সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শামীমকে নৃশংসভাবে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাতে পাশের ডুমুরিয়া উপজেলার ১৮ মাইল বাজার সংলগ্ন নিজ বাসায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। শামীম (৩৮) তালা উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়নের উথালী গ্রামের শেখ আব্দুল গফ্ফার মাস্টারের ছেলে। সে দীর্ঘ বছর ধরে ১৮ মাইল বাজার এলাকায় মায়ের সঙ্গে স্ত্রীসহ বসবাস করতো।
নিহত শামীমের স্ত্রী বৃষ্টি খাতুন জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ২/৩জন যুবক তাদের বাড়িতে আসে। এসময় তারা শামীমকে বাড়ির নির্মাণাধীন ৩য় তলায় ডেকে নিয়ে যে কোনো এক সময়ে জবাই করে লাশ রেখে পালিয়ে যায়। সে সময়ে শামীমের স্ত্রী ও মা দ্বিতীয় তলায় ছিল। গভীর রাতে স্বামীকে না পেয়ে ৩য় তলায় খুঁজতে গেলে জবাই করা মৃত দেহ দেখতে পায়। এসময় পরিবারের সদস্যরা ও এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়। তবে কি কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটালো সে বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারেনি।
খবর পেয়ে ডুমুরিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শনিবার সকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে। ডুমুরিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে রাখে।
এদিকে, যুবদল নেতা শামীম নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে তালায় ব্যাপক গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক সূত্র জানা যায়, শামীমের পিতা ও মাতা উভয়ে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। ২০০১-২০০৬ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে শামীম বেপরোয়া চলাচল করতো। পিতা-মাতার একমাত্র সন্তান হওয়ায় তাকে তার পরিবার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। সেসময়ে শামীম নিষিদ্ধ চরমপন্থি সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত হওয়াসহ এলাকায় চুরি, মাদক ব্যবসা মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়ে বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিএনপি সরকার চলে যাবার পর চুরি ও মাদকসহ বিভিন্ন মামলায় জেল খাটার পর শামীম এলাকা ছাড়ে। এরমধ্যে সে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে টাকার লোভে খ্রিষ্টান ধর্ম (ঈসায়ী মজলিস) গ্রহণ করার পর থেকে এলাকার মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। শামীমের পিতা পুনরায় বিয়ে করে বর্তমানে খুলনায় বসবাস করেন এবং শামীম তার অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষিকা মা, স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে সন্তানকে নিয়ে বিগত ১০/১২ বছর ধরে আঠারোমাইল বাজারে বাড়ি করে বসবাস করে। এই বাড়িতে বিভিন্ন সময়ে অজ্ঞাত মাদকসেবীদের নিয়ে শামীম মাদক সেবন করতো বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। মাদক সেবন ও বিক্রি সংক্রান্ত বিরোধে যুবদল নেতা শামীম খুন হতে পারে বলে সূত্র দাবি করছে।
এ বিষয়ে তালা থানার ওসি মো. মাইনউদ্দীন বলেন, নিহত শামীম তার মায়ের সাথে ১০ বছর ধরে ডুমুরিয়া উপজেলার ১৮ মাইল এলাকায় বসবাস করতো। তার হত্যার বিষয়ে ডুমুরিয়া থানা পুলিশ তদন্ত করবে।
কেকে/এআর