ফরিদপুরসহ সারাদেশে প্লাস্টিকের ব্যাগ, পলিথিনের কারণে বাঁশের তৈরি খালই হারিয়ে যাচ্ছে।
একসময় বাজার থেকে গ্রাম বা শহরের মানুষ মাছ, কাঁচা বাজার কিনে খালই এর মাধ্যমে বাড়িতে আনতো। এমন কি মাছ ধরার পর, বিশেষ করে অতিরিক্ত মাছ, এই খালইতে ভিজিয়ে বা সংরক্ষণ করা হতো। খাল, বিল কিংবা পুকুরের পাশে এই খালই ঝুলিয়ে বা খুটির সাথে স্থাপন করে বিক্রির জন্য রাখা হতো জীবিত মাছ।
খালই’ বলতে বোঝায় ছোট ঝুড়ির মতো একটি বাঁশেন তৈরি পাত্র। এটি ঝুড়ি নয়, একটি বহুমুখী সহায়ক। যা ধান, চাল, ডাল, মরিচসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হতো। বাজারের সদাই কিংবা সামাজিক অনুষ্ঠানের খাবার বহনেও খালইয়ের জুড়ি মেলা ভার। বিয়েবাড়িতে চাল,ডাল, মিষ্টি ও উপহার সামগ্রী বহনের ক্ষেত্রে খালই ছিল অবিচ্ছেদ্য অংশ।
খালই তৈরির প্রক্রিয়াটিও ছিল এক ধরনের শিল্প। কাঁচা বাঁশ কেটে ফালি করা, সেগুলো শুকিয়ে নিয়ে নিখুঁতভাবে বুনন, এই পুরো ধাপই ছিল সময়সাপেক্ষ ও ধৈর্যের পরীক্ষা। গ্রামের কারিগররা নিপুণ হাতে গড়ে তুলতেন একেকটি খালই। সোজা, আঁকাবাঁকা বুননের সমন্বয়ে তৈরি এই পাত্র হতো শক্তপোক্ত, টেকসই এবং দীর্ঘস্থায়ী।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই দৃশ্য পাল্টে গেছে। আজ আর গ্রামীণ হাটে খালইয়ের দৃশ্য চোখে পড়ে না।
বোয়ালমারী উপজেলার ময়না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কালিপদ চক্রবর্ত্তী বলেন, প্লাস্টিকের ব্যাগ ও পলিথিনের কারণে বাঁশের তৈরি খালই হারিয়ে যাচ্ছে যার জন্য কোন বাড়ি বা বাজারে বাঁশের তৈরি খালই দেখা যায় না।
তিনি আরও বলেন, বাঁশঝাড় কমে যাওয়া, তাছাড়া খালই বানানো কষ্টসাধ্য, এর ন্যায্য মজুরি না পাওয়ার কারণে খালই এর ব্যবহার ফরিদপুরসহ সারাদেশে থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।
কেকে/বি