কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট ডুমখালী গ্রামে নিজের মেয়ের সদ্য ভূমিষ্ঠ নবজাতিকা শিশুকে চুরি করে চট্টগ্রাম শহরে বিক্রি করে দিয়েছেন আপন নানি। এ ঘটনায় নবজাতকের মা জেসমিন আক্তার মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতে চকরিয়া থানায় এজাহার জমা দিয়েছেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত নানী নুরুন্নাহার বেগমকে বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) ডুলাহাজারা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার বিকালে চকরিয়া থানার এসআই নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে গ্রেফতারকৃত নুরুন্নাহার বেগমের স্বীকারোক্তি মতে তাকে সাথে নিয়ে নবজাতক শিশুকে উদ্ধারে চট্টগ্রাম শহরে তার বোনের বাসায় অভিযান চালানো হয়েছে। এ সময় শিশুটি বিক্রির সঙ্গে জড়িত নানির বোনকেও গ্রেফতা করা হয়েছে।
নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, বিক্রি করে দেওয়া শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের অভিযান চলছে।
জানা গেছে, গত ২৭ আগস্ট সকালে ডুলাহাজারার মালুমঘাট ডুমখালী এলাকা থেকে কন্যাসন্তান চুরির ঘটনাটি ঘটে। ওই দিন শিশুর মা জেসমিন আক্তার বাড়ির পাশের দোকানে যাওয়ার জন্য তার সদ্য ভূমিষ্ঠ কন্যাশিশুকে নানির কাছে রেখে যান। ফিরে এসে দেখেন তার মা (নানি) শিশুকে নিয়ে উধাও হয়ে গেছে।
শিশুকে হারিয়ে জেসমিন তিন দিন ধরে বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করলেও ব্যর্থ হন। পরবর্তী তার মা (নবজাতিকার নানি) নুরুন্নাহার বেগম বাড়িতে ফিরে এলে তার কাছে শিশু কোথায় জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চেষ্টা করেন এবং একপর্যায়ে তাকে (মেয়েকে) মারধরের চেষ্টা করেন।
এজাহারে জেসমিন উল্লেখ করেন, তার মা নুরুন্নাহার, খালা ও খালাতো ভাই মিলে চুরি করে তার নবজাতিকা শিশুকে টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছে।
থানা পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃত নানি নুরুন্নাহার বেগমের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে নিশ্চিত হওয়া গেছে, নানির বোন ও তার ছেলে ওই শিশুকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী সেতু এলাকায় নিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে।
জেসমিন আক্তার বলেন, ‘আমার সংসার ভেঙে গেছে, স্বামী আমার খবর নেয় না। দুই বছরের এক সন্তান আর নবজাতক শিশুকে নিয়ে আমি ভিক্ষা করে কোনমতে জীবিকা নির্বাহ করি। সন্তান দুটোকে নিয়ে আমি বেঁচে থাকার আশা করেছিলাম। কিন্তু আমার মা নুরুন্নাহার টাকার লোভে পড়ে আমার ২০ দিন বয়সী শিশুকে চুরি করে বিক্রি করে দিয়েছে। আমি আমার সন্তানকে ফেরত চাই। জড়িতদের শাস্তি চাই।’
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, ‘আপন নানি কর্তৃৃক নাতনি চুরির ঘটনাটি সমাজের জন্য চরম অশনিসংকেত। এ ঘটনাটি প্রমাণ করেছে, একটি শিশু নানির কাছেও নিরাপদ নয়। নবজাতক ওই শিশুকে উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। যেখানেই রাখা হোক না কেন, তাকে উদ্ধার করে মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।’
কেকে/ এমএ