সীমান্ত এলাকায় মাদক পাচার থেকে নেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে মায়ানমার থেকে মাদক পাচারকালে প্রতিনিয়ত ধরা পড়ছে মাদক। তারপরেও মাদক কারবারিরা থেমে নেই। টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এবং পুলিশের যৌথ টহল দল এক বিশেষ অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ একজন পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে।
বিজিবি নিজস্ব গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পারে, মায়ানমার থেকে ইয়াবার একটি বড় চালান সাগর পথে পাচার করে টেকনাফ সমুদ্র উপকূলবর্তী নোয়াখালীপাড়া এলাকায় লুকিয়ে রাখা হয়েছে। মাদক ও পাচারকারীদের ধরতে, বিজিবির টেকনাফ ব্যাটেলিয়ানের অধিনায়ক একটি যৌথ অভিযানের পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ২ বিজিবির অধিনায়ক, ভারপ্রাপ্ত উপঅধিনায়ক এবং অফিসার ইনচার্জ, টেকনাফ মডেল থানাসহ বিজিবি ও পুলিশের একাধিক দলের সমন্বয়ে দরগারছড়া এলাকায় বিশেষ অভিযানটি পরিচালনা করা হয়। এই অভিযানে মাদক পাচারকারী মো. ইসমাইলকে (৩২) আটক করে তার স্বীকারোক্তি এবং বিজিবির বিশেষ ডগ স্কোয়াডের (নারকোটিক্স) সাহায্যে নোয়াখালীপাড়ায় তাহের নামক এক ব্যক্তির বসতঘরের পাশে মাটির নিচে অত্যন্ত গোপনে পুঁতে রাখা জায়গাটি চিহ্নিত করা হয়। পরে, মাটি খুঁড়ে ১ লাখ ২০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। এই সফল উদ্ধার অভিযান বিজিবি ও পুলিশের পেশাদারিত্বের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।—জানায় বিজিবি
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, মায়ানমার থেকে আমদানি করা বিপুল পরিমাণ এই মাদক সাবরাং এলাকার এক মাদক ব্যবসায়ীর কাছে হস্তান্তরের জন্য মো. ইয়াসিন ও মো. তাহের নামক এক ব্যক্তির মাধ্যমে আনা হয়েছিল। ইয়াসিনকে আটক করতে পারেনি বলে জানান বিজিবি। তবে তাকে ধরার জন্য সব ধরনের কৌশল অবলম্বন করছে বলে জানিয়েছে।
আরও জানা যায়, মানব পাচারকারী চক্র সমুদ্রপথে আগত রোহিঙ্গা নাগরিকদের ব্যবহার করে মায়ানমার হতে বাংলাদেশে এই ইয়াবার চালান প্রবেশ করায়।
অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান পিএসসি জানান, এই সফল মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানটি সীমান্ত সুরক্ষা ও অপরাধ দমনে বিজিবির কঠোর ও জিরো টলারেন্স নীতিরই প্রতিফলন। আটককৃত আসামীর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
এদিকে র্যাব-১৫ অভিযান পরিচালনা করে টেকনাফ থেকে আরো এক লাখ বিশ হাজার ইয়াবাসহ দুই মাদক কারবারিকে আটক করেছে র্যাব।
শুক্রবার দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের সহকারি পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) ও সহকারি পুলিশ সুপার আ. ম. ফারুক।
আটককৃতরা হলেন টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মনতলিয়া এলাকার মৃত আবুল কাশেমের ছেলে শফি উল্লাহ (৪৫) এবং একই এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে নুরুল বশর (৩৮)।
আ. ম. ফারুক বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে টেকনাফের বাহারছড়া ইঊনিয়নের মনতলিয়া এলাকায় কতিপয় লোকজন মাদকের বড় একটি চালান অন্যত্রে পাঠানোর জন্য অবস্থান করার খবর পায় র্যাব। পরে র্যাবের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়।
তিনি আরো বলেন, ঘটনাস্থলে পৌঁছলে র্যাব সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্দেহজনক কয়েকজন পালানোর চেষ্টা করেন। এসময় ধাওয়া দিয়ে দুই জনকে আটক করা সম্ভব হলেও অন্যরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলে তল্লাশী চালিয়ে একটি ছোট বস্তা উদ্ধার করা হয়। বস্তাটি খুলে পাওয়া যায় ১ লাখ ২০ হাজার ইয়াবা।
কেকে/এজে