ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন খাল-বিল, নদী-নালাতে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার চিত্র এখন আর তেমন দেখা যায় না। এক সময় বড়শি দিয়ে মাছ ধরার ঐতিহ্য ছিল গ্রাম বাংলার প্রতিদিনের চিত্র। কিন্তু চায়না দুয়ারি, কারেন্ট জাল, ভেসাল এর করণে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার ঐতিহ্য হারিয়ে যাওয়ার পথে।
জেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, খাল-বিল,নদী-নালা, পুকুর প্রতিনিয়ত ভরাট হয়ে যাচ্ছে। মাছের চলাচলে কোন ব্যবস্থা না রেখেই তৈরি করা হচ্ছে অপরিকল্পিত বাঁধ কিংবা রাস্তাঘাট। একদিকে যেমন মাছের প্রাকৃতিক আবাসের বৈশিষ্ট্য ধ্বংস হচ্ছে অন্যদিকে বিলের মত জলাশয়ে প্রযুক্তির মাধ্যমে মাছ চাষ বর্তমানে প্রাকৃতিক জলাশয়ের মাছের বৈচিত্রকে করছে কোণঠাসা।
মৎস্য বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন, অভ্যন্তরীণ জলাশয়ে দেশীয় মাছের উৎপাদন ক্রমেই নিম্নমুখী হচ্ছে এবং দেশি মাছের প্রজাতি দিন দিন কমে যাচ্ছে। তবে যা অবশিষ্ট আছে তাতে কদাচিৎ দেখা মেলে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার চিত্র। আগে গ্রামে বড় পুকুর, নদী বা বিলে দল বেঁধে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার প্রতিযোগিতা হতো। কিন্তু গ্রাম বাংলায় এখন এমন আয়োজন নেই বললেই চলে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জেলার সালথা উপজেলার একটি বিলে সজেমিনে গিয়ে দেখা যায় ছিপ দিয়ে মাছ ধরার দৃশ্য। এ সময় কয়েক জন শিশুদের সাথে কথা হলে তারা জানায়, বর্ষার সময় বা কোথাও পানিতে ছোট মাছ থাকলে আবার আমাদের স্কুল বন্ধ থাকলে সেদিন সকালে বা বিকেলে বড়শি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের দেশীয় মাছ ধরি। প্রতিদিনই সকাল আর বিকেলে দলবদ্ধ হয়ে মাছ ধরি।
ময়না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কালিপদ চক্র বর্ত্তী বলেন, আমরা মাছে ভাতে বাঙালি। এক সময় আমিও ছিপ দিয়ে মাছ ধরছি। কিন্তু খাল, বিল শুকিয়ে যাওয়ার কারণে হারিয়ে যাচ্ছে এসব চিত্র। মাছের ঐতিহ্য ফিরে পেতে দেশের জলাশায়, পুকুর, দীঘি, খাল ভরাট বন্ধ করা জরুরি।
কেকে/ আরআই