চট্টগ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সময়ের আগে পরীক্ষার খাতা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ছুটি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়টির শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিভাবক ও স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) ফটিকছড়ি উপজেলার কাঞ্চননগর রুস্তমিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
অভিভাবকদের অভিযোগ, নির্ধারিত সময়ের অন্তত আধাঘণ্টা আগে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে খাতা নিয়ে নেন এবং পরীক্ষা অসমাপ্ত রেখেই ছুটি দেন। এতে পরীক্ষার্থীরা পূর্ণ নম্বরের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দ্বিতীয় প্রান্তিক পরীক্ষার শেষ দিনে ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা পরীক্ষা বেলা ১টা ৩০ মিনিট থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত হওয়ার কথা থাকলেও বিদ্যালয়ে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। বিকাল ৩টা ১২ মিনিটে পরীক্ষার খাতা গুটিয়ে শিক্ষার্থীদের ছুটি দেয় শিক্ষকরা।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নীতিমালা অনুযায়ী দ্বিতীয় প্রান্তিক পরীক্ষার সময়সীমা ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট নির্ধারিত থাকলেও ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ২ ঘণ্টার বেশি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি।
৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী রিহান বলেন, স্যারেরা যখন বলেন তখন আমরা খাতা দিয়ে দিই। এতে সম্পূর্ণ প্রশ্নের উত্তর লিখতে পারিনি।
একই শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহফুজার মা মুক্তা মনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীদের অধিকার হরণ করছে। নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা দিতে না পারলে শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশ ঘটাতে ব্যর্থ হবে। বিদ্যালয়ের কার্যক্রম একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালার মধ্যে পরিচালিত হওয়া জরুরি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুক আজম মুঠোফোনে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা চিৎকার–চেঁচামেচি করে, তাই একটু আগে-পরে পরীক্ষা নিয়ে ছুটি দিয়ে দিই।’ তবে আগে পরীক্ষা শেষ করার কোনো নিয়ম আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি।
অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হাছান মুরাদ চৌধুরীকে পাওয়া যায়নি।
ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে এ ধরনের অনিয়ম কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সবার আগে, তাদের ক্ষতি হয় এমন কাজ শিক্ষকরা করতে পারেন না।’
কেকে/এজে