গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরের পৌরবাসীদের কাছে নতুন করে কর বৃদ্ধি করে তা পরিশোধের জন্য বাড়ির মালিকদের কাছে চিঠি দিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। বর্ধিত কর কমানোর জন্য শ্রীপুর পৌরসভার প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে যৌথ স্বাক্ষরে স্মারকলিপি দিয়েছে শ্রীপুর পৌর সচেতন নাগরিক ফোরামসহ কয়েকটি সংগঠন।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দুপুর ২ টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তারা এ স্বারকলিপি দেন। স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেন শ্রীপুর পৌর সচেতন নাগরিক ফোরাম, শ্রীপুর সাহিত্য পরিষদ, শ্রীপুর প্রেসক্লাব এবং রিভার অ্যান্ড নেচার ফাউন্ডেশনের নেতৃবৃন্দ।
শ্রীপুর পৌর সচেতন নাগরিক ফোরামের উপদেষ্টা ও শ্রীপুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যাপক সেলিম মোল্লা বলেন, পৌরসভার স্থানীয় বাসিন্দারা বর্ধিত করের বোঝা কমাতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে। স্মারকলিপি প্রদানকালে তারা বর্ধিত করের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং কর কমানোর জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
শ্রীপুর পৌর সচেতন নাগরিক ফোরামের সভাপতি রওশন হাসান বলেন, শ্রীপুর একটি অবহেলিত পৌরসভা, অনেক এলাকায় এখনো চাটাই, টিনের বেড়া এবং মাটির ঘর বিদ্যমান। এমতাবস্থায় বাড়িঘরের কর বহুগুণ বৃদ্ধি করে পৌরবাসীর বাড়ি বাড়ি যে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে, তা অমানবিক।
রিভার অ্যান্ড নেচার ফাউন্ডেশনের চেয়রাম্যান এবং শ্রীপুর পৌর সচেতন নাগরিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষ বাড়িঘরের আবর্জনা অপসারণ করছে না। সেখানে তিন শতাংশ কর আরোপ এবং সড়ক বাতি বাবদ দুই শতাংশ কর ধার্য অযৌক্তিক। বিষয়গুলো পুনর্বিবেচনা করার জন্য দাবি জানাচ্ছি।
শ্রীপুর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি রানা মাসুদ বলেন, ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরের বাজেট অনুষ্ঠানে পৌর প্রশাসক তার বক্তব্য বলেছিলেন নতুন করে কর বৃদ্ধি করা হবে না এবং নতুন কর আরোপ করা হবে না। প্রশাসকের এমন কথা শুনে পৌরবাসী আনন্দিত হয়েছিল। এখন পৌরসভা থেকে নতুন করে কর বৃদ্ধির চিঠি পেয়ে পৌরবাসী হতাশ। রাস্তাঘাটসহ পৌরসভার বর্তমান উন্নয়ন কাজ দেখে পৌর প্রশাসককের ধন্যবাদও জানান তিনি।
শ্রীপুর পৌরসভার প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ব্যারিস্টার সজীব আহমেদ বলেন, কর বৃদ্ধি হয়নি। পিডব্লিউ শিডিউল অনুযায়ী বাসাবাড়ির বাৎসরিক মূল্যায়ন যেটা সেটা বাড়ছে। পূর্বে পিডব্লিউ শিডিউল ২০১৯ অনুযায়ী হিসাব করা হয়েছিল। ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরের ২০২৪ সালের শিডিউল অনুযায়ী হিসাব করা হয়েছে। ওই (২০২৪) সালে যদি জিনিসপত্রের দাম বেড়ে থাকে সে অনুসারে শিডিউল অ্যামাউন্ট বাড়ছে। এ কারণে হয়তবা বেশি আসতে পারে। কিন্তু সেটাও আমাদের এডজাস্ট (সামঞ্জস্য) করার সুযোগ আছে। তারা (বাসা-বাড়ির মালিক) আপত্তি দিলে আমরা শুনানি করে তাদের অর্থিক অবস্থা এবং সার্বজনিন দেখে গণশুনানীর মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন শ্রীপুর পৌর সচেতন নাগরিক ফোরামের উপদেষ্টা ও শ্রীপুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যাপক সেলিম মোল্লা, শ্রীপুর পৌর সচেতন নাগরিক ফোরামের সভাপতি রওশন হাসান, সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম, শ্রীপুর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি রানা মাসুদ, মুক্তিযোদ্ধা কলেজের সহকারী অধ্যাপক এমদাদুল হকসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ। সংগঠনটি দীর্ঘ দিন ধরে নাগরিকদের অধিকার রক্ষায় সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছে।
কেকে/এজে