ছোটবেলা থেকেই দারিদ্র্যের সাথে লড়াই করতে হয় নিহালকে। কিন্তু ২০২২ সালে এক মর্মান্তিক বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনায় দুটি হাত হারান।
২০০২ সালে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার গুনারিতলা ইউনিয়নের মোসলেমাবাদ গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারে সুলতান আহম্মেদ ও খাদিজাতুন কুবরা দম্পতির ঘরে মো. মেহেরাব হোসাইন নিহাল জন্মগ্রহণ করেন।
সে শৈশবে বাবাকে হারান। মায়ের স্নেহে বড় হয়ে ওঠেন।
স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি আর সংসার করেননি। সন্তানকে নিয়ে ফিরে আসেন বাবার বাড়ি মাদারগঞ্জের মোসলেমাবাদ গ্রামে। কিন্তু ভাগ্য যেন তাদের প্রতি আরও নির্মম হয়ে ওঠে। নিহাল উপজেলার নাদাগাড়ি এলাকায় ঘরের ওয়ারিংয়ের কাজ করার সময় বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনায় দু’টি হাত হারান। তখন সে এইচএসসি প্রথম বর্ষের পরীক্ষার্থী ছিলেন এবং দ্বিতীয় বর্ষের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
দমে যাননি নিহাল। দুর্ঘটনার এক বছর পরই সংসারের হাল ধরেন। প্রতিবন্ধী শরীর নিয়েই শুরু করেন চায়ের দোকান। নিজের পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাসে ধীরে ধীরে গড়ে তোলেন জীবনের নতুন অধ্যায়। এখন সে নিজেই সংসারের প্রধান উপার্জনকারী।
নিহাল বর্তমানে প্রতিবন্ধী ভাতার সুবিধা পাচ্ছেন, তবে তার মা খাদিজাতুন কুবরা এখনও কোনো সরকারি সুবিধা পাননি।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তৌফিকুল ইসলাম খালেক বলেন, “নিহাল প্রতিবন্ধী ভাতার সুবিধা পাচ্ছে। সামনে বরাদ্দ পাওয়া গেলে তার মা’কে বিধবা ভাতার আওতায় আনার ব্যবস্থা করা হবে।”
জীবনের নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে নিহাল আজ প্রমাণ করেছেন, শারীরিক অক্ষমতা নয়, মানসিক দৃঢ়তাই মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায়। তার অনুপ্রেরণামূলক গল্প সকলের জন্য হয়ে উঠেছে সাহস ও আশার প্রতীক।
কেকে/বি