মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী থানা সংলগ্ন টঙ্গীবাড়ী ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসায় একাধিক রোগী মারা গেলেও এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। এ ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করেছে স্থানীয় জনগণ। প্রায় ভূল চিকিৎসা আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯ টার দিকে উপজেলার আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের আরিফ শেখের গর্ভবতী স্ত্রী রাবেয়াকে নিয়মিত চেকআপ করাতে টঙ্গীবাড়ী ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে আসা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জেসমিন জাহান অপারেশনের পরামর্শ দেন এবং দুপুর আড়াইটায় অস্ত্রোপচারের সময় নির্ধারণ করেন। নির্ধারিত সময়ে রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয় ও একটি ইনজেকশন দেওয়া হয়। এতে রাবেয়ার শারীরিক অবস্থা দ্রুত অবনতির দিকে গেলে ক্লিনিক কতৃপক্ষ রাবেয়াকে ডামেকে রেফার্ড করেন। সেখানে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে দেখা যায় রাবেয়ার গর্ভের সন্তান মৃত।
রাতে অপারেশন করে মৃত বাচ্চার ডেলিভারি করা হয়। রোগীর অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় রোগীকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে রাবেয়ার মৃত্যু হয়।
নিহতের বোন ফাতেমা অভিযোগ করে বলেন, “ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও ডাক্তারদের ভুল চিকিৎসার কারণেই আমার বোন ও তার সন্তান মারা গেছে। আমরা এর বিচার চাই।”
হাসপাতালের নার্স চম্পা খাতুন বলেন, আমি কিলব্যাক ইনজেকশন পুশ করার সাথে সাথেই রোগীর অবস্থা খারাপ হয়। পরে তাকে ঢাকা রেফার্ড করা হয়।
চিকিৎসক ডা. জেসমিন জাহান এ বিষয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে, তিনি ডা. কামরুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।
ডা. কামরুল হাসান বলেন, রোগী আমাদের ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। তাকে সিজার করার জন্য ওয়েটিং রুমে রাখা হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। এখানে আমরা তেমন কোনো চিকিৎসাই দিইনি।
পূর্বেও এই ক্লিনিকে সিজার করতে এসে গর্ভের সন্তানসহ প্রাণ হারান সোনারং গ্রামের পিন্টুর স্ত্রী আখি আক্তার। সেই ঘটনার পর ক্লিনিক বন্ধ করে পালিয়ে যান কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকরা। পরে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিয়ে পুনরায় চালু করা হয় ক্লিনিক।
এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. এ টি এম ওবায়দুল্লাহ বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেকে/বি