শারদীয় দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমী উপলক্ষে ফরিদপুর শহরের চরকমলাপুর রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমে ঐতিহ্যবাহী কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলে পূজার আনুষ্ঠানিকতা। সকাল থেকেই আশ্রম প্রাঙ্গণে ভক্ত-দর্শনার্থীদের ঢল নামে।
এবার কুমারী রূপে পূজিত হন ফরিদপুর শহরের সানরাইজ প্রি ক্যাডেট স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী অসমী মজুমদার। তার পিতা ঔষধ ব্যবসায়ী শহরের চর কমলাপুর এলাকার দীপক মজুমদার ও মাতা কৃষ্ণা ব্যানার্জি। পূজার আগে তাকে গোসল করিয়ে নতুন পোশাক পরানো হয়। কপালে সিঁদুর, পায়ে আলতা, হাতে ফুল দিয়ে সুসজ্জিত আসনে বসিয়ে ষোড়শোপচারে পূজা করা হয়।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রামকৃষ্ণ মিশনের কোষাধ্যক্ষ স্বামী সুমধুরানন্দ মহারাজ। পূজারীর দায়িত্ব পালন করেন পুরোহিত নীলরতন ঝা। পূজা শেষে ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
হিন্দুশাস্ত্র অনুসারে, দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমীতে ১ থেকে ১৬ বছরের অজাতপুষ্প সুলক্ষণা কুমারীকে পূজা করার বিধান রয়েছে। মা দুর্গার রূপগুলোর মধ্যে কুমারী অন্যতম। কুমারী পূজার মাধ্যমে নারী জাতি পূত-পবিত্র ও মাতৃভাবাপন্ন হয়ে ওঠে বলে বিশ্বাস করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের পুরোহিত নীলরতন ঝা বলেন, ‘মা দুর্গার যে কয়টি রূপ রয়েছে তার মধ্যে কুমারী অন্যতম। মূলত মা দুর্গাকে শিশু রূপে যে পূজা করা হয় তাকেই কুমারী পূজা বলা হয়। এজন্য প্রতিবছর অষ্টমীর দিন এ পূজার আয়োজন করা হয়।’
মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী সুরবানন্দ মহারাজ, ‘প্রতিবারের মতো এবারো কুমারী পূজার আয়োজন করা হয়েছে। শাস্ত্রমতে নির্বাচিত কুমারীকে নাম দিয়ে বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেবীজ্ঞানে পূজা করা হয়। ভক্তরা কুমারী বালিকার মধ্যে শুদ্ধ নারীর রূপ চিন্তা করে তাকে দেবী মনে পূজা করেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘শাস্ত্রমতে কুমারী পূজিতা হলে শুভশক্তির বিকাশ ও অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটে। এতে সমাজে অশান্তি দূর হয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়।’
এদিকে, এ বছর ফরিদপুর জেলার নয়টি উপজেলায় মোট ৭৫৮টি পূজা মণ্ডপে মহাঅষ্টমীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ভক্তরা নতুন পোশাক পরে ভিড় জমান। মন্ত্রোচ্চারণ, ঢাক-ঢোলের বাজনা, উলুধ্বনি ও শঙ্খধ্বনিতে পুরো এলাকাজুড়ে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে।
কেকে/ এমএস