বৃদ্ধা শাশুড়িকে মারধর করছে পুত্রবধূ। ছবি : প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের পৌর সদরে সিনেমার ভিলেন স্টাইলে বৃদ্ধা শাশুড়িকে জীবন্ত কবর দেওয়ার চেষ্টা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে পুত্রবধূর বিরুদ্ধে।
গত ২৬ জুলাই সকালে এ ঘটনা ঘটলেও সোমবার (১৮ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরনের একটি ভিডিও ভাইরাল হলে বিষয়টি সকলের নজরে আসে। এনিয়ে থানায় অভিযুক্ত কলি আক্তার ও তার মা মমতাজসহ দুই জনের নামে মামলা রুজু করা হলেও এখন পর্যন্ত কেউ আটক হয়নি।
হামলার শিকার হওয়া বৃদ্ধা আম্বিয়া খাতুন (৭০) উপজেলার ৭ নং ওয়ার্ডের ভিটি ঝগড়ারচর (টেকপাড়া) এলাকার বাসিন্দা মৃত রহিম মিয়ার স্ত্রী। তিনি পাঁচ ছেলে এক মেয়ের জননী।
সোমবার দুপুরে নির্যাতিত আম্বিয়া খাতুনের বাড়িতে সরেজমিনে গেলে তিনিসহ ঘটনার সাক্ষী তার এক ছেলের বৌ মরিয়ম, আরেক ছেলে গিয়াসউদ্দিনসহ স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত পুত্রবধূর স্বামী মনির হোসেনকে ৫ বছর আগে বিভিন্ন সমিতি ও লোকজনের কাছ থেকে ধার করে বিদেশে পাঠান আহত বৃদ্ধা আম্বিয়া খাতুন। কথা ছিল প্রবাসে গিয়ে মায়ের করা সে ঋণ সে শোধ করে দিবে। কিন্তু ছেলে প্রবাস থেকে টাকা পাঠায় পুত্রবধূ কলির নামে। কলি আর সে ঋণের টাকা দেয় না। চাইতে গেলে বিভিন্ন সময় হামলা ও চোখে মরিচের গুড়া ছিটিয়ে দিয়ে হেনস্তা করেন বৃদ্ধাকে। এলাকাবাসীর কাছে পুত্রবধূর নামে একাধিকবার অভিযোগ করেও সুরাহা হয়নি বৃদ্ধা শাশুড়ির।
গত ২৬ জুলাই ঘটনার দিন সকালে পুত্রবধূ কলির কাছে কিস্তির টাকা চাইলে কলি শাশুড়িকে ঘর হতে মারধর করতে করতে বাড়ির পাশে কবরস্থানের নিকট একটি ঝোপের ভেতর নিয়ে মাটিতে পুঁতে রাখার চেষ্টা করে। বিষয়টি বাড়িতে থাকা আরেক ছেলের বৌ মরিয়ম দেখে ফেলে ও মোবাইলে ভিডিও করে ফেলায় শাশুড়ি আম্বিয়া খাতুনকে মারধর ও গালিগালাজ করে ফেলে চলে আসে। পরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
বড় ছেলে গিয়াসউদ্দিন ও আরেক ছেলে জামাল মিয়ার স্ত্রী মরিয়ম বেগম বলেন ‘কলি ও তার মা মমতাজ বেগম মিলে টাকা চাওয়ায় বৃদ্ধা শাশুড়িকে ঘর হতে টেনে হিঁচড়ে কবরস্থানের নিকট নর্দমায় জীবন্ত কবর দেওয়ার জন্য নিয়ে যায়। কিন্তু আমরা দেখে ফেলায় কলি তা করতে পারেনি।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কলি আক্তারের বাড়ি ও তার মায়ের বাড়িতে কথা বলতে গেলে, সাংবাদিক আসার খবরে ঘরের পিছন দিয়ে পালিয়ে যান।
বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ওসি হাসান জামিল খান বলেন, আমরা বৃদ্ধার কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অবিলম্বে তদন্ত করে দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসী জানান, অবিলম্বে অভিযুক্ত কলি আক্তারকে আইনের আওতায় আনা হোক।