উজানের ঢলে লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা দেখা দিয়েছে। রাতে তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে নদীটির পানি বিপৎসীমার সাত সেন্টিমিটার (৫২দশমিক ২২সেন্টিমিটার) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাটের সবগুলো খুলে রাখা হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল ৬টায় ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি কিছুটা কমে লেভেল পয়েন্টে নেমে পরে সকাল ৯টায় ৮ সে.মি নিচে প্রবাহিত হচ্ছে। রাতেই পানির তোড়ে রাতে হাতীবান্ধা উপজেলার ধুবনী এলাকার একটি কাঁচা রাস্তা ভেঙে গেছে।
ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি কিছুটা কমলেও ব্যারাজের ভাটিতে থাকা হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান,সিন্দুরনা,পাটিকাপাড়া,গড্ডিমারী,কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী,আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ও সদর উপজেলার রাজপুর,খুনিয়াগাছ ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের নদীতীরবতী নিম্নাঞ্চলগুলোর ১৫টি গ্রামের ৫হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। ডুবে গেছে রাস্তাঘাট,ফসলি জমি ও ভেসে গেছে পুকুরের মাছ।
বিশেষ করে আমন বীজতলা বিভিন্ন অঞ্চলে ডুবে গেছে, ফলে আমন বীজের সংকট দেখা দিতে পারে। কিছু স্থানে সদ্যরোপণ করা আমন ধান ডুবে যাওয়ায় সেগুলো ও পচে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এতে কৃষকের ক্ষতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এদিকে আদিতমারী উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিতে ডুবে গেছে। রাস্তা ও স্কুল মাঠে হাঁটু পানি থাকায় শিক্ষক শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে পারছে। ফলে বন্ধ রয়েছে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম।
গোবর্ধন এলাকার আব্দুস সাত্তার বলেন, হঠাৎ রাত্রে থেকে পানি বাড়তে শুরু করেছে। এলাকার রাস্তা ঘাট ও বাড়িতেও হাঁটু পানি উঠছে। রান্না করাসহ গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়ছি আমরা।
গোবর্ধন স্কুলের প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার রায় বলেন, বন্যা আসলেই আমাদের স্কুলের মাঠে ও রাস্তায় হাঁটু পানি ও কোমর পানি পর্যন্ত উঠে যায়। এর ফলে আমরা স্কুলেই যেতে পারি না। শিক্ষার্থীরাও আসতে পারে না। ফলে স্কুলের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়েছে। তাই আমরা চাই এই রাস্তা আরো যেন উঁচু করা হয়।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। নদী তীরবর্তী ধুবনি এলাকায় একটি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। সকালে পানি কিছুটা কমেছে। তবে আগামী ২৪ ঘণ্টা পানির স্তর স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং এরপর তা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কেকে/এএস