সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫,
২৮ আশ্বিন ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম: ১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় এক বিলিয়ন ডলার      জিয়া পরিবার জনগণের পরিবার : আমান উল্লাহ      রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা      ২০০ তালেবান সৈন্যকে হত্যার দাবি পাকিস্তানের      বাতিল হওয়ার শঙ্কায় বিশ্বজয়ী আর্জেন্টিনার ভারত সফর      বিচারব্যবস্থাকে ব্যবহার করে দেশে স্বৈরশাসন পাকাপোক্ত হয়েছিল      প্রেসক্লাবে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গে সাউন্ড গ্রেনেড-লাঠিচার্জ      
খোলাকাগজ স্পেশাল
বৃহৎ ঐক্যের ডাক
রোকন উদ্দিন
প্রকাশ: বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫, ১১:৪৫ পিএম আপডেট: ০৬.০৮.২০২৫ ১১:৪৯ পিএম
ছবি : খোলা কাগজ

ছবি : খোলা কাগজ

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিভিন্ন ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ থাকবে, কিন্তু সেই ভিন্নমত নিরসনে আলোচনা হবে। তবে জাতীয় কোনো ইস্যুতে গণতন্ত্রের পক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যাতে মুখ দেখাদেখি বন্ধ না হয়, সেই লক্ষ্যে জাতীয় স্বার্থে সবার ঐক্যবদ্ধ থাকা প্রয়োজন।

বুধবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হওয়া দলটির বিজয় র‌্যালি-পূর্ব সমাবেশে লন্ডন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এসব কথা বলেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তিতে রাজধানী ঢাকায় এই ‘বিজয় র‌্যালি’ করছে বিএনপি।

নয়া পল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিকাল সাড়ে তিনটায় শুরু হয় সংক্ষিপ্ত সমাবেশ। প্রধান অতিথি তারেক রহমানের বক্তব্যের পর বিকাল সাড়ে চারটায় বিজয় র‌্যালি শুরু হয়। বর্ণাঢ্য এ র‌্যালিতে ঢাকা মহানগর ছাড়াও আশপাশের জেলাগুলো থেকেও নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন, জাতীয় ও দলীয় পতাকা নিয়ে অংশ নেয়। ফকিরাপুল থেকে কাকরাইলের মোড় পর্যন্ত দীর্ঘ সড়কে হাজার হাজার কর্মীর উপস্থিতি জনসমুদ্রে রূপ নেয়। বিজয় র‌্যালিটি বিজয় নগর, পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেস ক্লাব, কদম ফোয়ারা, মৎস্য ভবন মোড়, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন সড়ক দিয়ে শাহবাগে গিয়ে শেষ হয়। ঢাকা ছাড়াও সব বিভাগীয় শহরে একযোগে বিজয় র‌্যালি কর্মসূচি করছে বিএনপি। 

তারেক রহমান বলেন, ‘জাতীয় স্বার্থে সবার ঐক্যবদ্ধ থাকা প্রয়োজন। কারণ, আমি বিশ্বাস করি ধর্ম-দর্শন-মত যার যার, রাষ্ট্র আমাদের সবার।’ তিনি আরো বলেন, জনগণের রায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে বিএনপি রাষ্ট্রে কী ধরনের সংস্কার ও রাজনীতি পরিচালনা করবে, দলের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ৩১ দফার মাধ্যমে একটি রূপরেখা জনগণের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে। দেশ ও জনগণের কল্যাণে এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য বিএনপি জনগণের সমর্থন ও সহযোগিতা চায়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘যে যেই রাজনৈতিক দলেরই সদস্য হন না কেন, মনে রাখা দরকার, ফ্যাসিবাদী শাসনামলে আমরা কেউই নিরাপদ ছিলাম না। আমাদের সন্তান কেউ নিরাপদ থাকতে পারেনি। আমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। আমাদের সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক অধিকার কেড়ে নিয়ে গণতন্ত্রকামী জনগণের জন্য সারা দেশকে বর্বর বন্দিখানা আয়নাঘর বানিয়ে ফেলা হয়েছিল।’ 

দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন থাকার গুরুত্ব তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘দেশে যদি গণতন্ত্র ও আইনের শাসন না থাকে, তাহলে নারী কিংবা পুরুষ, সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগুরু আমরা কেউই নিরাপদ নই। একমাত্র গণতন্ত্র ও আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হলে হাজারো শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণতান্ত্রিক-রাজনৈতিক অধিকারের সুষ্ঠু প্রয়োগ ও চর্চা করতে হবে।’

জুলাই ঘোষণাপত্র ও নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করায় অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বাগত জানান তারেক রহমান।

তারেক রহমান বলেন, পতিত পরাজিত পলাতক স্বৈরাচারের আমলে দেশ অন্ধকারের রাজিত্ব কায়েম করা হয়েছিল। আমি বলব আজকের এ অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আলোর পথে যাত্রা। তবে এই যাত্রা কিন্তু খুব সহজ নয়। বর্তমানে দেশের জনগণের সামনে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার এক অপার সম্ভাবনা এবং সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমরা যদি এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দেশের জনগণের রাজনৈতিক শক্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারি, জনগণের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করতে পারি তাহলে ভবিষ্যতে আর কেউ ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ পাবে না।

র‌্যালি-পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হবে খুব শিগগির। আমাদের জুলাই ঘোষণাপত্র হয়েছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবের যে দৃষ্টিভঙ্গি ৩১ দফা সেই ৩১ দফা বাস্তবায়িত হতে চলেছে সংস্কারের মধ্য দিয়ে।’ 

তিনি বলেন, আসুন, আজকে আমরা সেই শপথ গ্রহণ করি যে, আমরা বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটা সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলব। স্বাধীনতার ঘোষক শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের যে স্বপ্ন ছিল সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। আমাদের দেশের বেগম খালেদা জিয়ার যে আপসহীন নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে যে গণতন্ত্রকে আমরা রক্ষা করেছিলাম, আজকে আমাদের নেতা তারেক নেতৃত্বে আমরা সেই গণতন্ত্রকে উদ্ধার করব, আমরা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণ করব, সাম্য, মানবিক, মূল্যবোধ ও মর্যাদা একটি দেশ, একটা রাষ্ট্র আমরা তৈরি করবো। বিশ্বের দরবারে আমরা মাথা উুঁচ করে দাঁড়াব।

তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সমাবেশে উনি এখানে উপস্থিত আছেন। আসুন আজকে আমরা সবাই ওনাকে ধন্যবাদ জানাই যে, তিনি আমাদের নেতৃত্বে দিয়ে আমাদের মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। আমি ধন্যবাদ জানাব, দেশের সব মানুষকে রাজনৈতিক দলগুলোকে, ছাত্রদের এবং এটা না বললে নয়, আমি দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীও আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানতে চাই, তাদের সহযোগিতায় আমরা এই বিজয় অর্জন অর্জন করতে পেরেছি।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছে। আমরা আশা করছি, অতিদ্রুত দিন তারিখ ঠিক করে ঘোষণা দেয়। নির্বাচন নিয়ে কিন্তু ষড়যন্ত্র হচ্ছে। যাতে করে সঠিক সময় নির্বাচন না হয়, নির্বাচনকে কীভাবে পেছানো যায় পতিত স্বৈরাচার এবং গণতন্ত্রের কিছু বিরোধী শক্তি তারা আজকে ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বলেন, আমাদের আজকে শপথ গ্রহণ করতে হবে এ দেশের ছাত্র-জনতা বারবার দেশের গণতন্ত্র রক্ষার জন্য প্রাণ দিয়েছে। গণতন্ত্র ও দেশের স্বাধীনতা সর্বোভৌত্ব রক্ষায় বিএনপি বিগত দিনের মত নেতৃত্বে দেবে। তিনি ষড়যন্ত্র মোকাবিলা সবাই সর্তক থাকার জন্যও আহ্বান জানান।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির মির্জা আব্বাস বলেন, বুঝতে হবে এ একদিনের সফলতা নয়, এ সফলতা ৩৬ দিনের অর্জন নয়। এই সফলতা সার্বিক ১৭ বছরের আন্দোলনের ফসল। আজকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। হ্যাঁ ষড়যন্ত্র হচ্ছে, কেউ এক এগারোর ষড়যন্ত্রে আছেন, কেউ আমার দলের বক্তব্যকে অপোজ করেছেন। 

তিনি বলেন, গতকালকে (মঙ্গলবার) জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষণা হয়েছে। বৃষ্টির মধ্যে আমরা গিয়েছিলাম। এ ঘোষণাপত্রকে স্বাগত জানিয়ে দলের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখা হয়েছে, আমিও স্বাগত জানাই। একটা কথা বলি, যেখানে ২৩ বছর আন্দোলনের পরে দেশ স্বাধীন হয়েছে, ওখানে শহিদ রাষ্ট্রপতি নামটি রাখা হয় নাই, তিনি দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছিলেন, ৭ নভেম্বরের দিবসে যে ডিমান্ড করে যে আমার নেতার নাম সেখানে আসে নাই, তারপর বাকশালের পেট থেকে যে গণতন্ত্রকে বের করে এনেছিলেন সেখানে শহীদ রাষ্ট্রপতি নাম আসে নাই, বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তার নাম আসে নাই। তিনি বলেন, এটা আমাদের আমাকে অত্যন্ত পীড়া দিয়েছে। আমি তারপরও সব কিছু স্বীকার করে নিয়ে, সব ভুলভ্রান্তি স্বীকার করে নিয়ে গতকালের ঘোষণায় আমি স্বাগত জানাচ্ছি আবারো। আমাদের বৃহত্তর গণতন্ত্রের স্বার্থে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখার স্বার্থে আগামী দিনে এ দেশের আমরা সব কিছু মেনে নিয়েছি।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিএনপির সিনিয়র নেতারা বক্তব্য দেন।

কেকে/ এমএস
আরও সংবাদ   বিষয়:  বিএনপি   বিজয় র‌্যালি   ঐক্যের ডাক  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

ট্রাক ভাড়া করে ঘুরে ঘুরে ডাকাতি করত তারা
শিশু বলাৎকার ও হত্যার অভিযোগে কিশোর গ্রেফতার
১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় এক বিলিয়ন ডলার
মুরাদনগরের ওসি জাহিদুরের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বসহ নানা অভিযোগ, অপসারণ দাবি
জিয়া পরিবার জনগণের পরিবার : আমান উল্লাহ

সর্বাধিক পঠিত

আসছে নাটক ‘অপ্রকাশিত ভালোবাসা’
চিকিৎসক ও জনবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা
রাজশাহীতে বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস পালিত
পাল্লা বাজারে রক্তলাল শাপলার মনভোলানো সমাহার
কালাইয়ে বিএনপির গণমিছিল ও লিফলেট বিতরণ
সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close