ঢাকার কেরানীগঞ্জের খোলামোড়া-কামরাঙ্গীরচর ঘাট। প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত হাজারো মানুষ নদী পারাপার করার জন্য এখানে ভিড় করেন। বিশাল বুড়িগঙ্গার প্রান্তবর্তী ১০–১৫ কিলোমিটার এলাকায় স্থায়ী কোনো ব্রিজ নেই, ভরসা শুধুই নৌকায়।
শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, শ্রমিকসহ সব শ্রেণির মানুষ প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়েই নদী পার হন। মাঝেমধ্যে বালুবাহী বাল্কহেড ও নৌকার সংঘর্ষের কারণে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। দীর্ঘ ৫৪ বছর পার হলেও এখানে এখনো স্থায়ী ব্রিজ নির্মিত হয়নি।
যাত্রীদের অভিযোগ, নদী পারাপারেই গরীব মানুষের অর্ধেক টাকার খরচ চলে যায়। ইজারাদার ও যাত্রীদের মধ্যে টানাহেঁচড়া, দুর্ব্যবহার ও হয়রানির অভিযোগ রয়েছে।
খোলামোড়ার তরুণ আরিফ বলেন, ব্রিজ হবে শুনে বড় হয়েছি, কিন্তু পাইনি। প্রতিদিন নদী পার হয়ে স্কুল-কলেজে যেতে যে কষ্ট, তা ভাষায় বোঝানো যায় না। তাছাড়া ইজারাদারদের ব্যবহার খুবই খারাপ। ৫/ ৭ বছরের বাচ্চাদেরও ইজারার টাকা ছাড়া বের হতে দেয়না। ব্রিজটা খুবই জরুরি।
গৃহবধূ সাদিয়া অফরিন বলেন, এক পাশে বাবার অন্য পাশে শশুড়বাড়ী, যাতায়াতের সময় তিন বাচ্চাকে নিয়ে নৌকায় উঠতে বুক কাঁপে। কখন যে দুর্ঘটনা ঘটে বলা যায় না। তার ওপর ইজারাদারদের খামখেয়ালি আচরণে ভোগান্তি আরও বেড়ে যায়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী বাদশা মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নৌকায় মালামাল আনা-নেওয়া করতে গিয়ে কত ক্ষতি হয়েছে। দুর্ঘটনায় মানুষ মরেছে, মালামাল নষ্ট হয়েছে। ব্রিজ হলে শুধু যোগাযোগই নয়, ব্যবসা-বাণিজ্যও এগিয়ে যাবে। কিন্তু এত বছরেও হয়নি।
কেরানীগঞ্জের সাবেক এমপি আমান উল্লাহ আমান জানান, বাবুবাজার ব্রিজ, বসিলা ব্রিজ আমরাই করেছি, এটাও আমরা করবো। বিএনপি ক্ষমতায় এলে সবার আগে খোলামোড়া-কামরাঙ্গীরচর ব্রিজ হবে।
দুই পাড়ের মানুষ এখন শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, বাস্তবায়ন দেখতে চান। খোলামোড়া-কামরাঙ্গীরচর ব্রিজ হোক কি হবে — সেটাই এখন প্রশ্ন।
কেকে/ আরআই