চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার জহিরাবাদ ইউনিয়নে বিএনপির নেতা মো. সুরুজ আলী প্রধানের (৬০) বাড়িতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হামলার অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনায় সুরুজের স্ত্রী ও দুই পুত্রসহ পাঁচজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকাল ৪টার দিকে ইউনিয়নের সানকি ভাঙ্গা গ্রামে আওয়ামী লীগের নেতা জাফর আহমেদ মল্লিকের নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আহতদের উদ্ধার করে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) মো. সুরুজ আলী প্রধানথানায় এজাহার দাখিল করেছেন।
হামলাকারীরা হলেন জহিরাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাফর আহমেদ মল্লিক, সহসভাপতি নেয়ামত উল্লাহ লেবু মল্লিক, ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা শুভ মল্লিক, আওয়ামী লীগ নেতা আমান উল্লাহ মল্লিক, মালুম মল্লিক, টিপু মল্লিক, যুবলীগ নেতা খলিল মল্লিক, নিজাম উদ্দিন মল্লিক, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান খান, ইমরান মোল্লাসহ ৭-৮জন দুষ্কৃতিকারী।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, দীর্ঘদিন আওয়ামী সরকারের ছত্রছায়ায় থাকা জাফর মল্লিক এলাকায় দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। বুধবার (১৫ অক্টোবর) লিফলেট বিতরণের সময় তারা বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার হুমকি দেয়। এর জের ধরে শুক্রবার বিকালে ১০ জন নামীয় ও ৭-৮ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সুরুজ আলীর বাড়িতে ঢুকে তার স্ত্রী সাজেদা বেগম (৫৩) ও দুই পুত্র সাকিল (২২) ও জামান প্রধানের (৩৫) ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা ধারালো অস্ত্র ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে তাদের মারাত্মক জখম করে এবং স্ত্রী সাজেদা বেগমের পরিধেয় বস্ত্র ছিঁড়ে শ্লীলতাহানিরও চেষ্টা চালায়। এ সময় ১০ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগও করা হয়েছে।
মো. সুরুজ আলী প্রধান বলেন, ‘তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে লিফলেট বিতরণ করছিলাম। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ক্যাডার বাহিনী আওয়ামী লীগ সমর্থিত সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে আমার পরিবারকে হত্যার চেষ্টা করে।’
উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. বশির আহাম্মদ খান ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘আওয়ামী দুঃশাসনের অবসান হলেও তাদের সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধ হয়নি। আমাদের কর্মীদের রক্তে ভিজে যাচ্ছে গণতন্ত্রের পথ। এ হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’
মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রবিউল হক বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।’
বলে রাখা ভাল, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরও স্থানীয়ভাবে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি এলাকায় সক্রিয় থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।
কেকে/ এমএ