বাংলাদেশে প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ধারায় যুক্ত হলো নতুন এক অধ্যায়। জাতীয় বস্ত্র প্রকৌশল ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (নিটার) শিক্ষার্থীদের স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান সিএলকেবিএক্স সফলভাবে তৈরি করেছে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট স্ন্যাকস ভেন্ডিং মেশিন।
এই স্মার্ট স্ন্যাকস ভেন্ডিং মেশিনটির বর্তমানে প্রায় ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে বাজারে আসার অপেক্ষায়। এই মেশিন থেকে ক্রেতারা সহজেই চিপস, বিস্কুট, কেক, বোতলজাত ও ক্যানজাত পানীয়সহ নানা ধরনের স্ন্যাকস পণ্য সংগ্রহ করতে পারবেন এবং লেনদেন হবে পুরোপুরি ক্যাশলেস। অর্থাৎ ব্যবহারকারীরা এনএফসি কার্ড, ব্যাংক কার্ড এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এসএসএল কমার্জ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সহজেই মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন।
জানা যায়, এই উদ্ভাবনের পেছনে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছেন নিটারের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. মুয়াজ রহমান। পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষক টেকনিক্যাল বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এই উদ্ভাবনের মূল শিক্ষার্থী উদ্ভাবকরা হলেন মো. ফরহাদ হোসেন মুন, মো. আম্মার বিন মহসিন, মো. মাহমুদুল ইসলাম, হাসিবুল হাসান মবিন, মোহাম্মদ আলী। যারা নিজেদের দক্ষতা ও উদ্ভাবনী মনোবল দিয়ে এই প্রকল্পটি সফল করতে পেরেছেন।
পুরো প্রকল্পটি সম্পূর্ণ নিজেদের অর্থায়নে বাস্তবায়ন করেছেন সিএলকেবিএক্স দলের সদস্যরা। তাদের বিশ্বাস, যদি নিটার প্রশাসন কিংবা কোথাও থেকে ফান্ডিং পাওয়া যায় তবে এই উদ্যোগের মানোন্নয়ন ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা আরও বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।
এর আগে, সিএলকেবিএক্স কফি ভেন্ডিং মেশিন তৈরি করে আলোচনায় আসে, এবার তারা দেশের প্রযুক্তি খাতে আরেকটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হিসেবে স্মার্ট স্ন্যাকস ভেন্ডিং মেশিন তৈরি করল। যা ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডিং নিয়েই বিশ্বমানের প্রযুক্তি বাজারে আনার লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে এগুচ্ছে।
এবিষয়ে দলের এক সদস্য বলেন, আমরা গর্বিত যে বিদেশি প্রযুক্তির ওপর নির্ভর না করে নিজেদের উদ্যোগে স্মার্ট স্ন্যাকস ভেন্ডিং মেশিন তৈরি করতে পেরেছি। আমাদের লক্ষ্য হলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আবাসিক এলাকা এবং জনসমাগমস্থলে এই মেশিন স্থাপন করে দেশীয় প্রযুক্তির সক্ষমতাকে সবার সামনে তুলে ধরা।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে অটোমেশন ও স্মার্ট লেনদেন ব্যবস্থা দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, সিএলকেবিএক্স’র এই উদ্যোগ দেখিয়ে দিয়েছে, সুযোগ পেলে তরুণ শিক্ষার্থীরাই প্রযুক্তি উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম। আর নিটার শিক্ষার্থীদের এই প্রচেষ্টা শুধু একটি ভেন্ডিং মেশিনেই সীমাবদ্ধ নয় বরং দেশীয় উদ্ভাবনের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
কেকে/ আরআই