বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) বিভিন্ন স্থানে বারবার বিষধর সাপের দেখা মিলছে। এতে চরম আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
গত ১৭ জুলাই ২০২৫, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের টিনশেডে একটি বিষধর গোখরা সাপ দেখা যায়। উপস্থিত কয়েকজন শিক্ষার্থী সাপটিকে মেরে ফেলে। জানা যায়, এর আগেও একাধিকবার মসজিদ এলাকায় সাপ দেখা গেছে।
এর কয়েকদিন আগে শিক্ষকদের কোয়ার্টারের সামনেও একটি বড় সাপ মারা হয়। নিয়মিত বিরতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে সাপের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা শিক্ষার্থীদের মাঝে ভয় ও উদ্বেগ আরো বাড়িয়ে তুলছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, একের পর এক সাপের দেখা মিললেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো উল্লেখযোগ্য বা কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার না করায় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গল গড়ে উঠেছে, যা সাপের বাসস্থান হিসেবে পরিণত হয়েছে।
একাধিক শিক্ষার্থী দাবি করেছেন, অবিলম্বে ক্যাম্পাসজুড়ে সাপ নিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণ, ঝোপঝাড় পরিষ্কার এবং প্রয়োজনীয় জীবাণুনাশক ও কীটনাশক ছিটানোর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে বিষধর সাপ দেখা দেওয়ায় মেডিকেল সেন্টারে ‘এন্টিভেনাম’ রাখার দাবিও জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে বনজঙ্গল গড়ে উঠেছে। এগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা দরকার। এই জঙ্গলগুলো এখন সাপের আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে। আমাদের হলের পাশেও ঘন জঙ্গল রয়েছে। এমনকি একটি হলে নিচতলার একটি কক্ষে সাপ ঢুকে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত সাপ দমনে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া এবং মেডিকেল সেন্টারে এন্টিভেনাম সংরক্ষণ করা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের চিকিৎসক ডা. লিখন চন্দ্র বালা বলেন, মেডিকেলে কোনো এন্টিভেনাম নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ব্যাপারে যোগাযোগ করেছিল। তখন আমি জানিয়েছিলাম, এন্টিভেনাম মেডিকেল সেন্টারে রাখা সম্ভব নয়। এটি শুধুমাত্র সদর হাসপাতাল বা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকেই নেওয়া যায়। বিষয়টি নিয়ে ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয়ের সঙ্গে কথাও হয়েছে। চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে এটি সরবরাহ বা সংরক্ষণ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসার নিজামুল হক চৌধুরী বলেন, আমরা নিয়মিতভাবে ক্যাম্পাস পরিষ্কার করি। মসজিদ এলাকা ও হলের আশপাশে বিগত ৪-৫ দিন আগেও মেশিন দিয়ে পরিষ্কার করা হয়েছে। বর্তমানে আগের মতো বড় জঙ্গল নেই। আষাঢ়-শ্রাবণে আগে যেসব কাশবন হতো, এবার তা নেই বললেই চলে। আমরা চারটি মেশিন দিয়ে নিয়মিত পরিচ্ছন্নতার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, ‘সাপ কোথায় থাকে, সেটা তো আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। তারপরও ভাবছি, অফিস খুললে বিষয়টি আবার দেখা হবে।’
কেকে/ এমএস