দশমিনায় দিনভর যে বিদ্যালয়ের মাঠে খেলায় মেতে থাকত কোমলমতি শিশুরা। সেই স্কুল মাঠে বেড়া দিয়ে আমন ধানের বীজ বপন করলেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের ভাতিজা।
স্কুল মাঠে ধানের বীজ বপন করায় কোমলমতি শিশুদের খেলাধুলার সব সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ঘটনাটি ঘটেছে পটুয়াখালীর দশমিনায় ৫৫নং খারিজা বেতাগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মাঠে বীজতলা বানিয়ে ধান রোপণ করে রাখা হয়েছে।
জানা যায়, ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. নূর হোসেন মৃধার ভাতিজা ফিরোজ মৃধা স্কুল মাঠে বেড়া দিয়ে ধানের বীজ বপন করেছেন। স্কুল মাঠে বেড়া দিয়ে ধানের বীজতলা তৈরি করায় শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেছে। খেলাধুলা বন্ধ হওয়ায় দুশ্চিতায় রয়েছে শিশুরা। এ ঘটনায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে অভিভাবকদের মধ্যে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের খেলাধুলার মাঠে ধানের বীজ বপন করায় আমরা খেলাধুলা করতে পারি না। আমরা বিদ্যালয়ের মাঠ পূর্বের ন্যায় দেখতে চাই।
একাধিক অভিভাবক জানান, বাচ্চাদের একমাত্র খেলাধুলার মাঠে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির ভাতিজা ফিরোজ মৃধা বীজতলা করে এলাকাজুড়ে সমালোচনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার আমলে স্কুলের অনেক কিছু নিজের দখলে নিয়েছিল ওই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। বিদ্যালয়ের মাঠ দখলমুক্ত ও আওয়ামী লীগ শিক্ষক অপসারণের দাবিও করেন তারা।
এ বিষয়ে ৫৫নং খারিজা বেতাগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নূর হোসেন মৃধা বলেন, আমার অনুপস্থিতিতে ফিরোজ মৃধা আমন ধানের বীজতলা করেছে। কেন বীজতলা করেছে স্কুল মাঠে আমি জিজ্ঞেস করলে আমাকে জানান আমার জায়গা পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারণে বিদ্যালয়ের মাঠে বীজতলা তৈরি করেছি। তিনি আরও বলেন, আমার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত থাকার যে অভিযোগটি উঠেছে সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট ও ভীত্তিহীন। আমাকে নেতাকর্মীরা জোর করে পদে রেখেছে আমি কোন মিছিল মিটিং বা সভা সমাবেশে যাইনি আমি চাকরি করি রাজনীতি করব কীসের জন্য।
জানতে চাইলে পটুয়াখালী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোল্লা বখতিয়ার রহমান দৈনিক খোলা কাগজকে বলেন, স্কুল মাঠে ধানের বীজ বপন করার কোনো সুযোগ নেই বিষয়টি আমি টিও সাহেবকে দেখার জন্য বলতেছি। আমি আপনার মাধ্যমে জানতে পারছি সত্যতা পেলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইরতিজা হাসান জানান, স্কুলের খেলার মাঠে ধানের বীজ বপন করার কোনো অধিকার নেই। আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।
কেকে/এএস