোনো সময় তারা স্বাক্ষর করতে পারবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য কমিশন এবং প্রধান উপদেষ্টা আরো আলাপ করবেন বলে জানিয়েছেন। আলাপ হতেই পারে। আমরা এটাকে গণভিত্তি, আইনি ভিত্তি দিতে চাই। যার মধ্য দিয়ে সংস্কার প্রস্তাবগুলো একটি স্থায়ী রূপ নেবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সচিব, আইইবির সাবেক প্রেসিডেন্ট, এ্যাব’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং প্রধান উপদেষ্টা প্রকৌশলী এএনএইচ আখতার হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বুয়েটের আহসানউল্লাহ হলের সাবেক ভিপি, এ্যাব ঢাকা বিভাগের সাবেক সেক্রেটারি আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ও আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন তালুকদার।
আলোচনা সভায় অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন প্রকৌশলী খালিদ হাসান চৌধুরী পাহিন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং এ্যাব’র উপদেষ্টামণ্ডলীর সম্মানিত সদস্য, প্রকৌশলী সফিউল আলম তালুকদার সবুজ, এ্যাব’র উপদেষ্টামণ্ডলীর সম্মানিত সদস্য প্রকৌশলী আলমগীর হাছিন আহমেদ, এ্যাব’র সাবেক মহাসচিব ও সদস্য, আহ্বায়ক কমিটি, প্রকৌশলী মিয়া মুহাম্মদ কাইউম, আইইবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সদস্য, আহ্বায়ক কমিটি, এ্যাব, প্রকৌশলী আতিকুর রহমান, এ্যাব’র উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, প্রকৌশলী খান মনজুর মোরশেদ, আইইবি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ভাইস-প্রেসিডেন্ট (একাডেমিক ও আন্তর্জাতিক) এবং সদস্য, আহ্বায়ক কমিটি, এ্যাব, প্রকৌশলী শোয়েব বাশরী হাবলু।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম তুহিন, সাবেক সংসদ সদস্য, এ্যাব’র সাবেক মহাসচিব এবং আহ্বায়ক, এ্যাব এবং সঞ্চালনায় ছিলেন প্রকৌশলী কেএম আসাদুজ্জামান চুন্নু, সদস্য, আহ্বায়ক কমিটি, এ্যাব এবং প্রকৌশলী শফিউল আজম ফাহিম, সদস্য, আহ্বায়ক কমিটি, এ্যাব। সভায় উপস্থিত ছিলেন মিডিয়া উপ-কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী মুহাম্মদ আহসানুল রাসেল, সদস্য, আহ্বায়ক কমিটি এবং সহকারী সাধারণ সম্পাদক (প্রশাসন ও অর্থ আইইবি) এবং মিডিয়া উপ-কমিটির সদস্যসচিব প্রকৌশলী কেএম ফারজাদুল ইসলাম মিরন।
কেকে/এজে