নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী পৌরসভার বর্জ্য ফেলার নির্ধারিত জায়গা ও পর্যাপ্ত ডাস্টবিনের অভাবে জনজীবনে অপ্রতিরোধ্য সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে পৌর এলাকার বাজারগুলোর বর্জ্য ফেলা হচ্ছে নোয়াখালী-রামগঞ্জ সড়কের পাশে শিমুলিয়া এলাকায়। এতে করে পরিবেশ দূষণ ও তীব্র দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে স্থানীয়দের জীবনযাপন।
মশা-মাছি, দুর্গন্ধ ও ধোঁয়ার কারণে এলাকাবাসীসহ পথচারীরা চরম ভোগান্তির মধ্যে রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে সমস্যার সমাধানে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানানো হলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
পৌরসভা জানিয়েছে, প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ডাম্পিং সেন্টার নির্মাণাধীন রয়েছে। তবে সেটি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত স্থানীয়দের এই দুর্ভোগ পোহাতে হবে।
জানা গেছে, সোনাইমুড়ী পৌরসভা ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এখানে ৯ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী, একজন সুপারভাইজার, দুইটি ট্রাক ও আটটি ভ্যান রয়েছে। তবে জনবল ও যন্ত্রপাতির স্বল্পতায় পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পর্যাপ্ত নয়। ফলে পৌরসভার অনেক জায়গা এক বিশাল ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।
নোয়াখালী-রামগঞ্জ সড়কের পাশের শিমুলিয়া এলাকায় প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা বর্জ্য ফেলে আসছেন। দুর্গন্ধের কারণে পথচারীদের নাক চেপে চলতে হয়।
শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা আবু হানিফ জানান, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ময়লা ফেলার কারণে এখানে বসবাস ও ব্যবসা করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
তাহমিনা আক্তার নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা অভিযোগ করেন, দূর্গন্ধের কারণে চলাফেরা করা দায় হয়ে গেছে, আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ছি।
মাদরাসা শিক্ষার্থী নিলিমা ইয়াসমিন বলেন, ময়লার দুর্গন্ধের কারণে মাদরাসায় যাওয়া মুশকিল হয়ে যাচ্ছে।
শিমুলিয়া গ্রামের ইব্রাহিম জানান, পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোর বাসিন্দারা ময়লার দুর্গন্ধে বসবাসে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। শিশু ও বৃদ্ধদের মধ্যে নানা ধরনের রোগবালাই দেখা দিয়েছে। তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সোনাইমুড়ী মডেল মসজিদের মুসল্লিরা জানিয়েছেন, ময়লার ধোঁয়া ও দুর্গন্ধে নামাজে অসুবিধা হচ্ছে, ফলে মসজিদে মুসল্লীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে।
সবুজ হোসেন নামে এক বাসিন্দা বলেন, ময়লার দুর্গন্ধে মসজিদে যাওয়া, নামাজ পড়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য এটি বড় একটি ঝুঁকি।
সোনাইমুড়ী মডেল মসজিদের মুসল্লি ইকবাল বলেন, মসজিদ সংলগ্ন জায়গায় পৌর কর্তৃপক্ষ ময়লা ফেলেছে, এতে নামাজে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
সোনাইমুড়ী পৌর নির্বাহী মোস্তাক আহমেদ বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে এখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে। ডাম্পিং সেন্টারের কাজ দ্রুত শেষ করতে আমরা চেষ্টা করছি।
এ বিষয়ে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার বলেন, প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ডাম্পিং সেন্টার নির্মাণ হচ্ছে। এর ফলে স্থানীয়দের দুর্ভোগ কমবে।
কেকে/ আরআই