‘মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রৌমারী মহিলা কলেজে নিয়োগ কার্যক্রম’ শিরোনামে ১৩ অক্টোবর দৈনিক খোলা কাগজ পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ায় নিয়োগ পরীক্ষা স্থাগিত করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাতে দায়িত্বরত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস ছামাদ খাঁনের স্বাক্ষরিত এক নোটিশের মাধ্যমে এ নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন দায়িত্বরত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ।
জানা গেছে, রৌমারী মহিলা ডিগ্রি কলেজে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা পরিপত্র ও অফিস আদেশ অমান্য করে কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার অভিযোগ উঠে। কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল হাশেম মাস্টার এবং দায়িত্ব ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস ছামাদ খাঁন যোগসাজশ করে গোপনে নিয়োগ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।
রৌমারী মহিলা ডিগ্রি কলেজে পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান ও কম্পিউটার বিষয়ে চারজন ল্যাব সহকারী নিয়োগ দেওয়া হবে। এতে আবেদন করেছিলেন ৫৭ জন। গত ১৩-১৪ অক্টোবর তাদের মধ্যে ইন্টারভিউ কার্ড বিতরণ করা হয়। পরীক্ষা ও সাক্ষাৎকার নেওয়ার কথা ১৮ অক্টোবর। অথচ এই নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ রাখতে গত ২৮ সেপ্টেম্বর পরিপত্র জারি করে ও ৫ অক্টোবর অফিস আদেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
অভিযোগ রয়েছে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মোমদেল হোসেন অবসরে গেলে সহকারী অধ্যাপক (বাংলা) সিরাজুল ইসলামকে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই শূন্য পদগুলোতে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন গভর্নিং বডির সভাপতি ও বিএনপি নেতা আবুল হাশেম মাস্টার।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকার পরও কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি নিয়োগের বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। নীতিমালা বহির্ভূত কাজে অপারগতা প্রকাশ করলে শুরু হয় ওই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে চক্রান্ত। এরই ধারাবাহিকতায় দুর্গাপূজার ছুটিকালীন সময়ে ওই সভাপতি ও বিএনপি নেতার প্রত্যক্ষ মদদে রৌমারী মহিলা ডিগ্রি কলেজ শিক্ষা নীতিমালা ও জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে কলেজের সহকারী অধ্যাপক (ইংরেজি) ও সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস ছামাদ খাঁনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ ছাড়া কলেজের সহকারী অধ্যাপক (ইসলামের ইতিহাস) আব্দুল কাদের জ্যেষ্ঠতায় আব্দুস ছামাদ খাঁনের চেয়েও সিনিয়র। তা সত্ত্বেও নীতিমালা লঙ্ঘন করে দায়িত্ব দেওয়া হয় আব্দুস ছামাদ খাঁনকে। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই গভর্নিং বডির সভাপতি ও বিএনপি নেতা আবুল হাশেমের সঙ্গে যোগসাজশে ১৮ অক্টোবর নিয়োগ কার্যক্রম শেষ করার জন্য চক্রান্ত চলছে বলে জানা গেছে। এ নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও এই নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ায় শিক্ষক মণ্ডলী, স্থানীয় অভিভাবক ও সচেতন মহলে ক্ষোভও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়।
দায়িত্বরত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস ছামাদ খাঁন বলেন, আমাদের কলেজে অধ্যক্ষ নেই। অধ্যক্ষ ও ল্যাব সহকারী চারজন নিয়োগ জন্য নিয়োগ বোর্ড গঠন করা হয়। গত শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাতে ফোন কলের মাধ্যমে নিয়োগ বোর্ডের একজন অসুস্থতার খবর পাই। অসমাপ্ত নিয়োগ বোর্ড দিয়ে নিয়োগ হবে না, তাই আমরা নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেছি। পরবর্তীতে এ নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে।
কেকে/এআর